বাঁধে ফাটল। রায়দিঘিতে। দিলীপ নস্কর
ঘূর্ণিঝড় অশনি-র আশঙ্কায় উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নানা প্রস্তুতি চলছে ক’দিন ধরে। সোমবারও মানুষকে সতর্ক করতে মাইকে প্রচার চলে। বেহাল বাঁধ মেরামতিতেও তৎপরতা চলছে বিভিন্ন এলাকায়। তবে তার মধ্যেই মধ্যেই দুই জেলার একাধিক এলাকায় বেহাল নদীবাঁধ সংস্কারে প্রশাসন উদ্যোগী হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে। ঝড়ের পূর্বাভাসে তাই আতঙ্ক বাড়ছে ওই সব এলাকার মানুষের।
গত বছর ইয়াসে রায়দিঘির কুমড়োপাড়া এলাকায় মণিনদীর বাঁধে ধস নেমেছিল। প্রায় ৫০ ফুট ভাঙা সেই অংশ এখনও সংস্কার হয়নি বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাঁধ সংস্কারের জন্য পঞ্চায়েত-সহ বিভিন্ন দফতরে জানানো হয়েছে। তবে ফল হয়নি।
ইয়াসের সময়ে বাঁধ ভেঙে নোনা জল ঢুকে পড়েছিল এলাকায়। বিঘের পর বিঘে জমির চাষ নষ্ট হয়। অশনির জেরে নদী উত্তাল হলে ফের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয় বাসিন্দাদের। পঞ্চায়েত সদস্য মাধব বিশ্বাস বলেন, “বাঁধটি সরানোর জন্য একাধিকবার পঞ্চায়েতকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ওখানে ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি ছোট স্লুস গেট ছিল। ২০২১ সালে ওই গেটটি বড় করে তৈরি করা হয়। তারপরেই ইয়াসের সময়ে ধস নেমে যায়। বর্তমানে যা পরিস্থিতি, অশনিতে জলোচ্ছ্বাস হলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
এ বিষয়ে কুমড়োপাড়া পঞ্চায়েতের প্রধান জয়দেব মান্না বলেন, “ওই নদীবাঁধে সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ থেকে কংক্রিটের রাস্তা তৈরি হয়। সেচ দফতরকে বাঁধটি মেরামতের জন্য জানানো হলে তারা সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়। এই দোটানার ফলেই বাঁধটা এখনও সারানো হল না। বিষয়টি ব্লক প্রশাসনকে একাধিকবার জানিয়েছিলাম। এলাকার ছোট ভাঙনগুলি পঞ্চায়েতের একশো দিনের কাজ প্রকল্পের মাধ্যমে সারানোর কাজ চলছে। ওই বাঁধ সারানোর মতো টাকা আমাদের তহবিলে নেই।”
মথুরাপুর ২ বিডিও তাপসকুমার দাস বলেন, “ওই বাঁধ সারানোর বিষয়ে সেচ দফতরকে বলা হয়েছে।” রায়দিঘি সেচ দফতরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার অলোক বেরা বলেন, “বাঁধটি সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ থেকে সংস্কার করা হবে বলে ঠিক হয়েছে।”
সন্দেশখালি ২ ব্লকের মণিপুর পঞ্চায়েতের গোয়ালিয়ার ঘাটের কাছে রায়মঙ্গল নদীর প্রায় দেড় কিলোমিটার বাঁধের অবস্থা খুবই বিপজ্জনক। আমপান ও ইয়াসে এই এলাকায় নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছিল বহু গ্রাম। তারপরে ঠিক মতো সংস্কার হয়নি বলে অভিযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দা হরিপদ ঋষিদাস বলেন, “ইয়াসে এই বাঁধ ভেঙে জমিতে জল ঢুকে যায়। ফলে চাষ হয়নি। মাটির ঘরও ভেসে গিয়েছিল। আবার বাঁধ ভাঙলে জানি না কী হবে। বাঁধের যা অবস্থা, ঝড়বৃষ্টি হলেই ভয়ে বুক কাঁপে।” মণিপুর পঞ্চায়েতের প্রধান প্রসেনজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এখানে বাঁধ বেশিদিন ভাল থাকে না। পঞ্চায়েত থেকে মাটি দেওয়া হয়েছে। তবে তা যথেষ্ট নয়। সেচ দফতরকে জানিয়েছি, বাঁধের অবস্থা খুব খারাপ।”
সন্দেশখালি ১ বিডিও সুপ্রতিম আচার্য বলেন, “ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকাতেই বাঁধের অবস্থা খারাপ। তবে মেরামতির কাজ হয়েছে। শুধু বৃষ্টি হলে আশা করছি বাঁধ ভেঙে বিপত্তি হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy