বার্গার, পিৎজ়া-সহ অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য (আলট্রা প্রসেসড ফুড) বা জাঙ্কফুডের বিক্রি উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে। ফুলেফেঁপে উঠছে সংস্থাগুলির ব্যবসা। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তো বাড়ছেই, সরকারের ঘরেও ঢুকছে না অতিরিক্ত কর। সেস-এর মাধ্যমে যে ধরনের রাজস্ব এসে থাকে ক্ষতিকর পণ্যের ক্ষেত্রে। এ বার এই শ্রেণির খাবারের উপরে কড়া নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ করা হল আর্থিক সমীক্ষায়। যেখানে বাড়তি জিএসটি বসানোর কথা তো বলা হয়েছেই, সেই সঙ্গে রয়েছে মোড়কের উপরে সতর্কবার্তা এবং ক্রেতাদের সচেতনতা বৃদ্ধির মতো পদক্ষেপ।
শুক্রবার লোকসভায় আর্থিক সমীক্ষা পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেখানে নরম পানীয়, প্যাকেটবন্দি ভাজা খাবার, চকলেট, নাগেটস, অতিরিক্ত চিনি-নুন মেশানো খাবারের ব্যাপারে সতর্কবাণী রয়েছে। জানানো হয়েছে, এই ধরনের খাবারে বিপুল পরিমাণে ফ্যাট-সহ বিভিন্ন অস্বাস্থ্যকর উপাদান থাকে। যা ছোট-বড় সবার ক্ষেত্রেই স্থূলতা, হৃদরোগ-সহ বিভিন্ন বিরূপ প্রভাব ফেলে। এমনকি, অনেক ক্ষেত্রে এই শ্রেণির খাদ্যপণ্যকে ‘স্বাস্থ্যকর’ বলে দাবি করে বিভ্রান্তিমূলক বিজ্ঞাপনও প্রচার করে বড় বড় ব্র্যান্ডগুলি। রিপোর্টে সুপারিশ, দেশের খাদ্য নিয়ন্ত্রক এফএসএসএআই-এর মাধ্যমে অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের উপরে কড়া নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কার্যকর করুক স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তার জন্য প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হোক ক্রেতাসুরক্ষা আইনে। যেখানে এফএসএসএআই অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের স্পষ্ট সংজ্ঞা তৈরি করবে। মোড়কের উপরে অত্যাবশ্যক সাবধানবার্তা চালু করে ধারাবাহিক কড়া নজরদারিরও ব্যবস্থা করবে। একই সঙ্গে স্কুল-কলেজে ও ক্রেতাদের মধ্যে সচেনতার প্রচারের পাশাপাশি অতিরিক্ত কর বসানোর সুপারিশও করা হয়েছে। বিশেষত যে সমস্ত সংস্থা এই ধরনের খাবারের বিজ্ঞাপন দেয় তাদের উপরে।
সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, সরকারি খরচ বাড়ানোর পাশাপাশি, আয়কর কমানোর চাপ রয়েছে মোদী সরকারের উপরে। তবে তা করতে গেলে রাজস্ব আদায়ের বিকল্প পথও তৈরি করতে হবে কেন্দ্রকে। ‘স্বাস্থ্য-কর’ এমন একটি সূত্র হতেই পারে। যা ইতিমধ্যেই চালু রয়েছে একাধিক দেশে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)