ঋদ্ধিব্রত
চিকিৎসকের অভাবে হাসপাতাল বন্ধ। তাই সময় মতো অক্সিজেন দেওয়া গেল না শিশুকে। অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা গেল দেড় বছরের ঋদ্ধিব্রত ঘোষ।
হিঙ্গলগঞ্জের ঘোষপাড়ায় তার বাড়ি। বাবা গৌতম ঘোষ চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ছেলের চোখ দু’টি দান করেছেন। টাকির ‘নেত্রলোক’-এর পক্ষে দীপক বসুর নেতৃত্বে একটি দল ওই শিশুর চোখ দু’টি সংগ্রহ করে কলকাতার হাসপাতালে পাঠান।
গৌতমবাবুর ফটোকপির দোকান। স্ত্রী পম্পা। তাঁদের দুই সন্তান। চার বছরের ঋত্বিকা এবং দেড় বছরের ঋদ্ধিব্রত। কয়েক মাস আগে ছেলেটি অসুস্থ হয়ে পড়ায় কলকাতার হাসপাতালে তার চিকিৎসা হয়। বুকের জটিল রোগ ধরা পড়ে। সেই থেকে চিকিৎসা চলছিল।
মঙ্গলবার সকালে বাবার কোলে খেলা করছিল ঋদ্ধি। সাড়ে ৮টা নাগাদ হঠাৎ বুকের ব্যথায় কাঁদতে শুরু করে সে। শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। অক্সিজেন দিলে ছেলে সুস্থ্ হতে পারে মনে করে মোটর বাইকে ছেলেকে নিয়ে গৌতমবাবু রওনা দেন হিঙ্গলগঞ্জ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দিকে। সেখানে গিয়ে দেখেন, চিকিৎসকের অভাবে হাসপাতালের দরজা বন্ধ। সঙ্গে সঙ্গে ছেলেকে নিয়ে রওনা দেন ন’নম্বর সান্ডেলেরবিল হাসপাতালের দিকে। পথেই অতিরিক্ত শ্বাসকষ্টে নেতিয়ে পড়ে ছোট্ট ঋদ্বি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, বড্ড দেরি হয়ে গিয়েছে। ছেলে কোলে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা।
ঘটনা জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, হিঙ্গলগঞ্জ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার আধুনিক সরঞ্জাম থাকলেও সব সময়ের চিকিৎসক নেই। মাঝে মধ্যে অন্য হাসপাতাল থেকে একজন চিকিৎসক আসেন। তখন হাসপাতাল খোলা থাকে। অন্য সময় বন্ধ। একজন স্থায়ী চিকিৎসকের দাবিতে নাগরিক সমিতির পক্ষে হাসপাতালের দেওয়ালে পোস্টার মারা হয়।
গৌতমবাবু বলেন, ‘‘সময় মতো অক্সিজেন দিতে পারলে ছেলেটা বেঁচে যেত।’’ ২০১০ সাল পর্যন্ত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অপারেশন থিয়েটার এবং ১২টি শয্যা ছিল এই হাসপাতালে। ৪ জন চিকিৎসক দিনরাতের পরিষেবায় ব্যস্ত ছিলেন। ইদানীং সপ্তাহে ৩-৪ দিন বহির্বিভাগে রোগী দেখার ব্যবস্থা আছে। ব্লক স্বাস্থ্যকর্তারা এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসকের দাবি, চিকিৎসকদের বিশেষ কেউ সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এই সব এলাকায় আসতে চাইছেন না। তার উপরে জ্বরের প্রাদুর্ভাব ছড়ানোয় অনেক চিকিৎসককে তুলে নেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy