জীবনে নানা সময় আসে, যখন কোনও কাজ করতে ভাল লাগে না, নিজের ভিতরে গুটিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। সেই মুহূর্তে একটা কথাতেই নিজের মানসিক অবস্থা বুঝিয়ে দেন সকলে— মন ভাল নেই। মন মাঝেমধ্যে অল্পবিস্তর খারাপ হতেই পারে। সকলেরই হয়। আবার নিজে থেকেই অনেক সময় ঠিকও হয়ে যায়, তা রোগের পর্যায়ে পড়ে না। কিন্তু ‘মুড ডিজ়অর্ডার’ এক জটিল রোগ। মনখারাপ জটিল এবং দীর্ঘস্থায়ী হলে তাকে চিকিৎসার পরিভাষায় ‘ডিপ্রেসিভ ডিজ়অর্ডার’ বলা হয়।
মনখারাপ সাময়িক না কি দীর্ঘস্থায়ী অসুখের পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে, তা কিছু লক্ষণ দেখলে অনুমান করা যায়। বিশ্ব জুড়ে দুই-তৃতীয়াংশ মনোরোগীর ক্ষেত্রেই হতাশার মতো অসুখকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। পরিজনেরা বিষয়টি উড়িয়ে দেন। এর পরিণাম মারাত্মক হতে পারে। প্রিয়জন বিয়োগ, খারাপ নম্বর, দাম্পত্য সম্পর্কে অবনতি, অপরাধবোধ, দীর্ঘ অসুস্থতা, কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপ ও আরও নানা কারণে মনের এমন স্থিতি হতে পারে।
কী কী লক্ষণ দেখলে মোটেও অবহেলা করবেন না মেয়েরা?
১) সব সময়েই মনখারাপ লাগবে। এই বিষয়ে মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের মত, আনন্দের মুহূর্তেও হতাশ লাগবে। বহু জনের মাঝে থেকেও নিজেকে একা মনে হবে। রোজের রুটিন মানতে ইচ্ছা করবে না।
আরও পড়ুন:
২) ঘুমের সময় বদলে যাবে। হয় ঘুম আসবে না, অনিদ্রার সমস্যায় ভুগবেন অথবা প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঘুমোবেন। সারা দিনই ক্লান্ত লাগবে, সব সময়ে ঝিমুনি আসবে। ‘স্লিপিং ডিজ়অর্ডার’ দেখা দিতে পারে।
৩) যে কোনও কাজেই উৎসাহ হারিয়ে ফেলবেন। মনোবিদ জানাচ্ছেন, পছন্দের কাজগুলিও আর করতে ইচ্ছে করবে না। মনঃসংযোগের সমস্যা হবে, আত্মবিশ্বাস কমে যেতে পারে, সিদ্ধান্ত নিতেও সমস্যা হবে।
৪) ঘন ঘন মেজাজ বিগড়ে যাবে। খিটখিটে মেজাজ, আচার-আচরণেও বদল আসবে। কথা বলতে ইচ্ছে করবে না। পরিবার-পরিজনের থেকেও দূরত্ব বাড়তে থাকবে। সকলের মাঝে যেতে ইচ্ছে করবে না।
৫)শারীরিক কিছু সমস্যাও দেখা দিতে পারে, যেমন মাথা যন্ত্রণা বা মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দেয় অনেকের। ঘন ঘন অম্বলের সমস্যা হতে পারে। রাতে শুয়েও দর দর করে ঘাম হতে পারে। এই সব লক্ষণ দেখা দিলে সতর্ক হতেই হবে।
মনোবিদ জানাচ্ছেন, হতাশা সাময়িক ভাবে আসে, কিন্তু এই লক্ষণগুলি দীর্ঘমেয়াদে দেখা দিলে তখন সাবধান হতে হবে। এর থেকে উত্তীর্ণ হতে চাই মনের জোর, ধৈর্য আর প্রিয়জনের সাহচর্য। হইচই, গল্প-গানের মধ্যে দিয়ে মন ভাল রাখুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।