Advertisement
২৯ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

নববধূকে নিয়ে বাইকে চালিয়ে ফিরলেন বর

পাত্র সুরজিৎ বালা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। থাকেন নদিয়ার হাঁসখালি থানা এলাকায়। পাত্রী সুপর্ণা মণ্ডল বিএ তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া। মাস তিনেক আগে রেজিস্ট্রি বিয়ে হয়ে গিয়েছিল তাঁদের।

মাস্ক পরেই মন্ত্রোচারণ করলেন সুরজিৎ। ইনসেটে, কনের বেশে সুপর্ণা

মাস্ক পরেই মন্ত্রোচারণ করলেন সুরজিৎ। ইনসেটে, কনের বেশে সুপর্ণা

সীমান্ত মৈত্র
বাগদা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২০ ০৪:৪৩
Share: Save:

অনাড়ম্বর বিয়েও নজর কাড়ল লকডাউনের আবহে।

সানাইয়ের সুর বাজেনি। ম্যারাপ বেঁধে শ’য়ে শ’য়ে লোক পাত পেড়ে খাননি। নিমন্ত্রিত হাতে গোনা। তবু কনের সাজে দেখা গেল পাত্রীকে। বাইক চালিয়ে এলেন পাত্র। পোশাক পাল্টে ধুতি-পাঞ্জাবি পরে, মন্ত্রোচ্চারণ করে বিয়ে সেরে আবার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ফিরেও গেলেন। এ বার অবশ্য নববধূ তাঁর বাইকের পিছনে!

সোমবার সন্ধ্যায় এমন বিয়ের সাক্ষী থাকল বাগদা থানার হেলেঞ্চা মণ্ডপঘাটা এলাকা।

পাত্র সুরজিৎ বালা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। থাকেন নদিয়ার হাঁসখালি থানা এলাকায়। পাত্রী সুপর্ণা মণ্ডল বিএ তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া। মাস তিনেক আগে রেজিস্ট্রি বিয়ে হয়ে গিয়েছিল তাঁদের। ঠিক ছিল, সামাজিক মতে বিয়েটা হবে ৪ মে। সেই মতোই তোড়জোড় শুরু হয়েছিল দুই পরিবারে। তারপরেই শুরু হয় করোনা-সংক্রমণ। দেশ জুড়ে লকডাউন। মাথায় হাত দুই পরিবারের কর্তাদের।

এ দিকে, সুরজিতের মা অসুস্থ। তিনি আর বিয়ে পিছোতে চাননি। সকলে মিলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হয়, নির্দিষ্ট দিনেই বিয়ে হবে। তবে নিমন্ত্রিত থাকবেন না প্রায় কেউই। শুধু মন্ত্রোচ্চারণটুকুই হবে।

সেই মতো সোমবার বিয়ের আসর বসে। হাজির বলতে কনের বাড়ির হাতে গোনা কয়েকজন এবং বরের দুই বন্ধু। সকলেই মুখে মাস্ক পরে নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখেছিলেন। সিঁদুর দানের সময়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে নিলেন সুরজিৎ। তাতে হাসির রোল উঠল সকলের মধ্যে।

ঘটা করে বিয়ের সাধ পূরণ না হলেও খুশি বর-কনে।

৩৫ কিলোমিটার বাইক চালিয়ে এসেছিলেন সুরজিৎ। দুই বন্ধু পৃথক দু’টি বাইকে। সুপর্ণার বাবা গৌরাঙ্গ কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে থাকেন। লকডাউনের কারণে তিনি সেখানে আটকে। মেয়ের বিয়েতে হাজির থাকতে পারেননি। তবে ফোনে আশীর্বাদ জানিয়েছেন নবদম্পতিকে।

বিয়ে শেষ করে বৌকে বাইকের পিছনে চাপিয়ে রওনা হওয়ার আগে সুরজিৎ বলেন, ‘‘মা অসুস্থ। আমাদের বিয়েটা পিছিয়ে যাক চাইনি। তাই লকডাউনের নিয়মবিধি মেনেই প্রয়োজনীয় আচার অনুষ্ঠান হয়েছে। বিকল্প উপায় ছিল না।’’ সুপর্ণা বলেন, ‘‘বিয়ে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। ধুমধাম করে বিয়ে হবে। কিন্তু লকডাউন পরিস্থিতির কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবু এত দূর থেকে উনি বাইক চালিয়ে বিয়ে করতে এলেন, আমিও বিয়ে করেই এতটা পথ ফিরব বাইকে— এটাও তো কম অ্যাডভেঞ্চার নয়!’’

একই বাইকে দু’জন ওঠা তো নিষেধ নেই— সদ্য বিয়ে করা স্ত্রীকে বাইকের পিছনে চাপিয়ে গাড়ি স্টার্ট করতে করতে বলে গেলেন সুরজিৎ। কনের সাজে সুপর্ণার মুখ তখন হাসিতে উজ্জ্বল।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy