ভস্মীভূত: ঘরের অবস্থা। ছবি: নির্মল বসু
আগুনে পুড়ে গেল বসিরহাট আদালতের বহু নথি।
মঙ্গলবার সকাল ৭টা নাগাদ দুই নৈশপ্রহরী প্রথম বিচার বিভাগীয় আদালতের দরজা খুলতেই ধোঁয়া, আগুন দেখতে পান। দমকল এসে ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আনে। কিন্তু ততক্ষণে বহু কাগজ পুড়ে ছাই।
অন্তত হাজার কুড়ি মামলার নথি পুড়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা। কী ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়, তা নিয়ে এ দিনই আলোচনায় বসেন বসিরহাটের ফৌজদারি ও দেওয়ানি বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা। আদালতের সব ক’টি এজলাসেই এ দিন শুনানি বন্ধ ছিল। বহু বিচারপ্রার্থী এসে ফিরে গিয়েছেন। যাঁদের নথি নষ্ট হয়েছে বলে আশঙ্কা, তাঁদের অনেককে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। বসিরহাটের ফৌজদারি বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাহির বারি ও দেওয়ানি বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রথীশ দাস বলেন, ‘‘বড় রকম ক্ষতি হয়ে গেল। কী ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা সম্ভব, তা ভেবে পাওয়া যাচ্ছে না। যে সব জেলবন্দির মামলা চলছে, তার কী হবে, তা-ও জানা নেই।’’ অগ্নিকাণ্ডের পিছনে কোনও রহস্য রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি তুলেছেন আইনজীবীরা। আলাদা রেকর্ড রুমের দাবিও উঠেছে।
প্রাথমিক ভাবে দমকলের দাবি, শর্টসার্কিট থেকেই আগুন। যদিও পূর্ত দফতরের বাস্তুকার এবং বিদ্যুৎ দফতরের দুই আধিকারিকের দাবি, যে ভাবে নীচের দিকে আগুন ছড়িয়েছে, তা দেখে প্রাথমিক ভাবে শর্টসার্কিট বলে মনে হচ্ছে না। ঘটনাস্থলে এসেছিলেন জেলা দায়রা জজ সুদীপ নিয়োগী, জেলা পুলিশ সুপার কে শবরী কুমার। তাঁরা বিচারক ও আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানান, আদালতে আগুন লাগার কারণ জানতে কলকাতা থেকে বিশেষজ্ঞেরা আসবেন।’’
আইনজীবী অর্পণ হালদার, দীপেশ গায়েন, সন্তু দাস, বিশ্বজিৎ রায়দের বক্তব্য, তাঁদের হাতে থাকা শতাধিক মামলার গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ড সবই পুড়ে গিয়েছে।’’ দীপেশের দাবি, তাঁর এক মক্কেল আছেন, যাঁকে দেওয়া ৪৫ লক্ষ টাকার চেক বাউন্স করেছে। তা নিয়ে মামলা চলছে। সেই নথিও পুড়েছে। এমন আরও বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলার নথি নষ্ট হওয়ায় বড়সড় সমস্যা হবে অনেকের। বসিরহাটের এসিজেএম আদালতের হেড ক্লার্ক দীপঙ্কর গোস্বামী বলেন, ‘‘কাগজপত্র ছাড়াও তিনটি কম্পিউটার পুড়েছে। সেখানেও বহু মামলার নথি ছিল।’’
আদালত চত্বরে এসেছিলেন এক মহিলা। খোরপোষের মামলা চলছে তাঁর। চোখের জল মুছে বললেন, ‘‘ভরণপোষণটুকু যদি না পাই তা হলে পথে বসতে হবে। কিন্তু কাগজপত্র না পেলে কী যে হবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy