মৃত: (বাঁ দিক থেকে) বিভাস স্বর্ণকার, সুরাইয়া খাতুন ও সৌরভ সানা। নিজস্ব চিত্র
আবহাওয়া পাল্টাচ্ছে। কিন্তু জ্বরের জেরে মৃত্যু-মিছিল থামছে না।
ফের জ্বরে শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমায় তিন জনের মৃত্যু হল। ফের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগও উঠল।
মৃতেরা হলেন—টাকির বিভাস স্বর্ণকার (১৮), বাদুড়িয়ার আধারমানিক গ্রামের সৌরভ সানা (২৭) এবং স্বরূপনগরের চারঘাট গ্রামের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সুরাইয়া খাতুন (১৬)। প্রত্যেকেরই পরিবারের দাবি, মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি। কারণ, তিন জনেরই ডেঙ্গির উপসর্গ ছিল। কিন্তু হাসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেটে তা লেখা হয়নি।
কয়েকদিন আগে টাকির ন’নম্বর ওয়ার্ডের যুগিয়াপাড়া রেলগেট এলাকার বাসিন্দা, বিভাস অসুস্থ হয়ে পড়েন। জ্বরের সঙ্গে বমি শুরু হয়। স্থানীয় চিকিৎসকের ওষুধেও জ্বর না-কমায় তাঁকে টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় লে শুক্রবার বিভাসকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। শনিবার সেখান থেকে কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে বিভাস মারা যান।
বিভাসের মা পূর্ণিমাদেবীর দাবি, টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে থাকাকালীন সেখানকার একটি ল্যাবরেটরিতে ছেলের রক্ত পরীক্ষা হয়। টাকার অভাবে রিপোর্ট হাতে পাননি। তবে ওই লেবরেটরির পক্ষে হাতে লেখা কাগজে ‘ডেঙ্গি’ হয়েছে জানিয়েছে স্ট্যাম্প মেরে দেওয়া হয়। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে যথাযথ চিকিৎসা মেলে না। বেশি চিকিৎসকও নেই।
দিন তিনেক আগে জ্বর হওয়ায় বাদুড়িয়ার আধারমানিক গ্রামের সৌরভকেও স্থানীয় রুদ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাঁকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়েছিল। শনিবার কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে সৌরভ মারা যান।
এলাকার কংগ্রেস বিধায়ক কাজি আব্দুর রহিম দিলু এ দিন সৌরভের বাড়িতে যান। বিধায়ক বলেন, ‘‘এই নিয়ে তিন মাসে বাদুড়িয়াতে ৩২ জনের ডেঙ্গিতে মৃত্যু হল। অথচ, সরকারি নির্দেশে স্বাস্থ্যকর্তারা এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন।’’
স্বরূপনগরের সুরাইয়াকে গত ১৩ নভেম্বর হাবরা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখান থেকে ১৮ নভেম্বর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি ফেরার পর ফের জ্বর আসায় সুরাইয়াকে ২২ নভেম্বর ফের ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শনিবার আর জি করে নিয়ে যাওয়া হলেও ভর্তি নেওয়া হয়নি। বাড়ি ফিরে গভীর রাতে বমি করতে করতে সুরাইয়া মারা যায়।
মৃতের বাবা সেলিম মণ্ডলের ক্ষোভ, ‘‘মেয়ের ডেঙ্গি হয়েছিল। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টেই জেনেছি। কিন্তু যথাযথ চিকিৎসার অভাবেই মেয়ে মারা গেল।’’ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি ক্ষীরোদ ঘোষ বলেন, ‘‘হাবরা হাসপাতাল প্রথমবার যে কী করে মেয়েটিকে সুস্থ আছে বলে ছেড়ে দিল! আর জি করও ভর্তি নিল না।’’ কোনও অভিযোগই মানতে চায়নি মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy