নতুন জীবন পেল রুবিনা।
একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার পথে রাস্তার ধারে পুকুরের সামনে ভিড় দেখে একটু কৌতুহল হয়েছিল জয়নগরের তৃণমূল সাংসদ প্রতিমা মণ্ডলের। চালককে গাড়ি থামাতে বললেন তিনি। দেখেন, বছর দু’য়েকের একটি অচেতন শিশুকে মাথায় তুলে ঘুরছেন লোকজন। তাঁদের জিজ্ঞেস করে জানতে পারলেন, জলে ডুবে গিয়েছিল রুবিনা খাতুন নামে ওই শিশুটি। পেট থেকে জল বের করার জন্য তাকে মাথায় নিয়ে ঘোরানো হচ্ছে। শুনে আর দেরি করেননি প্রতিমাদেবী। নিজের পরিচয় দিয়ে শিশুর বাবা-মাকে জানান, সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা যেন শিশুটিকে গাড়িতে নিয়ে হাসপাতালে যান। না হলে হয় তো বাঁচানোই যাবে না। কার্যত তাঁর উদ্যোগেই চিকিত্সা পেল ক্যানিংয়ের জীবনতলা গ্রামের রুবিনা খাতুন। আপাতত ভালই আছে সে।
এ দিন ক্যানিংয়ের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ক্যানিংয়ের জীবনতলার ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন প্রতিমাদেবী। শিশুটিকে গাড়িতে তুলে নিয়ে রওনা দেন খুঁচিতলা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দিকে। কিন্তু সেখানে কোনও চিকিত্সক ছিলেন না। ফলে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। ঝোড়োর মোড়ের কাছে একটি নাসির্ংহোমে নিয়ে যান। সেখানেও কোনও পাশ করা ডাক্তার ছিলেন না। তবে যিনি ছিলেন তিনিই চিকিত্সার দায়িত্ব নেন।
খানিকটা নিশ্চিন্ত হয়ে ফিরেই আসছিলেন প্রতিমাদেবী। হঠাত্ খেয়াল হয়, নার্সিংহোমে তো ভর্তি করা হল। কিন্তু রুবিনার বাবা-মাকে তো টাকা-পয়সা কিছু দেওয়া হয়নি। সামলাতে পারবেন তো চিকিত্সার খরচ? গাড়ি নিয়ে ফিরে আসেন নার্সিংহোমে। ঢুকতেই কানে আসে রুবিনার কান্না। বোঝেন, এ যাত্রা বেঁচে গেল সে। তারপরে নার্সিংহোমের বিল মিটিয়ে দেন নিজেই। রওনা দেন ক্যানিংয়ের দিকে।
সাংসদের এমন ব্যবহারে যারপরনাই মুগ্ধ শিশুটির পরিবার। শিশুটির বাবা রহমান সর্দার বলেন, “বিপদের সময় যে ভাবে সাংসদ নিজে এগিয়ে এলেন, ভাবতে পারছি না। ওঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।” সাংসদ বলেন, “রুবিনা ভাল হয়ে গিয়েছে। এতেই ভাল লাগছে।”
তবে এই ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠেছে সুন্দরবনের বেহাল স্বাস্থ্যচিত্র নিয়ে। মানুষের সচেতনতা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। প্রতিমাদেবী জানান, এ ব্যাপারে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy