Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Caste Certificate

মাত্র দেড় মাসে ১১ লক্ষ জাতি শংসাপত্র রাজ্যে

পর্যবেক্ষকদের মতে, ভোট-বছরে সরকারের এই পদক্ষেপ এবং পরিসংখ্যান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:০৯
Share: Save:

অতীতের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার সংখ্যা হার মানল সরকারের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানের কাছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত ১০ বছরের মধ্যে যেখানে প্রতি বছর ৬ থেকে ১২ লক্ষের মধ্যে জাতি শংসাপত্র দেওয়ার সংখ্যা ঘোরাফেরা করত, সেখানে গত ১ ডিসেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত এই সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে সাড়ে ১১ লক্ষের কাছাকাছি। আগামী কয়েকদিনে এই সংখ্যা আরও প্রায় তিন লক্ষ বাড়বে বলে প্রশাসনের কর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন।

পর্যবেক্ষকদের মতে, ভোট-বছরে সরকারের এই পদক্ষেপ এবং পরিসংখ্যান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি, অতীতের তুলনায় এ বার জাতি শংসাপত্র দেওয়ার পদ্ধতি তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আরও সরল হওয়ার কারণে অনেক বেশি মানুষকে সরকার তফসিলি জাতি, জনজাতি বা অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির শংসাপত্র দিতে পেরেছে। এ পর্যন্ত যে সাড়ে ১১ লক্ষ (প্রায়) মানুষের কাছে জাতি শংসাপত্র পৌঁছে দেওয়া গিয়েছে, তার মধ্যে ৮ লক্ষ মানুষকে তফসিলি জাতি, প্রায় ১ লক্ষ ৩৪ হাজার মানুষকে তফসিলি জনজাতি এবং ২ লক্ষের কিছু বেশি সংখ্যক মানুষকে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির শংসাপত্র দিয়েছে রাজ্য সরকার।

প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “এখনও প্রশাসনের কাছে আরও প্রায় তিন লক্ষ মানুষের আবেদন সংক্রান্ত নথি রয়েছে। সেগুলি দেওয়া হয়ে গেলে কিছুদিনের মধ্যেই সংখ্যা ১৪ লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে। তখন বলা যাবে, ৯৫% মানুষের কাছে জাতি শংসাপত্র পৌঁছে দেওয়া গিয়েছে।” সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, ২০১১ সালের ১ জুলাই থেকে এখনও পর্যন্ত তফসিলি জাতির শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে প্রায় ৪২ লক্ষ ২৬ হাজার মানুষকে। তফসিলি জনজাতির শংসাপত্রের সংখ্যা প্রায় ৮ লক্ষ ৬০ হাজার। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে প্রায় ৩৫ লক্ষ মানুষকে।

গত ১০ বছরের মধ্যে এ বছরই শংসাপত্র দেওয়ার সংখ্যা এতটা কেন বাড়ল?

প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, জাতি শংসাপত্র দিতে প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহল থেকে অফিসারদের উপর বিপুল চাপ রয়েছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, পরিবারের একজনের নথি থাকলেই পৃথক ভাবে আর যাচাইয়ের দরকার নেই। আবেদনকারী প্রামাণ্য নথি দিতে না পারলেও সংশ্লিষ্টের পরিবারে অথবা সরকারি কাগজে তেমন কোনও তথ্য রয়েছে কি না, তা প্রশাসনকেই খুঁজে দেখতে হবে। ফলে একবারে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না আবেদনকারীকে। এক কর্তার বক্তব্য, “কারও আবেদন ত্রুটিপূর্ণ বা অসম্পূর্ণ থাকলে অফিসাররাই সেটা সংশোধনের জন্য আবেদনকারীকে সাহায্য করছেন। আগে এটা হতো না। ফলে ন্যূনতম ত্রুটিবিচ্যুতিতে আগে যে আবেদনপত্রগুলি বাদ হয়ে যেত, এখন তা হচ্ছে না। স্বাভাবিক ভাবেই সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এখন দৈনিক ৬০-৭০ হাজার শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে। সর্বাধিক ছিল এক দিনে প্রায় ৯৭ হাজার।”

এর ফাঁকে এমন অনেকেই আবেদন করছেন, যাঁরা জাতি শংসাপত্র পাওয়ার যোগ্যই নন। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত প্রায় ৮১ হাজার এমন আবেদনপত্র বাতিল করতে হয়েছে। কারণ, এর মধ্যে যেমন অন্য রাজ্যের মানুষের আবেদনপত্র রয়েছে, তেমনই তথাকথিত উচ্চবর্ণের মানুষদের অনেকেই শংসাপত্র চেয়েছেন। এক কর্তা বলেন, “শর্মা, পাণ্ডে, দুবে-এর মতো তথাকথিত উচ্চবর্ণ বা উচ্চবর্গের মানুষেরাও আবেদন করছেন। ফলে যাচাই ছাড়া কারও আবেদন গ্রাহ্য করা যাচ্ছে না। ভুল হাতে শংসাপত্র চলে গেলে বিপদ। কারণ, সেই শংসাপত্র বাতিল করার প্রক্রিয়া খুবই জটিল।”

অন্য বিষয়গুলি:

Caste Certificates Nabanna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy