বৃষ্টি থেমেছে। কিন্তু ত্রাণের ত্রিপলের জন্য হাহাকার চলছে মথুরাপুর ২ ব্লকে। পঞ্চায়েত অফিস থেকে বিডিও অফিস। সব সরকারি অফিসে ত্রিপল চেয়ে জমা পড়েছে কয়েকশো আবেদনপত্র। কিন্তু ত্রিপল মিলছে কই! ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের।
মথুরাপুর ২ ব্লকের দিঘিরপাড়া বকুলতলা পঞ্চায়েতের বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর অসিত দাস মাটির দেওয়ালের ঘরে বসবাস করেন। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে দফারফা হয়েছে ঘরের চাল। ঘরে ঢুকছে বৃষ্টির জল। পুরো ঘরটাই হেলে গিয়েছে। ঘরের চার দিকে বাঁধা বাঁশের খুঁটি। সরকারি সাহায্য হিসেবে ত্রিপলের আশায় ছুটেছিলেন পঞ্চায়েত অফিসে। কিন্তু ত্রিপল মেলেনি।
শুধু ওই পরিবার নয়, ঘোর বর্ষায় ত্রিপল না পেয়ে সমস্যায় পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। দিঘিরপাড় বকুলতলা পঞ্চায়েতের করালিরচক গ্রামের নকুল হালদারের বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছিল। তিনি প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। টানা বৃষ্টিতে ব্লকের বিভিন্ন গ্রামের রাস্তায় জল জমে গিয়েছিল। ঘরে জল ঢুকে যাওয়ায় নকুলবাবুর মতো অনেকেই অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাঁদের ক্ষোভ, ত্রিপল পেলে তাঁদের এ ভাবে ঘর ছেড়ে থাকতে হতো না।
যদিও মথুরাপুর ২ বিডিও মোনালিসা তিরকের দাবি, ‘‘ত্রিপলের কোনও সঙ্কট নেই। তবে ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা নিয়ে একটু বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। প্রয়োজনে আরও ত্রিপল দেওয়া হবে।’’
দিন কয়েক আগে মথুরাপুর ২ ব্লক অফিসে গিয়ে দেখা হল নন্দকুমারপুর এলাকার এক মহিলার সঙ্গে। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘ত্রিপলের জন্য পঞ্চায়েতে গেলে বিডিও অফিসে পাঠাচ্ছে আবার বিডিওর কাছে গেলে উনি বলছেন, পঞ্চায়েতে ফিরে যেতে। একটি ত্রিপলের জন্য ক’দিন ধরে অনেক ছোটাছুটি করেছি। কিন্তু কিছু লাভ হল না।’’
সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধানদের একাংশ। নন্দকুমারপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রজতকান্তি বেরা বলেন, ‘‘ত্রিপলের জন্য অনেকগুলি আবেদন জমা পড়লেও এখনও কোনও ত্রিপল পাইনি।’’ কৌতলা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মুসিউদ্দিন বৈদ্য জানান, ৩০০টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার আবেদন করলেও মাত্র ৩৫টি ত্রিপল মিলেছে। রায়দিঘির মনিনদী-লাগোয়া রাধাকান্তপুর পঞ্চায়েতে ত্রিপলের জন্য ৩৫০টি আবেদন জমা পড়লেও ৩৩টি ত্রিপল পাওয়া গিয়েছে। ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হিমাদ্রি নাইয়া বলেন, ‘‘ত্রিপল চেয়ে প্রতি দিন আবেদন আসছে। কিন্তু জোগান দিতে পারছি না। ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখলেও কাজের কাজ হচ্ছে না।’’ একই ক্ষোভ নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কার্তিক সাঁতরা ও দিঘিরপাড় বকুলতলা পঞ্চায়েতের প্রধান ইরান গাজির। সকলেরই বক্তব্য, সময় মতো ত্রিপল পেলে হয় তো কিছু মাটির ঘর রক্ষা পেত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy