বারুইপুর আদালতে কুণাল ঘোষ। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।
সারদা গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ডে তৃণমূল নেতারা লাভবান হয়েছেন বলে এত দিন মৌখিক ভাবে অভিযোগ করছিলেন ওই দলেরই সাংসদ কুণাল ঘোষ। এ বার তিনি সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে এই অভিযোগ করতে চলেছেন। বৃহস্পতিবার বারুইপুর মহকুমা আদালতের বাইরে এ কথা জানান সারদার আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় জেলবন্দি ওই তৃণমূল সাংসদ।
সারদা কাণ্ডে কারা লাভবান হয়েছে, তা জানিয়ে রাজ্য সরকারকে হলফনামা জমা দিতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এই ‘ষড়যন্ত্র’ প্রকাশ্যে আনতে কী তদন্ত হয়েছে, তা-ও জানতে চেয়েছিল তারা। পরে আদালতে হলফনামা জমা দিয়ে রাজ্য সরকার জানায়, এই ষড়যন্ত্রের জন্য প্রধানত দায়ী কুণালবাবুই। রাজ্যের অভিযোগ, কুণালবাবুর চাহিদা অনুযায়ী তাঁকে টাকা জোগাতেন সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। সুদীপ্ত কী ভাবে টাকা তুলছেন এবং কোথায় কোথায় কী ভাবে টাকা খাটাচ্ছেন, ওই সাংসদ সবই জানতেন। আর সারদার সংবাদমাধ্যমের ব্যবসায় টাকা খাটানোর বিষয়টি দেখতেন তিনি নিজেই। শুধু তা-ই নয়, কুণালবাবু নিজের প্রভাব খাটিয়ে মানুষজনকে সারদায় টাকা লগ্নি করতে উৎসাহ দিতেন বলেও জানায় সরকার।
এক কথায় রাজ্য সরকারের ওই হলফনামায় সুদীপ্ত-সহ সারদার বিভিন্ন কর্তার সঙ্গে সঙ্গে ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্র’-এর বড় রকম দায় চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে কুণালবাবুর উপরেও। ওই হলফনামা পেশের পরেই শীর্ষ আদালতে কুণালবাবুর আইনজীবী শাম্ব নন্দী অভিযোগ করেন, তাঁর মক্কেলকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে গোপন জবানবন্দি দিতে দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশের কাছে দেওয়া তাঁর বয়ানও চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তাই তাঁর মক্কেলের বক্তব্য শুনুক সর্বোচ্চ আদালত। এর পরেই আদালত কুণালবাবুকে তাঁর বক্তব্য পেশ করার জন্য আবেদন করার অনুমতি দেয়।
সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের পেশ করা হলফনামার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার বারুইপুর আদালতের বাইরে মুখ খোলেন কুণালবাবু। এ দিন সারদা কাণ্ডের একটি মামলার সূত্রে তাঁকে ওই আদালতে হাজির করানো হয়। আদালতের বাইরে তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার সারদা কাণ্ডের জন্য আমাকে দায়ী করে যে-অভিযোগ এনেছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। পুলিশ চক্রান্ত করে আমাকে আটকে রেখে এ-সব গল্প সাজাচ্ছে। সারদার সব ফায়দা পেয়েছে তৃণমূল।” এর আগে কুণালবাবু অভিযোগ করেছিলেন, গোপনে জবানবন্দি না-দিলে তাঁকে আর কোনও মামলায় ফাঁসানো হবে না বলে পুলিশ আশ্বাস দিয়েছিল। এ দিন তিনি বলেন, “দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সব কিছু জানেন। নিজেদের আড়াল করতেই এখন আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আদালতে আমি হলফনামা দিয়ে সব জানাব।”
কুণালবাবুর এ দিনের বক্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেন, “মামলাটি বিচারাধীন। তাই এই বিষয়ে এখন কোনও মন্তব্য করব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy