বর্ষশেষের রাত এবং বর্ষবরণের একটি দিন যদি এমন জমিদার বাড়িতে কাটানো যায়, কেমন হয়? ছবি- সংগৃহীত
ইতিহাস পড়তে একদম ভাল লাগত না, তাই মা-বাবার হাত ধরে ছোট থেকে প্রত্যেক বছর বড়দিনের ছুটিতে মুর্শিদাবাদ ঘুরতে যাওয়া যেন দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ঘুরেফিরে যদি ইতিহাসের প্রতি একটু ভালবাসা জন্মায়, সেই আশায় বুক বেঁধেছিলেন তাঁরা। ইতিহাসের পাঠ মাধ্যমিকে চুকিয়ে দিলেও বড় হয়ে ওঠা ইস্তক আর মুর্শিদাবাদের দিকে ফিরেও তাকাতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে কাছে পিঠে ঘুরতে গেলে বহরমপুরের নাম তো আসবেই। খুঁজতে খুঁজতে চোখ গেল মুর্শিদাবাদ জেলার সদর শহর বহরমপুর থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে আজিমগঞ্জের শহরের দিকে। সেখানেই রয়েছে ‘বড়ি কোঠি’ বাংলো।
ভাগীরথী নদীর তীরে অবস্থিত আজিমগঞ্জ শহরটিকে দেখলেই মনে হয় যেন টাইম মেশিনে চড়ে ফিরে যাওয়া যায় ৩০০ বছর পুরনো নবাব-বাদশাদের সাম্রাজ্যে। এই শহরের প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে রয়েছে সেই ইতিহাস। মুগল এবং বাংলা সংস্কৃতির মেলবন্ধনে আনুমানিক ১৭৫৫ সালে নাটরের রানি ভবানী আজিমগঞ্জেই তৈরি করেছিলেন ভবানীশ্বর মন্দির। এই মন্দিরের বৈশিষ্ট্য হল এর স্থাপত্যশৈলি। আটটি কোণযুক্ত, আটটি বারান্দা বিশিষ্ট এই মন্দিরটির উপরের চূড়াটি মসজিদের গম্বুজের মতো। পাশেই রয়েছেন রাজরাজেশ্বরী। ৩০০ বছরের পুরনো অষ্টধাতুর এই দুর্গামূর্তি দেখলে চোখ ফেরাতেই পারবেন না।
ভাগীরথি নদীর গা ঘেঁষেই তৈরি হয়েছে ২৫০ বছরের পুরনো এই বাংলোটি। সিংহ দুয়ার, মরচে ধরা জানলার গরাদ, কড়িকাঠ, খিড়কি, রঙিন কাচের ঝাড়বাতি, নেপথ্যে ঠুমরির গায়কি আপনাকে একেবারে সপ্তদশ শতকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য।
কী কী দেখবেন?
বড়ি কোঠি বাংলো থেকে গঙ্গার উপর সূর্যাস্ত দেখতে দেখতেই সময় কেটে যায়। এ ছাড়াও রয়েছে নৌকা বিহারের ব্যবস্থা। এই বাংলোর নিজস্ব ঘাটও রয়েছে। আজিমগঞ্জে রয়েছে বেশ কিছু জৈন মন্দির। এ ছাড়াও একটু দূরেই আছে জিয়াগঞ্জের চার বাংলা মন্দির।
সকালে গিয়ে, সারা দিন ঘুরে ফিরে আসতে পারেন। এক দিনের জন্য ঘোরা এবং খাওয়ার খরচ পড়বে জন প্রতি ৬৫০০ টাকা। সময় বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। তবে ভিন্ন অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে চাইলে একটা রাত কাটাতেই হবে। এই বাংলোয় বিভিন্ন ধরনের এবং মূল্যের ঘর রয়েছে। খাওয়া, থাকা এবং ঘোরা মিলিয়ে দু'জনের ন্যূনতম খরচ পড়বে ১৫,৭৩০ টাকা।
বুকিং নম্বর ৯০৫১২০০৮০০
একটা রাত কাটিয়ে যদি ইচ্ছা থাকে, তা হলে সকাল সকাল চলে আসতে পারেন মুর্শিদাবাদ। বড়ি কোঠি থেকে নিজস্ব গাড়িতে ঘোরার ব্যবস্থাও আছে। যেতে সময় লাগে মাত্র ৪০ মিনিট। এখানে এলে অবশ্যই ঘুরে দেখবেন বাংলার শেষ নবাবের স্মৃতি বিজড়িত হাজারদুয়ারি। এ ছাড়াও রয়েছে ইমামবড়া, মতিঝিল, জগৎ শেঠের বাড়ি, কাঠগোলা বাগানবাড়ি, কাটরা মসজিদ এবং সিরাজ-উদ-দৌল্লার সমাধি।
কী ভাবে যাবেন?
হাওড়া থেকে ট্রেনে জিয়াগঞ্জ বা আজিমগঞ্জ স্টেশন পৌঁছতে সময় লাগে ঘণ্টা পাঁচেক। নিজের গাড়ি থাকলে তো কথাই নেই। কলকাতা থেকে বিদ্যাসাগর সেতু পেরিয়ে ডানকুনি, কালনা পেরিয়ে নবদ্বীপ, পলাশির প্রান্তর। সেখান থেকে জিয়াগঞ্জের সদরঘাটে ভেসেল পেরিয়ে আজিমগঞ্জ পৌঁছনো যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy