বন্দরের পাঁচিল ভেঙে চলছে ইমারতির কারবার। নিজস্ব চিত্র।
পরিকাঠামোর অভাবে উদ্বোধনের পর থেকে কাজ শুরু করতে পারেনি রাজ্যের সপ্তম মৎস্যবন্দর। বন্দরটি সুন্দরবনের সাগরদ্বীপের মায়াগোয়ালিনি ঘাটের কাছে। বর্তমানে বেহাল বন্দর। ভেঙে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি, পাঁচিল। ঘরগুলির চাঙড় খসে পড়ছে। মুখ থুবড়ে পড়েছে কয়েক কোটি টাকার সরকারি প্রকল্প। সেখানে অবৈধ ভাবে দখল নিয়ে বেআইনি কাজকর্মের অভিযোগও উঠছে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে।
২০০৬ সালে বাম আমলে প্রায় সাত বিঘা জমিতে হুগলি নদী ও বঙ্গোপসাগরের সঙ্গমস্থলে গড়ে উঠছিল মায়াগোয়ালিনি ঘাট (সাগর) মৎস্যবন্দর। উদ্বোধন করেন তৎকালীন মৎস্যমন্ত্রী কিরণময় নন্দ। ২০০৯ সালে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। কিন্তু ভিতরে বরফকল, হিমঘর, জালবুনন কেন্দ্র চালু হয়নি। কর্মীও নিয়োগ হয়নি। ফলে বন্দরটি চালু হয়েও হয়ে ওঠেনি। স্থানীয় সূত্রের খবর, বর্তমানে স্থানীয় কিছু মৎস্যজীবী বন্দরটি অপরিকল্পত ভাবে ব্যবহার করেন।
সেখানে দেখা গেল, ছোট ছোট বেশ কয়েকটি টিনের ঘর। সরকারি যে ঘরগুলি, তা বেহাল। চার দিকে মদের বোতল পড়ে। পাঁচিল ভেঙে অবৈধ ভাবে চলছে ইট-বালির কারবার। স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, সেই কারবার চালান আবদার আলি সাহা নামে এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা। যাঁর বিএড কলেজ, মাছ ধরার ট্রলার সহ অন্য ব্যবসাও আছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ইট-বালির কারবার চালানোর পাশাপাশি বন্দরের ট্যাঙ্ক থেকে খাবার জল বঙ্গোপসাগরে চলাচল করা জাহাজগুলিতে পাচার করা হচ্ছে। তাঁদের দাবি, দখল সরিয়ে বন্দরটি চালু করলে এলাকার বহু মৎস্যজীবী উপকৃত হবেন।
আবদারের বক্তব্য, বাম আমলে বন্দর হওয়ার জন্য তাঁরা জমি দান করেছিলেন। যেহেতু বন্দর চালু হয়নি, তাই সেখানে ইট-বালির ব্যবসা করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সরকার বন্দর ফের বন্দর সাজিয়ে তোলে, তা হলে আমি ব্যবসা বন্ধ করে দেব। আমরাও চাই বন্দর নতুন করে চালু হোক।’’
সাগর পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধক্ষ আব্দুল সামির শাহের কথায়, ‘‘বন্দরটি ভগ্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছে অনেক কয়েক বছর। যদি ওখানে কেউ অবৈধ কাজকর্ম করে থাকেন, প্রশাসনকে বলব, আইনি ব্যবস্থা নিতে।’’
৯ ডিসেম্বর বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান সুমন কাঞ্জিলাল মায়াগোয়ালিনি ঘাট মৎস্যবন্দর নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট বিধানসভায় পেশ করেছেন। সূত্রের খবর, রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৮ সালে প্রায় ৩ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মৎস্যবন্দরের নির্মাণের কাজ শেষ হয়। মৎস্য দফতরের অনুমতিতে পশ্চিমবঙ্গ মৎস্য নিগম লিমিটেড স্থানীয় মৎস্যজীবীদের একটি সমবায়কে কোনও আর্থিক দায়বদ্ধতা ও নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই তা হস্তান্তর করে। কিন্তু বর্তমানে বন্দর সংলগ্ন খালে পলি জমে যাওয়ায় ট্রলার যাতায়াতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। বন্দরের জেটি দীর্ঘ দিন ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘মৎস্যবন্দর নিয়ে বিধানসভায় বিস্তারিত রিপোর্ট কী জমা পড়েছে, জানি না। রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পরে মতামত জানাতে পারব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy