ক্ষতির মুখে ড্রাগন ফলের চাষ।
টাকা নেই পঞ্চায়েতের তহবিলে। তাই প্রায় ১৮ বিঘা জমিতে শুরু হওয়া ড্রাগন ফলের চাষও মাঝপথে বন্ধের মুখে।
একশো দিনের কাজের প্রকল্পে পুকুর খনন, রাস্তা নির্মাণ, নিকাশি নালা তৈরি-সহ নানা কাজ শুরু হয়েছিল এলাকায়। টাকার অভাবে সেই সবও বন্ধ।
এই পরিস্থিতি মগরাহাট পূর্ব পঞ্চায়েত এলাকার। একশো দিনের কাজ প্রকল্পে কাজ করা শ্রমিকেরা বকেয়া টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।
মগরাহাট ২ ব্লকের মগরাহাট পূর্ব পঞ্চায়েতে ২০টি সংসদ রয়েছে। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ওই এলাকায় জনসংখ্যা ৪০ হাজারের বেশি। পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, এক বছর আগে পর্যন্ত এলাকার উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রতি বছর প্রায় আড়াই কোটি টাকা খরচ হত। এ বারও নানা প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু টাকা না আসায় সবই মাঝপথে থমকে রয়েছে বলে অভিযোগ।
সব থেকে সঙ্কটে পড়েছেন ড্রাগন চাষিরা। পঞ্চায়েতের তরফে এলাকার পিছিয়ে পড়া মানুষদের স্বনির্ভর করে তুলতে ড্রাগন চাষের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। প্রায় ১৮ বিঘা জমিতে ৩৬টি বাগানে ড্রাগন চাষ শুরু হয়। পঞ্চায়েত থেকে চাষের প্রাথমিক সব রকম সাহায্য করা হয়। কিন্তু এখন সার, কীটনাশক, শ্রমিক- অন্যান্য খরচের টাকা পঞ্চায়েত থেকে দিতে পারছে না বলে অভিযোগ। গরিব চাষিরা পড়েছেন সমস্যায়।
এ ছাড়াও বহু পিছিয়ে পড়া পরিবারকে অন্যান্য ফলের গাছ দিয়েও সাহায্য করা হয়েছিল পঞ্চায়েত থেকে। কিন্তু গাছ বসানোর পরে আর কোনও সহযোগিতা মিলছে না।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মগরাহাট বাজারে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি সুলভ শৌচাগার তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু টাকার অভাবে মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছে সেই কাজ। এ ছাড়া, এলাকায় নিকাশি নালা তৈরির কাজও মাঝপথে বন্ধ।
পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, এলাকায় একশো দিনের কাজ প্রকল্পের অধীনে প্রায় দু’হাজার শ্রমিক রয়েছেন। তাঁদের গত ক’মাসে কাজের প্রায় ১ কোটি ৫ লক্ষ টাকা বাকি পড়ে রয়েছে। টাকা না পেয়ে হতাশ গরিব শ্রমিকেরা। বিভিন্ন এলাকার শ্রমিকদের টাকা মেটানোর দায়িত্ব পঞ্চায়েতের সদস্য এবং সুপারভাইজ়ারের। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা বিপদে পড়েছেন।
ওই পঞ্চায়েতের রাধানগর গ্রামের সদস্য রাজকুমার মাল বলেন, “আমার এলাকায় শ্রমিকদের কাজের প্রায় চার লক্ষ টাকা বাকি রয়েছে। আমি গ্যাসের সিলিন্ডার সাপ্লাইয়ের কাজ করি। টাকা না পেয়ে অনেকে রাস্তা থেকে সিলিন্ডার জোর করে নামিয়ে নিচ্ছেন। গোয়াল ঘর থেকে গরু বের করে নিয়ে যাচ্ছেন। যা ইচ্ছা তাই বলা হচ্ছে। কিন্তু কিছু বলতে পারছি না।”
বাকিপুর গ্রামের সুপারভাইজ়ার সালমা খাতুন বলেন, “গত কয়েক মাস এলাকায় উন্নয়নের জন্য ১২-১৩ লক্ষ টাকার কাজ করিয়েছি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার অর্থ বরাদ্দ না করায় শ্রমিকদের টাকা দিতে পারিনি। ফলে নিয়মিত ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। বাড়ি থেকে বেরোতে পারছি না।”
পঞ্চায়েতের প্রধান নুরান্দিনা সর্দার বলেন, “প্রায় আট মাস ধরে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ করা জব কার্ড হোল্ডার ও অন্যান্য পাওনাদারদের টাকা আমরা দিতে পারছি না। কোনও কোনও কাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার টাকা না দেওয়ায় ফলে গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ছে।”
মগরাহাট ২ বিডিও শেখ আব্দুল্লাহ জানান, কেন্দ্রীয় সরকার বরাদ্দ না দেওয়ায় এলাকার ১৪টি পঞ্চায়েতে প্রায় ১৯ কোটি টাকা বাকি রয়েছে। উন্নয়ন থমকে গিয়েছে।” নিজস্ব চিত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy