Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Child

মোবাইল ফেরত দিতে সাইকেল ফেলে দৌড়

টোটোর গতি বেশি থাকায় অচিরেই ভিড়ে মিশে যায়। তবে হাল ছাড়েনি ছোট ছেলেটি। বাবা তাকে বলেন বাড়ি যেতে। বাড়ি গিয়ে পরে না হয় ফোন থানায় জমা করা যাবে।

An image of the boy

মহম্মদ তৌফিক মণ্ডল। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৫৮
Share: Save:

বছর দশেকের বালকের চোখে পড়েছিল, টোটো-যাত্রীর পকেট থেকে মোবাইল ফোন পড়ে গিয়েছে। বাবার সাইকেল থেকে নেমে মোবাইল ফেরত দিতে সে দৌড় শুরু করে। চলন্ত টোটোর পিছনে দৌড়েও অবশ্য নাগাল পায়নি। বাড়ি না ফিরে বাবাকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হয় থানায়। সেখানেই মোবাইল জমা করেছে সে। পরে মোবাইল ফোনের মালিক থানা থেকে সেটি ফেরতও নিয়েছেন। ছোট্ট ছেলেটির দায়িত্বজ্ঞানের তারিফ করছেন পুলিশ কর্তারা। বনগাঁ সাইবার থানার আইসি সুদীপ্ত দে বলেন, "ছেলেটির মানসিকতায় আমরা সকলে অবাক। জীবনে অনেক বড় হোক, এই আশীর্বাদ করি। ওকে একটি কলম উপহার দিয়েছি।"

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ শহরে চাঁপাবেড়িয়া এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ তৌফিক মণ্ডল পড়ে পঞ্চম শ্রেণিতে। মঙ্গলবার গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ে বাবা মহম্মদ রফিক মণ্ডলের সাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিল। তৌফিকের চোখে পড়ে, চলন্ত টোটার এক যাত্রীর পকেট থেকে মোবাইল পড়ে গেল রাস্তায়। বাবা বলেন, মোবাইল নয়, হয় তো ফোনের কভার হবে। কিন্তু তৌফিকের মন মানেনি। বাবার সাইকেল থেকে নেমে পড়ে সে মোবাইলটি রাস্তা থেকে কুড়িয়ে আনে। কোনও কথা না বলে দৌড়তে শুরু করে টোটোর পিছনে। চিৎকার করে ডাকতে থাকে।

কিন্তু টোটোর গতি বেশি থাকায় অচিরেই ভিড়ে মিশে যায়। তবে হাল ছাড়েনি ছোট ছেলেটি। বাবা তাকে বলেন বাড়ি যেতে। বাড়ি গিয়ে পরে না হয় ফোন থানায় জমা করা যাবে। কিন্তু তৌফিক নাছোড়বান্দা। বাবাকে নিয়ে সে পৌঁছয় বনগাঁ সাইবার থানায়। বনগাঁ হাই স্কুলের পড়ুয়ার কাণ্ড দেখে অবাক তাঁরা।

ইতিমধ্যে মোবাইলের মালিক দিবাকর মণ্ডল অন্য একটি নম্বর থেকে নিজের ফোনে রিং করেন। থানা থেকে তাঁকে জানানো হয়, মোবাইল নিয়ে যেতে। বেসরকারি সংস্থার কর্মী দিবাকরের বাড়ি ঠাকুরনগরে। তিনি থানায় আসেন। বলেন, "মেয়েকে কোলে বসিয়ে টোটো করে বনগাঁ স্টেশনে যাচ্ছিলাম। পকেট থেকে ফোনটি পড়ে যায়। ভাবাই যায় না, ছোট ছেলেটি এত তৎপরতার সঙ্গে এত দায়িত্ব পালন করবে। ওর মানসিকতাকে কুর্নিশ জানাই।।"

তৌফিকের কথায়, "বাবা-মা শিখিয়েছেন, রাস্তায় পড়ে থাকা জিনিস থানায় জমা দিতে হয়। আমি তাই করেছি।" তৌফিকের বাবা পেশায় দর্জি। অভাবের সংসার। ছেলের কাজে তিনিও গর্বিত। বললেন, "সারা জীবন ছেলে যেন এই মানসিকতা নিয়ে চলতে পারে।"

অন্য বিষয়গুলি:

Helpful Mobile Phone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy