ঝমঝমিয়ে বৃষ্টির পর ঘন সবুজ জঙ্গলের মাঝে কূল ছাপানো নদী দেখতে যেতে পারেন বড়দি পাহাড়ে। ছবি: সংগৃহীত।
শীতকাল উপযুক্ত সময় বাঁকুড়ার বড়দি পাহাড়ে ঘোরার। তবে যদি ঘন সবুজ জঙ্গলের মধ্যে নদীর দু’কূল ছাপানো জল আর বাদল মেঘের ঘনঘটা দেখতে হয়, তবে বর্ষা ছাড়া গতি নেই। ঝমঝমিয়ে কয়েকটা দিন বৃষ্টি হওয়ার পরে বরং বেরিয়ে পড়ুন সেই সবুজের সন্ধানে।
কলকাতা থেকে গাড়িতে ঘণ্টা পাঁচেকের পথ। সেখানে পৌঁছলেই ঘন সবুজ হয়ে থাকা বড়দি পাহাড় স্বাগত জানাবে আপনাকে। তাতে সঙ্গত করবে পাখিরা। মনোরঞ্জনের জন্য প্রস্তুত থাকবে প্রজাপতিও। ব্যস্ত জীবন থেকে দিন দু’য়েকের জন্য প্রকৃতির সান্নিধ্য চাইলে চলে আসতে পারেন নির্জন এই পর্যটন কেন্দ্রে।
বড়দি পাহাড়। নামটি ভারি সুন্দর। তবে, পাহাড় না বলে টিলা বলাই ভাল। কিন্তু কেন এমন নাম? কেউ বলেন, স্থানীয় বড়দি গ্রামের নামেই এর নাম। তবে অনেকে বলেন অন্য কথা। অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ইংরেজ শাসকদের অত্যাচার মাত্রাতিরিক্ত হয়ে উঠলে বাঁকুড়া অঞ্চলের জমিদার ও তাঁদের লেঠেলরা বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন। রায়পুরের জমিদার দুর্জন সিংহ এই বিদ্রোহের মাথা হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু এক সময় ইংরেজ বাহিনীর কাছে তাঁকে হার মানতে হয়। শোনা যায়, ইংরেজদের কাছ থেকে লুকোতে ওই পাহাড়ে কয়েকটি দিন তাঁর বড়দির আশ্রয়ে ছিলেন তিনি। তা থেকেই এই জায়গার নাম বড়দি পাহাড়।
তবে এই পাহাড়ে এসে যদি ঘোরার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা খোঁজেন, তা হলে হতাশ হতে হবে। আসলে জায়গাটি প্রকৃতির সঙ্গে নিভৃতে কাটানোর জন্য। চারপাশে শাল-মহুয়ার বন। খুঁজলে পাবেন পারুল-সহ অন্যান্য বুনো ফুলও। তারই ফাঁকফোকরে বাসা বাঁধা পাখিরা ডেকে চলেছে সারা দিন।
আর আছে কংসাবতী নদী। গরম-শীত-বসন্তে তাতে হাঁটু সমান জল। তবে বর্ষায় মুষলধারে কয়েকটা দিন বৃষ্টি হলেই বদলে যায় নদীর রূপ। বালুতটের উপর দিয়ে তখন নদীর দু’কূল ছাপিয়ে জল বয়ে যায়। বাদল মেঘের সঙ্গে অরণ্যের ঘন সবুজ রঙের সেই বৈপরীত্য দেখার মতো। পাহাড়ি জঙ্গলের পথ বেয়ে হেঁটে পৌঁছনো যায় একটি ভিউ পয়েন্টে। সেখান থেকেই গাছপালার ফাঁক দিয়ে দেখা যায় নদীর বাঁক। বিকেলে ঘুরে আসতে পারেন এই পথে।
আর আছে শিবের থান। সেখানে যেতেও হাঁটাপথই ভরসা। জঙ্গলের চড়াই পথে চলে গিয়েছে উপরে। সেখানেই নির্জনে একটি ছোট্ট শিব মন্দির। মন্দির যে সবসময় খোলা থাকে, তা নয়। তবে অরণ্যের এই পথের শোভাই এখানে আসার অন্যতম কারণ হতে পারে।
দিন দুয়েকে এই জায়গা ভাল করেই ঘুরে নেওয়া যায়। আর যদি কোথাও যেতে ইচ্ছে না করে, রিসর্টের বারান্দায় বসে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতেই উপভোগ করা যায় বর্ষার অরণ্য। আর তখনই যদি বৃষ্টি নামে, তা হলে তো আর কথাই নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy