সুলভ: দূরত্ব বিধি না মেনেই চিংড়ি কেনার ভিড় কুলতলির কাঁটামারিতে। নিজস্ব চিত্র।
পাঁচ-ছ’শো টাকা কেজি দরের বাগদা চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে মাত্র দেড়শো টাকায়। খবর ছড়িয়ে পড়তেই শনিবার কুলতলির কাঁটামারি বাজারে বিক্রেতাকে ঘিরে ধরলেন ক্রেতারা। কেউ দু’কেজি, কেউ পাঁচ কেজি চিংড়ি কিনে যুদ্ধ জয়ের হাসি হাসতে হাসতে বাড়ির পথ ধরলেন। নিমেষে ফাঁকা হয়ে গেল বিক্রেতার ঝুড়ি। তবে চিংড়ি কেনার ভিড়ে মানা হয়নি দূরত্ববিধি।
কীভাবে এত সস্তায় মিলছে মহার্ঘ্য বাগদা? বিক্রেতা ফারুক জানালেন, এলাকায় অনেক চিংড়ির ভেড়ি ছিল। বাঁধ ভেঙে নদীর জল ঢুকে ভেসে গিয়েছে সেই সব ভেড়ি।
চাষ করা চিংড়ি ভেড়ির গণ্ডি টপকে বাইরে বেরিয়ে এসেছে। চরে বেড়াচ্ছে গাঁয়ের মাঠে-ঘাটে। জাল ফেলে সেই চিংড়ি ধরেই বাজারে বিক্রি করতে এসেছেন তিনি। ফারুকের কথায়, “আমার বাড়ি জলের তলায়। মাথা গোঁজার জায়গা নেই। গ্রামের স্কুলে আছি। তার মধ্যেই দুই বন্ধু মিলে জাল ফেলে প্রায় দশ কেজি চিংড়ি ধরেছিলাম। সব বিক্রি হয়ে গিয়েছে। এই খারাপ সময়ে হাতে কিছু টাকা এল।”
শুধু চিংড়িই নয়। ভেটকি, ভাঙরের মতো দামি সামুদ্রিক মাছেরও চাষ হয় বিভিন্ন ভেড়িতে। সেই সব মাছও ভেড়ি টপকে বাইরে বেরিয়ে এসেছে। স্থানীয় মানুষ কিছু ধরেছেন। কিছু জলের স্রোত নদীতে ফিরে যাওয়ার পথে মৎস্যজীবীদের পাতা জালে পড়েছে। গত কয়েকদিন উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে খোঁজ করলেই জলের দরে এই সব মাছ মিলছে। রবিবার কুলতলি থানার মোড়ে মাত্র একশো টাকা কেজি দরে ভেটকি মাছ বিক্রি করতে দেখা যায় এক মৎস্যজীবীকে। নিমেষে বিক্রি হয়ে যায় সব মাছ।
সফিকুল নামে ওই মৎস্যজীবীর কথায়, “মিন ধরতে নদীতে জাল ফেলে রাখি। ক’দিন ধরে সেই জালেই ভেটকি পড়ছে। বাজারে এনে কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছি।”
বহু পুকুরও ডুবে গিয়েছে নোনা জলে। রুই, কাতলা, শিঙ্গি, মাগুর পুকুরের বাইরে বেরিয়ে এসেছে। মিষ্টি জলের এই সব মাছ নোনা জলের সংস্পর্শে এসে ইতিমধ্যেই মরতে শুরু করেছে। মাছ পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এলাকায়। তবে গত কয়েকদিনে অনেক জায়গাতেই জলে ডোবা গ্রামের মানুষ সেই সব মাছ ধরে খেয়েছেন। কেউ কেউ বিক্রিও করছেন। দিন দু’য়েক আগে রায়দিঘির বোগরাবুনিতে জলে ডোবা রাস্তায় জাল ফেলে মাছ ধরছিলেন সোমনাথ নামে এক যুবক। প্রতি টানেই জালে উঠছিল একাধিক মাছ।
সোমনাথের কথায়, “চারদিকে পুকুর। সব ভেসে গিয়েছে। প্রচুর মাছ চলে এসেছে। খাওয়ার জন্যই ধরছি। বেশি হলে বিক্রিও করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy