বিপন্ন: মর্জিনার দুই মেয়েরও জ্বর। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
উত্তর ২৪ পরগনায় জ্বরে ভুগে মৃত্যুর ঘটনা থামার লক্ষণ নেই। অনেকে ডেঙ্গিতে মারা যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। যা স্বীকার না করে রাজ্য সরকার কার্যত ডেঙ্গিকেই গুরুত্ব দিতে চাইছে না বলে নানা মহলে অভিযোগ উঠছে। রবিবারও মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার।
চিকিৎসা ব্যবস্থার উপরে ভরসা না রাখতে পেরে জ্বর মোকাবিলায় এ বার তুকতাকের উপরে ভরসা করতে শুরু করেছেন অনেকে। সুজি দিয়ে খাবার তৈরি করে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা। ওই সুজিই জ্বর, ডেঙ্গি থেকে মুক্তি দেবে বলে বিশ্বাস তাঁদের।
এনাওদহ গ্রামেরা মানুষজন এ দিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে ডেঙ্গির প্রকোপ কমানো ও মৃত্যু ঠেকাতে দোয়া করেন। তারপরে ওই খাবার তৈরি করে এলাকার প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। চিকিৎসক দেখিয়েও মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না, তাই এই ব্যবস্থা— জানালেন কেউ কেউ।
তবে দেরিতে হলেও কিছুটা নড়ে বসতে চলেছে সরকার। রবিবার দেগঙ্গায় এসেছিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি জানান, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে ২৪ জন চিকিৎসক এবং ৪২ জন নার্স পাঠানো হয়েছে জেলায়। ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ১০ লক্ষ লিফলেট, ১ হাজার সিডি তৈরি করা হচ্ছে। যা পঞ্চায়েতের মাধ্যমে বিলি করা হবে।
প্রশাসনের দাবি, জ্বরের মোকাবিলায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক অন্তরা আচার্য, দেগঙ্গার বিধায়ক রহিমা মণ্ডল-সহ জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা স্বাস্থ্যশিবিরগুলি ঘুরে দেখেন। পরে বিডিও অফিসে বৈঠক করেন তাঁরা। এলাকায় গিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়বাবুও।
তিনি পরে বলেন, ‘‘জ্বরের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য জেলা পরিষদে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। আপাতত জেলায় ৮টি শিবির চলছে। তার মধ্যে ৫টিই দেগঙ্গায়।’’ এখন থেকে প্রতিটি শিবিরের দায়িত্ব নেবেন জেলা পরিষদের একজন করে কর্মাধ্যক্ষ।’’
এরই মধ্যে রবিবার সকালে জ্বরে ভুগে মারা গিয়েছেন দেগঙ্গা ১ পঞ্চায়েতের আমিনরপুর পূর্বপাড়ায়। মৃতার নাম মর্জিনা বিবি (৩৮)। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। স্থানীয় চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ খাচ্ছিলেন। রবিবার সকালে হাত-পা অসাড় হয়ে যায়। বমি বমি ভাব ছিল। বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসেরা তাঁকে মৃত বলে জানিয়ে দেন। মর্জিনার স্বামী ইসমাইল মণ্ডল দিনমজুর। বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, দুই মেয়েরও জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে। বড়জন উম্মে হাবিবার বয়স সতেরো। ছোট ছ’বছরের সালমা খাতুন। ইসমাইল বলেন, স্ত্রীকে হারানোর শোক সামলাবো, না মেয়েদের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাব— কিছুই বুঝতে পারছি না।’’ গ্রামবাসী জানালেন, এখানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মশা মারার কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। ডোবা, আগাছায় ভরা চারিদিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy