বছর দুই হল অভিনয় জগতে পা রেখেছেন ‘দ্য আর্চিস’ ছবির মাধ্যমে। এরই মধ্যে অনুরাগীর সংখ্যা বেড়েছে শাহরুখ-কন্যা সুহানা খানের। ইনস্টাগ্রামে তাঁকে অনুসরণ করছেন ৬০ লক্ষ মানুষ। মাঝেমধ্যেই ইনস্টাগ্রামের পাতায় জীবনের বিভিন্ন মুহূর্তও ভাগ করে নেন অভিনেত্রী। কখনও ফোটোশুটের ছবি, আবার কখনও একান্ত যাপন ধরা দেয় সেখানেই।
অনুরাগীদের জন্য ইন্দোনেশিয়ার বালির ছবি তুলে ধরলেন সুহানা খান। পড়ন্ত বিকেলে লালরঙা পোশাকে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিনি। বাকি ছবির কোনওটিতে উচ্ছ্বল ঝর্না, কোথাও আবার ক্যামেরাবন্দি হয়েছে প্রকৃতি। বালি কি আপনারও স্বপ্নের জায়গা? পরিকল্পনা করছেন সেখানে যাওয়ার?
ভারত থেকে যে সমস্ত দেশে বেড়াতে যাওয়ার চল বেশি, তার মধ্যে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার বালিও। সে দেশে প্রথম বার বেড়াতে গেলে কী ভাবে ঘুরবেন? কোন জায়গা দেখবেন?

বালির তানহা লট মন্দির। সমুদ্রের উপরে ক্ষয়ে যাওয়া পাথরে রয়েছে পুরনো মন্দিরটি। ছবি: সংগৃহীত।
সমুদ্র, পাহাড়, অপূর্ব সুন্দর মন্দির, স্থাপত্য— সব কিছুই রয়েছে সেখানে। এখানকার নৈশজীবন, ডে ক্লাব সবই ঘুরে দেখা যায়। রয়েছে উলুয়াতু মন্দির, তেগালিয়াং রাইস টেরেস, নুসা পেনদা-সহ অসংখ্য জায়গা। কী ভাবে ঘুরবেন বা কোন জায়গা দেখবেন, তা নির্ভর করবে কেউ কত দিনের জন্য আসছেন তার উপর।
উলুয়াতু মন্দির: সমুদ্রের পারে পাহাড়ের উপর মন্দির। তবে মন্দিরে প্রবেশের আগেই চোখ আটকে যাবে সংলগ্ন ভিউ পয়েন্টে দাঁড়ালে। খাড়া পাহাড়ের গায়ে এসে ধাক্কা মারছে সমুদ্রের ঢেউ। পড়ন্ত বিকেলে সেই রূপ হয়ে ওঠে আরও চিত্তাকর্ষক। সেই রূপ থেকে চোখ সরলে বাঁধানো পথ ধরে পৌঁছে যান মন্দিরে। প্রশস্ত চত্বরে রয়েছে সবুজের সান্নিধ্য। এখানেই উন্মুক্ত এরিনায় স্থানীয় নৃত্যশৈলী প্রদর্শনের ব্যবস্থা। কাছাকাছি রয়েছে সার্ফিং–এর মতো জলক্রীড়ার সুযোগ। চাইলে সে আনন্দও নিতে পারেন।
কুটা সৈকত: বালির একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় সমুদ্রসৈকত হল কুটা বিচ। সাদা বালির পরিচ্ছন্ন তটে দিনভর নানা ভাবে কাটানো যায়। রৌদ্রস্নান করা যায়, আবার রয়েছে রোমঞ্চকর জলক্রীড়ার সুযোগ। কুটা সৈকতে সূর্যাস্ত দেখতে আসেন বহু পর্যটক। বালির দক্ষিণ প্রান্তের এই সৈকত থেকে স্কুবা ডাইভিং, সার্ফিং, বিচ সসার— অনেক ধরনের ক্রীড়া উপভোগ করা যায়।

বালি গেলে কোথায় কোথায় ঘুরবেন? ছবি: সংগৃহীত।
উবুদ: ধাপে ধাপে চাষ হয়েছে ধান। চারপাশ ঘন সবুজ। রয়েছে প্রাচীন মন্দির। ঝাঁ-চকচকে শহর নয়, তবে সমস্ত পরিষেবাই রয়েছে উবুদে। বালির একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র উবুদ। বিশেষত যাঁরা নির্জনতা পছন্দ করেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুঁজতে চান তাঁদের জন্যই এই জায়গা। বালির নুগারাই বিমানবন্দর থেকে উবুদ ঘণ্টা দুয়েকের পথ। শহর জুড়ে ছড়িয়ে দারুণ সমস্ত ক্যাফে এবং রিসর্ট। সর্বত্রই সৌন্দর্যের ছাপ স্পষ্ট। হেঁটে, স্কুটার ভাড়া করে, গাড়িতে এই শহরের আনাচকানাচ উপভোগ করতে পারেন। এখানে রয়েছে এলিফ্যান্ট কেভ। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ সেটির দেখভাল করে। জঙ্গলের রূপ উপভোগে বেরিয়ে পড়তে পারেন ক্যামফুয়ান রিজ়। এখানে সূর্যাস্ত দেখার জন্য পর্যটকেরা যান মাউন্ট বাটুর। উবুদ প্যালেসে রয়েছে স্থানীয় নৃত্য দেখার বন্দোবস্ত। এ ছাড়াও দেখে নেওয়া যায় হস্তশিল্পের মিউজ়িয়াম।
নুসা পেনিদা: নীল সাগরের ধারে খাড়া পাহাড়। সমুদ্রের জল তাতে ধাক্কা খেয়ে ফেনিল হয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে। ক্যালেন্ডারের পাতায় যে সমস্ত ছবি দেখে সকলে মুগ্ধ হন, ঠিক তেমনই রূপ নুসা পেনিদার। বালির এই দ্বীপটির জনপ্রিয়তা এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য। ক্রিস্টাল বে বিচ, কেলিংকিং বিচে ঘুরে নিতে পারেন পর্যটকেরা। আর রয়েছে ব্রোকেন বিচ। বইয়ে পড়া সমুদ্রের ক্ষয়কাজের বাস্তব ছবি দেখা যায় এখানে। পাহাড়ের বেশ কিছু অংশ সমুদ্রের জলে ক্ষয়ে গিয়ে অদ্ভুত সুন্দর ভূমিরূপের সৃষ্টি করেছে। তৈরি হয়েছে প্রাকৃতিক তোরণ। স্কুটার ভাড়া করে ঘুরে নেওয়া যায় দ্বীপের আনাচকানাচ। সমুদ্রের পাশে বাঁধানো রাস্তা। ছোট-বড় ক্যাফে, গাছে ঘেরা রিসর্ট। সব মিলিয়েই এ দ্বীপ অপরূপা।
বালির সানুর ফেরিঘাট থেকে নুসা পেনিদা জলপথে আধ ঘণ্টার যাত্রা। স্থানীয় ফেরি রয়েছে। সারা দিন থেকেও এই দ্বীপ ঘুরে নেওয়া যায়। চাইলে রাত্রিবাসও করতে পারেন সেখানে।
তানহা লট: সমুদ্রের বুকে পাহাড়। সেই পাহাড়ই অনবরত ঢেউয়ে ক্ষয়ে গিয়েছে। তার উপরেই তানহা লটের মন্দির। বালির এটিও অত্যন্ত জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। শুধু মন্দির নয়, উন্মুক্ত প্রান্তর থেকে সমুদ্রের সৌন্দর্যও এখান থেকে উপভোগ্য।