প্রতীকী ছবি
নদী-খাঁড়ি দিয়ে ঘেরা সুন্দরবনে জোয়ার-ভাটা, পূর্ণিমা-অমাবস্যা, ভরা কোটাল-মরা কোটাল লেগেই আছে। কিন্তু এখন সেই ভরা কোটালের আতঙ্কে ঘুম ছুটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের। আজ, শুক্রবার রাতে ভরা কোটাল শুরু হবে। আমপানের ধাক্কায় বহু জায়গায় বাঁধ ভেঙেছিল। কোথাও নদীবাঁধ দুর্বল হয়ে পড়েছিল। মাঝে হাতে ছিল ১৪ দিন। তারমধ্যে কিছু বাঁধ বাঁধা গিয়েছে। মেরামত হয়নি বেশ কিছু বাঁধ। আতঙ্ক বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার হাসনাবাদের রূপমারি পঞ্চায়েত পাটলি-খানপুর এলাকায় সদ্য তৈরি বাঁধের ২০০ মিটার ভেঙে যায়। প্লাবিত হয়েছে বেশ কিছু গ্রাম। ভরা কোটালে জলস্তর বাড়লে কী অবস্থা দাঁড়াবে, তা জানেন না গ্রামের বাসিন্দারা।
আমপানে পাটলি-খানপুর পঞ্চায়েতের টিয়ামারিতে ডাঁসা নদীর বাঁধ প্রায় ৩০০ ফুট ভেঙে যায়। দ্রুত সেই বাঁধ মেরামত করা গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে জোয়ারে ২০০ ফুট বাঁধ ফের ভেঙে যায়। এমনিতে জলে ডুবেছিল এলাকা। এ দিন ফের নতুন করে টিয়ামারি, খাঁনপুকুর, ঘুনিস খালিশাখলি গ্রাম প্লাবিত হয়। বুধবার ওই এলাকারই টিলারচকেও মেরামত করা বাঁধ ভেঙেছিল। দু’টি জায়গায় বাঁধ ভেঙে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরের ধরমবেড়িয়া, মহিষপুকুর গ্রামও জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
এই এলাকার বিভিন্ন নদীবাঁধ দুর্বল। তা ভাঙলে জলের চাপে বিশপুর পঞ্চায়েত ফের প্লাবিত হবে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, শালবল্লার পরিবর্তে বাঁশ দিয়ে মেরামত করা হয়েছিল। এই বাঁধ জোয়ারের জলের চাপ সইতে পারেনি। আমপানে গৃহহীন বহু মানুষ বাঁধে তাঁবু খাটিয়ে থাকছেন। কেউ কেউ নতুন করে কুঁড়ে বানিয়েছেন। কোটালের ভ্রূকুটিতে আতঙ্কিত সকলেই। নতুন করে বানের জল সব ভাসালে ত্রিপলের ছাউনিটুকু যাবে বলে আশঙ্কা তাঁদের।
প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে, সন্দেশখালি ১ ও ২, হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ, বসিরহাট এবং মিনাখাঁ ব্লকের ন্যাজাট, শিতলিয়া, কালীনগর, সেহেরা-রাধানগর, বাইনাড়া, বাঁশতলি, বাঁকড়া, সাঁতরা, শুলকুনি, জগন্নাথঘাট, বাউনিয়া-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় নদীর বাঁধে বিশাল অংশ ভেঙেছিল। হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল বলেন, “পাটলি-খানপুর এবং ভবানীপুর ১ এলাকায় বড় ভাঙনের জন্য বাঁধ তৈরির কাজ শেষ করা যায়নি। পুর্ণিমার ভরা কোটালের আগে তা সম্ভব হবে না।”
বসিরহাট মহকুমা প্রশাসন জানিয়েছে, আমপানে বসিরহাটে ৮৪৮ কিলোমিটার নদী বাঁধের ২৩ কিলোমিটারের সম্পূর্ণ ভেঙেছিল। ২ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কিছু জায়গায় মেরামত হলেও ১৫টি বড় ভাঙন এলাকায় বাঁধ তৈরি করা যায়নি। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ ছাপিয়ে বুধবার সন্দেশখালি ১ ও ২, হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ, বসিরহাট এবং মিনাখাঁ ব্লকের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মহকুমাশাসক ভিবেক ভাসমে বলেন, “বসিরহাটে ৫০৮টি জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে। তার মধ্যে ১৫টি বড় ভাঙন বাদে বাকি জায়গাগুলি মোটামুটি মেরামত হয়ে গিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy