চাঁদের মাটিতে পা রাখতে গেলে কোথায় যেতে হবে? ছবি: সংগৃহীত।
দূর আকাশে তার অবস্থান। রোম্যান্টিকতায় তার স্থান। তবে সেই চাঁদ থাকে ধরাছোঁয়ার ঊর্ধ্বে। পৃথিবীর উপগ্রহ রূপেই সে চিহ্নিত।
কিন্তু পৃথিবীর বুকে দাঁড়িয়েও চাঁদের মাটিতে পা রাখা যায়? এর উত্তর খুঁজতে গেলে পা়ড়ি দিতে হবে রাজস্থানে। আজমের জেলা থেকে জয়পুর যাওয়ার পথে রয়েছে একটি ছোট্ট শহর কিষাণগড়। ‘গোলাপি শহর’ বলে চিহ্নিত জয়পুর থেকে দূরত্ব ১০০কিলোমিটার।
এখানেই রয়েছে ‘চাঁদের মাটি’। রাজস্থানের এই স্থানই পরিচিত ‘মুন ল্যান্ড’ নামে।
কিন্তু কেন এই নাম, কী রয়েছে এখানে?
আসলে এই স্থান পরিচিত ভাগাড় হিসাবে। না না, এ ভাগাড়, সে ভাগাড় নয়। দৈনন্দিন বর্জ্য এখানে জমা হলেও কোনও দুর্গন্ধ নেই। না আছে পচা গন্ধ বা মৃতপ্রাণীর দেহাবশেষ। বরং গত কয়েক বছরে এই স্থান পর্যটকদের কাছে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
সব কিছু কি গুলিয়ে যাচ্ছে? আসলে এই স্থানে বছরের পর বছর জমা হচ্ছে মার্বেল পাথরের গুঁড়ো। রাজস্থান মার্বেল পাথরের জন্য বিখ্যাত। নির্মাণকাজের জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় মার্বেল যায় এ রাজ্য থেকে। কিষাণগড়ও এমন একটি শহর যেখানে ঘরে ঘরে লোকে মার্বেল পাথরের ব্যবসা করেন।
মার্বেল কোথাও পাঠাতে গেলে, তা কেটে পাঠাতে হয়। সমস্যা দেখা দেয় মার্বেল কাটার সময় বেরিয়ে আসা গুঁড়ো নিয়ে। এত বর্জ্য কোথায় ফেলা হবে, তা নিয়ে ভাবতে ভাবতেই বেছে নেওয়া হয় কিষাণগড়ের একটি বিস্তীর্ণ এলাকা। ২০০৩ সাল থেকে সেখানেই মার্বেলের গুঁড়ো ফেলা হচ্ছে। আর ঠিক সে কারণেই জায়গাটি ভাগাড় বলে পরিচিত।
তবে এই ভাগাড়ের সৌন্দর্য কিন্তু যে কোনও স্থানকে টেক্কা দিতে পারে। যে দিকে চোখ যায় শুধু সাদা ঢেউ খেলানো টিলা । তারই মধ্যে ছোট ছোট জলাশয়। এই জায়গায় এলে মনে হতেই পারে, এ যেন বিদেশের তুষারাবৃত কোনও পর্যটন ক্ষেত্র। আর ঠিক সে কারণেই লোকমুখে এই স্থানের পরিচিত বাড়ছে। কিষাণগড়ের ভাগাড়ই হয়ে উঠেছে রাজস্থানের ‘মুন ল্যান্ড।’
সমাজমাধ্যমে এই জায়গার ছবি ছড়িয়ে পড়ার পরেই এ নিয়ে উৎসাহ বৃদ্ধি পিয়েছে। সাদা প্রান্তরে অনেকে ফটোশুটের জন্যেও আসছেন। শুধু তাই নয়, ডিএসএলআর ক্যামেরা নিয়ে এলে, তার জন্যে টাকাও দিতে হচ্ছে এখানে। সকাল ১০ টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঘুরে দেখার জন্য খোলা থাকে এই স্থান।
এই স্থান মার্বেলের গুঁড়ো ফেলার জন্য ব্যবহার হলেও, এখানে কোনও প্লাস্টিক, বোতল চোখে পড়বে না। চার পাশ শুধু দুধের মতো সাদা।
তবে এই এলাকায় ঘোরাঘুরি কতটা স্বাস্থ্যকর তা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে? মার্বেলের ধুলো বা মার্বেল ধোয়া জল কি আদৌ শরীরের পক্ষে ভাল? এ সব নিয়ে না ভেবে অবশ্য উৎসাহী লোকজন ‘চাঁদের মাটি’তে ঘোরাঘুরিতে ব্যস্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy