পর পর চুরির জেরে বাড়ছিল নাগরিক-ক্ষোভ। চোর ধরতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে ওঠে পুলিশ। দু’চার জন দাগি দুষ্কৃতীকে ধরে সমস্যার সমাধান হচ্ছিল না। থামছিল না চুরি। শেষমেশ, এক দম্পতিকে পাকড়াও করে বনগাঁর পুলিশ জানাচ্ছে, এই যুগলই একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছিল বনগাঁ শহরে। তরুণীকে অবশ্য এখনই গ্রেফতার করা হয়নি। তদন্তের স্বার্থেই তাকে প্রাথমিক জেরার পরে ছেড়ে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা।
কী জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা?
তরুণী স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ছাব্বিশ বছরের যুবক চন্দ্রকান্ত রায় ঘুরে বেড়াত নানা এলাকায়। কোন বাড়ি ফাঁকা পড়ে আছে, কোন দোকান গভীর রাতে বন্ধ হয়, এ সব খবর নিত। অচেনা লোকের সঙ্গে ভাব জমাতে দড় চন্দ্রকান্তর স্ত্রী। খবর নিয়ে তা পৌঁছে দিত স্বামীর কাছে। পুলিশ জানতে পেরেছে, সুযোগ বুঝে ফাঁকা বাড়ির তালা ভেঙে ঢুকে পড়ত চন্দ্রকান্ত। বাইরে মোবাইল হাতে পাহারায় থাকত স্ত্রী। মঙ্গলবার রাতে বনগাঁর গোবরাপুর থেকে ৫ মিটার তরল মাদক-সহ গ্রেফতার করা হয় চন্দ্রকান্তকে। তাকে জেরা করে বাকি তথ্য মেলে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তন্দ্রকান্তর আদি বাড়ি গোপালনগর থানার গাজিপুরে। বছর কয়েক আগে প্রেম করে বিয়ে করে। কুকর্মের সঙ্গী হয়ে ওঠে স্ত্রী। বনগাঁ শহরের স্টেশন রোডের কাছে বাসা ভাড়া নেয় ওই দম্পতি। চুরিই তাদের প্রধান পেশা, জানতে পেরেছে পুলিশ। চুরির গয়না, টাকা দিয়ে সম্প্রতি একটি পিকআপ ভ্যান কিনেছিল চন্দ্রকান্ত। যদিও জেরায় সে প্রথমে জানিয়েছিল, বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে গাড়ি কেনে। কিন্তু পুলিশ তার বাবার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে, ছেলের সঙ্গে তাঁদের কোনও রকম সম্পর্ক নেই বলেই জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। চন্দ্রকান্ত বেআইনি কাজকর্ম করত, তা জানতে পেরে তিনি ছেলেকে বাড়ি থেকে বের করে দেন বলে জানিয়েছেন।
পুলিশের দাবি, জেরায় ওই যুবক জানিয়েছে, বনগাঁ শহরের চড়কতলা, কোড়ালবাগান, আমলাপাড়া, রেটপাড়া এবং গ্রামীণ এলাকায় গাঁড়াপোতা, গোবরাপুর, নকপুল, পাটশিমুলিয়া এলাকায় ফাঁকা বাড়িতে সে চুরি করেছে। বনগাঁ থানার আইসি মানস চৌধুরী বলেন, ‘‘কয়েকটি ফাঁকা বাড়িতে চুরির কথা স্বীকার করেছে চন্দ্রকান্ত। এ কাজে স্ত্রী তাকে সহযোগিতা করত বলেও জানা গিয়েছে। স্ত্রীকেও জেরা করা হচ্ছে।’’ তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, তালা ভাঙা বা খোলার কাজে চন্দ্রকান্ত খুবই দক্ষ। চুরির কাজে স্ত্রী ছাড়া আর কাউকে সে সঙ্গে নিত না। গাঁড়াপোতার একটি বাড়িতে চুরি করে চন্দ্রকান্ত দু’টি মোবাইল নিয়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ওটাই তার কাল হল। পুলিশ মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে চন্দ্রকান্তকে শনাক্ত করে ফেলে। আইসি বলেন, ‘‘ধৃতকে মাদক-সহ গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে চুরির মামলা যুক্ত করা হবে।’’ চোরাই মালপত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy