পরেশনাথ জৈন মন্দির। অসাধারণ কারুকাজ মন্দিরের দেওয়াল জুড়ে। ছবি: সংগৃহীত।
কলকাতা বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ভিক্টোরিয়া, গড়ের মাঠ, চিড়িয়াখানা, জাদুঘর। এ শহর মানেই অলিগলি, লোভনীয় ‘স্ট্রিট ফুড’। কিন্তু এই তিলোত্তমার ব্যস্ত পথের ভিড় ঠেলে অলিগলিতে ঢুকলেই যে রয়েছে কত ইতিহাস, স্থাপত্য তার খোঁজ কে-ই বা রাখে!
ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে কলকাতা ভ্রমণের কথা উঠলেই ভিড় করে যত চেনা ছবি। প্রিন্সেপ ঘাট, তারামণ্ডল, গড়ের মাঠ। কিন্তু অতি চেনা কলকাতার বুকে আড়ালেই রয়ে যায় কত টুকরো ছবি, স্মৃতি। এমনই তিন জায়গা হল পরেশনাথ জৈন মন্দির, মার্বেল প্যালেস ও ইহুদিদের উপাসনালয় মাগেন ডেভিড সিনাগগ। এবার বরং ঘণ্টা দু’য়েক সময় হাতে নিয়ে এক এক করে ঘুরে আসুন এই জায়গাগুলো থেকে। দেখলে মনে হবে, সত্যি এটা কলকাতাই তো!
পরেশনাথ জৈন মন্দির
মানিকতলা থেকে এগিয়ে গৌরীবাড়ির কাছে বদ্রিদাস টেম্পল স্ট্রিটে রয়েছে শতাব্দীপ্রাচীন জৈন মন্দির। একসঙ্গে চারটি। মূল মন্দির শীতলনাথজির। তারই ডান পাশে চন্দ্রপ্রভুজির মন্দির। আরও দুই মন্দির রয়েছে তার কাছেই, দাদাওয়াড়ি ও মহাবীর স্বামী মন্দির। মূল মন্দিরে প্রবেশের মুখে বিশাল ফটক। ভিতরে ঢুকলেই সাজানো বাগান। এক ঝলকে মনে হবে, এ কী দেখছি! চারপাশে মার্বেলের অপরূপ কারুকাজ, ফুলের বাহার, ফোয়ারা। স্বচ্ছ জলাশয়ে খেলছে মাছেরা। রঙিন পাথর ও আয়নাখচিত শীতলনাথজির মন্দির মনে করিয়ে দেবে রাজস্থানের কোনও দুর্গের শিশমহলের কথা। ১৮৬৭ সালে বদ্রিদাস বাহাদুর মুকিম মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জৈন তীর্থঙ্কর পার্শ্বনাথের স্মরণে। চন্দ্রপ্রভুজি মন্দিরও বেশ প্রাচীন। দাদাজি মন্দির পুরোটাই সাদা মার্বেলের। তারই পাশে মহাবীর স্বামী মন্দিরের স্থাপত্যও কম প্রশংসনীয় নয়।
সময়: প্রতি দিন সকাল ৬টা থেকে ১১টা ও বিকেলে ৩টে থেকে ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে মন্দির।
মার্বেল প্যালেস
কলকাতার বুকে অসাধারণ স্থাপত্য নিয়ে ইতিহাসের সাক্ষ্য বয়ে চলেছে মার্বেল প্যালেস। জোড়াসাঁকোর কাছে মুক্তারাম বাবু স্ট্রিটে রয়েছে বিশাল এই রাজকীয় প্রাসাদ। চারধারে সবুজ মখমলের মতো ঘাসে ঢাকা বাগান। আর রয়েছে ছোট্ট একটি চিড়িয়াখানা। যেখানে রকমারি পাখি, হরিণের দেখা মিলবে।
১৮৩৫ সালে রাজা রাজেন্দ্র মল্লিক এই প্রাসাদটি তৈরি করেন। শিল্পনিদর্শন সংগ্রহের প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিল। প্রাসাদোপম এই বাড়ির নীচের তলায় রয়েছে সেই সংগ্রহ। ১০ ফুট উঁচু ফুলদানি থেকে বিশাল ঝাড়লণ্ঠন, মূর্তি। এই ভবনেরই দোতলায় রয়েছে দুষ্প্রাপ্য সমস্ত তৈলচিত্র। কলকাতার মার্বেল প্যালেসে যেতে হলে সঙ্গে একটি পরিচয়পত্র রাখবেন।
সময়: সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত খোলা থাকে। সোমবার বন্ধ।
মাগেন ডেভিড সিনাগগ
ক্যানিং স্ট্রিট ও ব্র্যাবোর্ন রোডের সংযোগ স্থলের অদূরেই রয়েছে ইহুদিদের উপাসনাগৃহ। নাম মাগেন ডেভিড সিনাগগ। এমন সুন্দর সিনাগগ সমগ্র প্রাচ্যেই দুর্লভ। ভিতরে ঢুকলে মনে হবে, শহরের কোলাহল এখানে পৌঁছয় না। বড় শান্তির এই স্থান। সিনাগগের স্থাপত্যশৈলীও দেখার মতো সুন্দর। জানলা ও ছাদে লাগানো রঙিন কাচের টুকরো দিয়ে সূর্যের রশ্মি ভিতরে এসে তৈরি করে মায়াময় পরিবেশ। বিরাট হলের মাঝে উঁচু জায়গাটি প্রার্থনার জন্য।
সময়: সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত খোলা থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy