আবার হাতির হানা জলপাইগুড়ির চা বাগানে। জঙ্গল থেকে বেরিয়ে হাতিটি ঢুকে পড়েছিল চা-বাগানে। হাতি তাড়াতে আনা হল মাটি কাটার যন্ত্র। দাঁতালটিও রেগে গিয়ে তেড়ে গেল যন্ত্রটির দিকে। কিন্তু লোহার গাড়ির বাড়ি খেয়ে হাতিটি বুঝতে পারে, প্রতিপক্ষও শক্তপোক্ত। লড়াই করে বিশেষ লাভ হবে না। লোহার আঘাতে জখমও হয় হাতিটি। পরক্ষণেই সে অন্য দিকে ছুট লাগায়। স্থানীয়েরা হাতিটির হার মেনে পালিয়ে যাওয়ার আনন্দে ফেটে পড়েন। হাতিটির পিছনে চিৎকার করতে করতে দৌড়েও যান তাঁরাও। সেই ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল ভিডিয়োকে কেন্দ্র করে নিন্দার ঝড় উঠেছে সমাজমাধ্যমে।
আরও পড়ুন:
ঘটনাটি শনিবারের। বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গল থেকে বেরিয়ে জলপাইগুড়ির মালবাজারের ডামডিম চা বাগানে ঢুকে পড়েছিল একটি হাতি। অভিযোগ, সেখানে হাতিটিকে নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করেন বাগানকর্মীরা। তাঁদের তাড়া খেয়ে হাতিটি চা-বাগান লাগোয়া একটি গ্রামে ঢুকে পড়ে। সেখানেই মাটি কাটার যন্ত্র এনে হাতি তাড়ানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে। যন্ত্র-গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে জখম হওয়ার পর স্থানীয় একটি নজরমিনারেও ধাক্কা মারে হাতিটি। তাতেও আঘাত পায় সে। ওই সময়ে নজরমিনারে বেশ কয়েক জন উপস্থিত ছিলেন। প্রাণের ভয়ে তাঁরা নীচে ঝাঁপ দেন। তার ফলে কয়েক জন জখমও হন।
আরও পড়ুন:
বন দফতর সূত্রে খবর, গ্রামে একটি হাতিকে উত্ত্যক্ত করার খবর পেয়েছিলেন তাঁরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলেও গিয়েছিলেন। কিন্তু ভিড় এতটাই বেশি ছিল যে, তাঁদের পক্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। বনকর্মীদের অনুমান, অন্য একটি হাতির সঙ্গে লড়াইয়ের পর জঙ্গল থেকে বেরিয়ে চা-বাগানে ঢুকে পড়েছিল পুরুষ হাতিটি। সেখানে হাতিটি ইট, পাটকেল ছুড়ে মারা হয়। টানাটানি করা হয় হাতির লেজ ধরে। বন বিভাগ ও পুলিশ ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে তাদেরও আহত হতে হয়। মাটি কাটার যন্ত্র এবং নজরমিনারে সংঘর্ষের ফলে মাথায় চোট পেয়েছে হাতিটি। বর্তমানে জখম হাতিটিকে নদী পার করিয়ে জঙ্গলে ফেরানো সম্ভব হয়েছে। মাটি কাটার ওই যন্ত্র-গাড়ির চালক এবং মালিকের খোঁজ চলছে।
ভাইরাল সেই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, চা- বাগানের মধ্যে একটি হাতি ঘুরে বেড়াচ্ছে। হাতিটির সামনে রাখা রয়েছে একটি মাটি কাটার যন্ত্র। হাতিটি রেগে গিয়ে মাটি কাটার সেই যন্ত্রে মাথা দিয়ে সজোরে ধাক্কা মারে। স্থানীয়েরা দূরে দাঁড়িয়ে সেই লড়াই দেখছিলেন এবং নানা রকম আওয়াজ বার করে হাতিটিকে উত্ত্যক্ত করছিলেন। তাঁদের মধ্যেই এক জন ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দি করেন। মাটি কাটার যন্ত্রের আঘাতে আহত হয়ে হাতিটি জঙ্গলের দিকে দৌড়াতে শুরু করে। স্থানীয়েরাও চিৎকার করতে করতে হাতিটির পিছনে ছুটে যায়। সেই ভিডিয়োই সমাজমাধ্যমে প্রকাশ্যে এসেছে।
আরও পড়ুন:
‘কনসার্নড সিটিজ়েন’ নামের এক্স হ্যান্ডল থেকে ভিডিয়োটি পোস্ট করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ২৫ হাজার বার দেখা হয়েছে সেই ভিডিয়ো। নেটাগরিকদের একাংশ স্থানীয়দের হাতির প্রতি করা ব্যবহারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। এক জন নেটাগরিক কমেন্ট করেছেন, ‘‘মানুষ খুব খারাপ।’’ হাতিটি সুরক্ষিত আছে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নেটাগরিকদের একাংশ।