গরমের দাপট বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জলের সমস্যাও তীব্র থেকে তীব্রতর হতে শুরু করেছে ডায়মন্ড হারবার পুর এলাকায়। কিন্তু নির্দিষ্ট সমাধানের পরিবর্তে পুর কর্তৃপক্ষ এলাকার জলস্তর নেমে যাওয়ার দোহাই দিয়ে সমস্যা এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। জলের সমস্যা নিয়ে পুরএলাকায় বাসিন্দাদের ক্ষোভ অবশ্য পুরনো। সমস্যার সমাধানে এক সময় জলপ্রকল্পের কাজ শুরু করেছিল পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তা আজও শেষ না হওয়ায় পুরসভার গড়িমসির অভিযোগও উঠেছে।
ডায়মন্ড হারবারের ১৬টি ওয়ার্ডের অনেকগুলিতেই পানীয় জলের সমস্যা প্রচণ্ড। তিন বেলা নিয়ম করে জল আসার কথা থাকলেও জল মেলে এক বেলা। কোথাও জলের চাপ এতটাই কম যে একটা বালতি ভরতে কয়েক ঘণ্টা কাবার। যার ফলে জলসঙ্কটের সঙ্গে বাড়তি পাওনা ঝামেলা-অশান্তি। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের লেনিন নগরের বাসিন্দা গীতা সাহা বাড়িতে জলের সংযোগ নিয়েছেন দীর্ঘদিন। এর জন্য মাসে মাসে ৩৫ টাকা করে দিতে হয়। তাঁর কথায়, ‘‘দেখি অন্য এলাকায় জলের অবস্থা ভাল। অথচ আমাদের ওয়ার্ডের এই অংশে কম। মাসে মাসে জলের জন্য ট্যাক্স দিলেও জল পাই না।’’ একই সমস্যা মমতা ঘোষাল, তাপস দে’র মতো বাসিন্দাদেরও। তাঁদের অভিযোগ, এলাকায় ৬০০ ভোটারের জন্য মাত্র সাতটি টাইম কল আর দু’টি নলকূপ। সমস্যার কথা জানিয়ে বাসিন্দারা পুরসভায় স্মারকলিপিও দিয়েছেন।
পুরসভা সূত্রে খবর, ১২ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডে জল সরবরাহ হয় একটি পাম্প থেকে। একটি কর্ক দিয়ে দু’টি ওয়ার্ডে জলের ধারা ভাগ করা হয়েছে। জলের ভাগ কম বা বেশি হওয়ার বিষয়টি পুরসভার বাস্তুকারেরাই ভাল বলতে পারবেন। তবে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভগবানপুর, হরিণডাঙার দিকে জলের সমস্যা ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তুলনায় অনেকটা কম। আবার ১২ নম্বর ওয়ার্ডেরই রায় নগর, ইন্দিরা নগরের চেয়ে লেনিন নগরের সমস্যা বেশি।
আর সেই কারণে পানীয় জল নিয়ে রাজনীতির অভিযোগও তুলেছেন বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, ১২ নম্বর ওয়ার্ড যেহেতু সিপিএমের এলাকা বলে পরিচিত তাই এই ওয়ার্ডে জল কম দেওয়া হয়। ৪ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূলের বলে সেখানে জলের সরবরাহ বেশি।
জলের মতো বিষয় নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পুরপ্রধান মীরা হালদার। তিনি বলেন, ‘‘জল জীবন। এর সঙ্গে রাজনীতি টানা অন্যায়। তবে এটা ঠিক যে গরমে জলের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু জলস্তর নেমে যাওয়ার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। তা ছাড়া ভোল্টেজ সমস্যার জন্যও পাম্প চালাতে অসুবিধা হয়। তবে সমস্যা মেটাতে রাতেও বাড়তি জল দেওয়া হচ্ছে।’’
ভোল্টেজ সমস্যা নিয়ে পুরসভার অভিযোগের প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির বক্তব্য, বিভিন্ন এলাকায় একটি ট্রান্সফর্মার থেকেই বাড়ির এবং জলের পাম্পের সংযোগ রয়েছে। সেই কারণে সমস্যা হতে পারে। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ফকিরচাঁদ কলেজের পাশে নাইয়া পাড়া, মুসলিম পাড়া, হালদার পাড়ার বাসিন্দারাও প্রয়োজনীয় জল না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। পুরপ্রধানের অবশ্য দাবি, জল প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে গেলে এই সমস্যা থাকবে না। বাসিন্দাদের বক্তব্য, বার বার এমন কথা বলা হলেও কবে প্রকল্প শেষ হবে তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। কারণ এর আগে পুরসভা জানিয়েছিল, জল প্রকল্পের কাজ শেষ। গরম পড়ার আগেই মানুষ ঠিকমতো জল পাবে। কিন্তু তা হয়নি। আবার শোনা যাচ্ছে প্রকল্প শেষ হলে জল মিলবে।
স্বাভাবিক জলের ধারা কবে মিলবে, সে দিকেই তাকিয়ে অসংখ্য পুর নাগরিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy