এ ভাবেই ভাসান দেওয়া হয় ইছামতীতে। ফাইল চিত্র
পুজোর ভিড়ে রাশ টানার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। করোনা-সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে এ বার দুই বাংলার ঐতিহ্যময় প্রতিমা ভাসানেও রাশ টানল টাকি পুরসভা। টাকি এবং হিঙ্গলগঞ্জে ইছামতীতে নৌকা-শোভাযাত্রা করে প্রতিমা বিসর্জন এ বার আর দেখা যাবে না। আগেভাগেই বিভিন্ন মাধ্যমে তার প্রচার শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসন। ঠাকুর ভাসান ঘিরে যে ভিড়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল, তা কাটল বলেই মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
টাকির পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এলাকার ক্লাব এবং পুজো করে এমন পরিবারগুলিকে নিয়ে আলোচনায় বসে ঠিক করা হয়েছে, তাঁরা চাইলে ১০-১২ জনকে নিয়ে প্রতিমা নৌকায় তুলে নদীতে বিসর্জন দিতে পারবেন। এখনও পর্যন্ত দুটি পরিবার নৌকাতে প্রতিমা ভাসানের অনুমতি চেয়েছে। বাকিরা টাকির চারটি ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেবে। অল্প কিছু দর্শনার্থী সুরক্ষা সরঞ্জাম নিয়ে নৌকায় উঠতে পারবেন।”
এ-পার বাংলার প্রতিমার সঙ্গে সঙ্গে ও-পার বাংলার প্রতিমাও নদীতে ভাসান দেওয়া হয়। ও পারের প্রচুর নৌকায় হাজার হাজার দর্শনার্থী নদীতে ঘোরেন। বিভিন্ন সময় এই দিনটিতে অনুপ্রবেশেরও অভিযোগ উঠেছে বারবার। এ পার থেকে নৌকা এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ হলেও ও-পারে কী ব্যবস্থা হচ্ছে তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। আজ, শুক্রবার সপ্তমীর দুপুরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বাহিনীর কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্তারা। টাকিতে ইছামতীর বুকে ভারত-বাংলাদেশের প্রতিমা বিসর্জনের ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। দেশ ভাগ হওয়ার পরও ইছামতীর দুই পারের মানুষের সেই উৎসবের চেহারায় বড় একটা বদল ঘটেনি। বিজয়ার দিন দুই বাংলার মানুষ এক হওয়ার সুযোগ পান। দু’দেশের প্রতিমা নৌকায় তুলে নদীর বুকে চলে বিজয়ার আনন্দ উৎসব। নৌকা থেকেই বিনিময় হয় শুভেচ্ছা। আদান প্রদান হয় মিষ্টি। ইছামতীর দু'পারে দাঁড়িয়ে লক্ষাধিক মানুষ তা দেখেন। দেশ বিদেশের বহু পর্যটকও আসেন। টাকির হোটেল-গেষ্টহাউসে ঘর মেলা দায় হয়ে ওঠে। তবে এই উৎসব ঘিরে গত কয়েক বছর ধরে নানান অসামাজিক কাজের অভিযোগও উঠছিল। এমনকী, নৌকায় যাত্রী বদলে অনুপ্রবেশের অভিযোগও উঠেছে। বছর দু'য়েক ধরে সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং পুলিশ কড়াকড়ি করছে। বসিরহাট পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান তপন সরকার বলেন, “এই শহরেও ইছামতীর উভয় পাড়ের শতাধিক প্রতিমা বিসর্জন হয়। যাত্রী বোঝাই অসংখ্য নৌকা ফি বছর জলে নামে। এ বারে করোনার কথা মাথায় রেখে ২০-২৫ জন সহ প্রতিমার নৌকা ইছামতীর বুকে নামতে দিলেও দর্শনার্থীদের নৌকা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হবে। প্রতিমার নৌকা ছাড়া দর্শনার্থীদের নৌকা নদীতে নামতে দেওয়া হবে না।” তবে পুলিশ-প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দারা দূরত্ববিধি মেনে প্রতিমা বিসর্জন দেখতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy