রায়দিঘির সেই বিখ্যাত জটার দেউল। —নিজস্ব চিত্র।
সুন্দরবন এবং উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েক বছর ধরে জোর দেওয়া হয়েছে পর্যটন শিল্পে। তারই ফলশ্রুতিতে সেজে উঠেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘিও। পর্যটক টানতে রায়দিঘি বিধানসভার বিভিন্ন দ্রষ্টব্য স্থান নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। কলকাতা থেকে কাছেপিঠে ঘুরে আসার আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে তৈরি রায়দিঘি।
একের পর এক দ্রষ্টব্য স্থান রয়েছে রায়দিঘিতে। এক নজরে জেনে নেওয়া যাক সেই সব স্থানগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয়।
রায়দিঘির দিঘি
আনুমানিক দশম শতাব্দীতে চন্দ্র রাজারা বৌদ্ধ মঠের পাশে বিশাল দিঘি খনন করেছিলেন বলে কথিত। পরবর্তী কালে রাজা প্রতাপাদিত্যের কাকা বসন্ত রায়ের হাত ধরে সেই দিঘির সংস্কার হয়। আর সেই থেকেই দিঘির নাম রায়দিঘি। এই নামে গোটা এলাকারও নামকরণ হয়েছে। প্রায় ৩০ একর এই দিঘির চার দিকে রয়েছে সুসজ্জিত বাগান। পর্যটক এবং ভ্রমণার্থীদের জন্য কটেজ এবং ক্যাফেটেরিয়ার বন্দোবস্ত রয়েছে। পাশাপাশি, বোটিংয়েরও সুযোগও আছে দিঘিতে।
জটার দেউল
রায়দিঘি থেকে মণি নদী পেরিয়ে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে পূর্বজটা গ্রামে রয়েছে জটার দেউল। ইতিহাসবিদ এবং প্রত্নতাত্ত্বিকেরা মনে করেন, এই দেউল আনুমানিক নবম-দশম শতকে নির্মাণ করেছিলেন চন্দ্র বংশীয় রাজা জয়ন্ত চন্দ্র। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংস্কারের ফলে যেমন মূল কাঠামোর পরিবর্তন হয়েছে, তেমনই পাল্টেছে দেউলের সংস্কৃতিও। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে প্রথম দেউল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও দ্বাদশ শতাব্দী নাগাদ দেউলের সংস্কার করেন লহর চন্দ্র। তিনি শৈব ছিলেন। তাই দেউলে শুরু হয় শিবপুজো। বর্তমানে এই দেউলটি ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব সর্বেক্ষণের আওতায় রয়েছে।
বড়াশি শিবমন্দির
রায়দিঘির আর একটি দ্রষ্টব্য জায়গা মথুরাপুর ১ নম্বর ব্লকের বড়াশি গ্রামে অবস্থিত শিব মন্দির। অনেকে মনে করেন, এই মন্দির সুন্দরবনের সবচেয়ে প্রাচীন শৈবতীর্থ। কথিত আছে, রাজা শশাঙ্ক এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। অনেকের মতে, চৈতন্যদেবও এই শিব মন্দিরে পা রেখেছিলেন। পাশে নন্দর ঘাটে স্নানও করেছিলেন তিনি। সংস্কারের পর বর্তমানে নতুন রূপে এই মন্দির। শ্রাবণ এবং চৈত্রমাসে মানুষের ঢল নামে মন্দিরে।
ছত্রভোগ ত্রিপুরাসুন্দরীর মন্দির
আজও সুন্দরবনের ‘ত্রিপুরাসুন্দরী’ এবং ত্রিপুরার ‘ত্রিপুরেশ্বরী’র নাম উচ্চারিত হয় একসঙ্গে। মথুরাপুর এবং ১ নম্বর ব্লকের কৃষ্ণচন্দ্রপুরের ছত্রভোগে রয়েছে ত্রিপুরাসুন্দরীর মন্দির। ছত্রভোগের ত্রিপুরাসুন্দরীর সেই মন্দির অন্যতম একটি দ্রষ্টব্য স্থান।
চৈতন্য পাদপীঠ
কথিত আছে, শ্রীচৈতন্য নীলাচল যাওয়ার পথে ছত্রভোগ এবং বড়াশি এলাকায় বেশ কিছু দিন কাটিয়েছিলেন। সেখানেই আদিগঙ্গার পাড়ে বেশ কয়েক জনকে বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত করেন তিনি। সেই জায়গাটি চৈতন্য পাদপীঠ নামে পরিচিত। প্রতি বছর মেলা বসে সেখানে। তা দেখতেও ভিড় জমান দূরদূরান্তের পর্যটকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy