Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Kharagpur

সাহায্য চেয়েও মেলেনি! শ্রমিক স্পেশালে শিশুকন্যার মৃত্যু

শ্রমিক পরিবারটির দাবি, শিশুটি যখন অসুস্থ হয়েছিল, তখন ট্রেন ছিল ওড়িশার ব্রহ্মপুরের কাছে।

মৃত শিশুকন্যাকে নিয়ে এক পরিজন। বুধবার খড়্গপুর স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র

মৃত শিশুকন্যাকে নিয়ে এক পরিজন। বুধবার খড়্গপুর স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
খড়্গপুর ও পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২০ ০৩:৩৫
Share: Save:

বিনা চিকিৎসায় একরত্তি মেয়ের মৃত্যু হয়েছে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে, এমনই দাবি বাবা-মার। কেরল থেকে ১৮ দিনের সেই মেয়ে রাবিয়া-সহ তিন সন্তান, স্ত্রী, ভাই এবং কয়েক জন সহকর্মীর সঙ্গে পুরুলিয়ায় ফিরছিলেন পরিযায়ী শ্রমিক দিলদার আনসারি। তাঁর দাবি, ‘‘মঙ্গলবার রাত ২টো নাগাদ ট্রেনে রাবিয়া নেতিয়ে পড়ে। রেলের হেল্পলাইনে যোগাযোগ করি। সেখান থেকে আমাকে নিজের রাজ্যে যোগাযোগ করতে বলা হয়।’’ পরিবারটির দাবি, ওড়িশার বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন থামলেও, তারা সাহায্য পায়নি। বুধবার দুপুরে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর স্টেশনে নিউ জলপাইগুড়িগামী ‘শ্রমিক স্পেশাল’ পৌঁছতে ঘটনাটি ঘিরে হইচই শুরু হয়।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘শিশুটির পরিবার কোনও অভিযোগ করেনি। তবে খড়্গপুরে পৌঁছনোর আগে ঠিক কী হয়েছিল, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।’’

পুরুলিয়ার জয়পুরের বালি গ্রামের দিলদার ও তাঁর ভাই সরফরাজ কেরলের কাসারগোড়ে ব্যাগ কারখানায় কাজ করেন। লকডাউনে সেখানে আটকে ছিলেন। সোমবার রাত ১০টায় কাজনগর স্টেশন থেকে দিলদার, তাঁর স্ত্রী রেশমা, তাঁদের তিন সন্তান, সরফরাজ এবং দুই ভাইয়ের সহকর্মীরা ট্রেনে চাপেন। সরফরাজ বলেন, ‘‘প্রচণ্ড গরম ছিল। বৌদির কোলে ছিল রাবিয়া। রাত ২টো নাগাদ দেখা যায়, ও নড়াচড়া করছে না।’’ তাঁর দাবি, অনেক চেষ্টাতেও রাবিয়ার সাড় না ফেরায় ফোনে রেলের ‘হেল্পলাইন’-এ যোগাযোগ করেন। কিন্তু সাহায্য মেলেনি।

আরও পড়ুন: আমি কিন্তু বলিনি: করোনা-এক্সপ্রেস বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রী

শ্রমিক পরিবারটির দাবি, শিশুটি যখন অসুস্থ হয়েছিল, তখন ট্রেন ছিল ওড়িশার ব্রহ্মপুরের কাছে। তার পরে ভুবনেশ্বর, ভদ্রক-সহ বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু কোথাও সাহায্য মেলেনি। প্ল্যাটফর্মে নেমে পুলিশকে সব জানানোর পরে উল্টে তাঁদেরই ‘ধমকে’ ট্রেনে তুলে দেওয়া হয়। খড়্গপুর রেল পুলিশের ডেপুটি সুপার শেখর রায় বলেন, “ট্রেন যখন বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়েছিল, তখন রেলের পক্ষ থেকে ডাক্তার শিশুটিকে দেখতে যেতে পারতেন।’’ আবার দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার আদিত্য চৌধুরী বলেন, “খবর পেয়েও ডাক্তার দেখতে যাবেন না, এমন হয় না। হেল্পলাইন নম্বরে ওই শিশুর পরিবার যোগাযোগ করার যে দাবি করছে, তা দেখা হচ্ছে।”

আরও পড়ুন: সুরক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে খুলছে দক্ষিণেশ্বর মন্দির, বদল বহু নিয়মে

খড়্গপুরে নামার পরে রেলের ডাক্তার পরীক্ষা করে জানান, রাবিয়া মৃত। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য খড়্গপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানিয়েছেন, ওই পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারকে জেলায় ফেরাতে খড়্গপুরে গাড়ি পাঠানো হয়েছে। সরফরাজ বলেন, ‘‘রাবিয়া ফিরে আসবে না। কিন্তু আমি প্রধানমন্ত্রী ও রেলমন্ত্রীকে চিঠি লিখব। এই অবস্থায় যেন কাউকে পড়তে না হয়!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kharagpur Death Child Sramik Special Train
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy