জেলাশাসক পিভি সেলিম সোমবার বলেছিলেন, ভাঙরে ডেঙ্গি রুখতে জ্বরে আক্রান্তদের বাড়িতে যোগাযোগ করে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। কিন্তু নেবে কারা? দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্বাস্থ্য পরিকাঠামোটাই নড়বড়ে!
কেমন সেই পরিকাঠামো? জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘রোগীর রক্ত সংগ্রহ করতে জানেন এমন স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা প্রতি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক জন। আর প্রতি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অধীনে যে হেলথ সাব-সেন্টার রয়েছে, সেখানকার অবস্থা আরও ভয়াবহ।’’ ওই স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘অধিকাংশ হেলথ সাব সেন্টারে রক্ত সংগ্রহের প্রশিক্ষিত কর্মী নেই। যা-ও বা দু-এক জন আছেন, তাঁকে নিয়ে টানাটানি চলছে। এক জন কর্মীকে যদি দিনভর ছুটে বেরিয়ে নমুনা সংগ্রহ করতে হয়, তা হলে পরীক্ষাগারে আক্রান্তদের রক্ত পরীক্ষা কবে হবে আর কবে রিপোর্ট মিলবে, কে বলতে পারে?’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১০ হাজার জন পিছু একটি হেলথ সাব-সেন্টার। কলকাতার অদূরে দু’টি ব্লক—ভাঙর ও বিষ্ণুপুরে যে ভাবে জ্বর ছড়িয়ে পড়ছে, কর্মীর অভাবে সে ক্ষেত্রে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রক্ত সংগ্রহ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। আর তাতেই বাড়ছে আতঙ্ক। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘এমনিতেই সাধারণ অসুখবিসুখে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হেলথ-সেন্টারগুলিতে রোগীর চাপ থাকে। তাঁদের পরিষেবা না দিয়ে কর্মীরা যদি বাড়ি বাড়ি গিয়ে রক্ত সংগ্রহ অভিযানে নেমে পড়ে, তা হলে সাব সেন্টার ও ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি কার্যত অকেজো হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে সাধারণ চিকিৎসা বিঘ্নিত হবে। তখন পরিস্থিতি কে সামলাবে— প্রশ্ন স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের।
কিন্তু জেলা প্রশাসনের কড়া নির্দেশ, জেলার ২৯টি ব্লক থেকে জ্বরে আক্রান্তদের রক্ত সংগ্রহ করে তা কলকাতার এমআর বাঙুর হাসপাতালে পৌঁছে দিতে হবে। কারণ, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ডেঙ্গির রক্ত পরীক্ষার পরিকাঠামো নেই। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের কড়া নির্দেশ পেয়ে রক্ত সংগ্রহে নেমে অথৈ জলে পড়েছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশন প্রকল্পের ‘আশা’ মহিলাদের ময়দানে নামিয়ে প্রচার অভিযান শুরু হয়েছে। কিন্তু খালি হাতে শুধু প্রচার অভিযানে কী হবে? সুন্দরবনের এক ব্লক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘বাড়ি গিয়ে রক্ত সংগ্রহ অসম্ভব। ‘আশা’-র মহিলারা এলাকায় যাচ্ছেন। জ্বরে আক্রান্তদের খোঁজ পেলে তাঁদের সাব-সেন্টারে পাঠানোর পরামর্শ দিচ্ছেন ‘আশা’রা।’’ বলছেন, সবাইকে মশারি টাঙিয়ে শুতে। কিন্তু দিন-রাত কে মশারি টাঙিয়ে শোবে? সম্ভব নাকি— প্রশ্ন ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের পূর্ব ও পশ্চিম কাঁঠালিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের। অভিযোগ, স্বস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের তরফে শুধু গত ক’দিন ধরে এলাকায় ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হচ্ছে। তার না আছে গন্ধ, না আছে ঝাঁঝ। তাতে কতটা কাজ হবে, তা নিয়ে সন্দিহান গ্রামবাসীদের একাংশ। জেলা শাসক পিভি সেলিম বলেন, ‘‘পরিস্থিতি অনুযায়ী চেষ্টা করা হচ্ছে। রক্ত সংগ্রহের প্রশিক্ষিত কর্মীর ঘাটতি মেটানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy