বেকাল দুর্গ থেকে নীল আরব সাগর।
পর্যটকদের কাছে দক্ষিণ কেরল যতটা জনপ্রিয়, উত্তর কেরল ততটা নয়। কিন্তু রাজ্যের এই প্রান্তও পর্যটন বৈচিত্রে ভরপুর। শুধুমাত্র উত্তর কেরল ভ্রমণের জন্যও কলকাতা থেকে সরাসরি ট্রেন রয়েছে। এক বার দেখে নেওয়া যাক এখানকার কিছু দর্শনীয় স্থান।
কালিকট (কোঝিকোড়)
ভাস্কো-ডা-গামার কালিকট বেশি পরিচিত কোঝিকোড় নামেই। তবে স্থানীয় উচ্চারণে এই শহর কোড়িকোড়। প্রাচীন শহর, এখনও সে ভাবে অতি আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। রাস্তাঘাট সে রকম চওড়া নয়। বাড়ি, ঘরদোরে কেরলের প্রাচীন ঐতিহ্যের পরশ।
কী ভাবে যাবেন
সাঁতরাগাছি থেকে মেঙ্গালুরুগামী বিবেক এক্সপ্রেস প্রতি বৃহস্পতিবার বিকেল ৩:৫০-এ ছেড়ে কোঝিকোড় পৌঁছয় প্রতি শনিবার ভোর ৪:৫৫-এ। বেঙ্গালুরু হয়েও কোঝিকোড় পৌঁছন যায়। হাওড়া-যশবন্তপুর দুরন্ত এক্সপ্রেস সোম আর বৃহস্পতিবার বাদে সপ্তাহে পাঁচ দিন সকাল ১১টায় হাওড়া থেকে ছেড়ে যশবন্তপুর পৌঁছয় পরের দিন বিকেল ৪টেয়। অথবা হাওড়া-যশবন্তপুর এক্সপ্রেস প্রতি দিন রাত ৮:৩৫-এ ছেড়ে যশবন্তপুর পৌঁছয় তৃতীয় দিন সকাল ৭:১৫-এ। যশবন্তপুর থেকে রোজ রাত ৮টায় ছাড়ে কান্নুর এক্সপ্রেস। এই ট্রেনটি কোঝিকোড় পৌঁছয় পরের দিন সকাল ৭:২৫-এ। স্টেশন থেকে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়ার জন্য গাড়ি পাওয়া যাবে।
কোথায় থাকবেন
কোঝিকোড় শহরে কেরল পর্যটন উন্নয়ন নিগমের কোনও হোটেল নেই। কিন্তু বিমানবন্দরের কাছে রয়েছে পর্যটন নিগমের ‘ট্যামারিন্ড কোনডুত্তি’। সমুদ্র দূরে হলেও, পাহাড়ের ওপর অবস্থানের ফলে এখান থেকে দৃশ্য দারুণ। এসি ডিলাক্স দ্বিশয্যা ঘরের ভাড়া ১৯০৪ টাকা, এসি প্রিমিয়াম দ্বিশয্যা ঘরের ভাড়া ২৯৭৫ টাকা। অনলাইনে বুক করার জন্য লগ ইন করুন www.ktdc.com। কোঝিকোড় শহরে রয়েছে হরেক মানের অসংখ্য হোটেল।
কী দেখবেন
সৈকত: কোঝিকোড় শহরের নিঃশ্বাস নেওয়ার জায়গা। রেল স্টেশন থেকে দূরত্ব ৫ কিমি। এখানে ১০০ বছরের পুরনো দু’টি বিধ্বস্ত সেতুস্তম্ভ আছে। সৈকত থেকে সূর্যাস্ত দেখার মতো।
মানানচিরা স্কোয়ার: মানানচিরা দিঘি ও আনসারি পার্ক নিয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মানানচিরা স্কোয়ার। স্টেশন থেকে মাত্র এক কিমি পথ। সন্ধ্যায় বেড়ানোর পক্ষে ভালো। সাড়ে ৩টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা।
তালি মন্দির: দেড় হাজার বছরের পুরনো শিবমন্দির। এখনও জামোরিনদের বংশধরেরা দেখাশোনা করে। স্থাপত্য কেরল শৈলীর, দেখার মতো। স্টেশন থেকে এক কিমি। কিন্তু এখানে পোশাকবিধি আছে। মুন্ডু (ধুতিটাকে লুঙ্গির মতো করে পরা) ও শাড়ি ছাড়া ঢোকা যায় না।
আম্বুকুঠি পাহাড় থেকে সমতল
তিরুভাচিরা শ্রীকৃষ্ণ মন্দির: স্টেশন থেকে ৪ কিমি। ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে বেপোর সৈকতের পথে পড়বে এই মন্দির। প্রধান ফটকের মুখে বিশাল বটগাছ, বিশাল পুকুর, পুকুরে বিরাট বিরাট মাছ। সব মিলিয়ে দারুণ পরিবেশ। এখানে মুন্ডু পরতে হয় না, তবে জামা খুলতে হয়।
বেপোর সৈকত: তিরুভাচিরা মন্দিরের পরেই ডান দিকে পায়ানাক্কাল রোড দিয়ে আরও ৫ কিমি গেলে পড়বে বেপোর সৈকত। এখানকার সব থেকে আকর্ষণীয় ব্যাপার হল, সমুদ্রের মধ্য দিয়েই বাঁধানো রাস্তা। ডান দিকে আরব সাগরের ক্লান্তিহীন ঢেউ, শান্ত ব্যাকওয়াটার ও চেলিয়ার নদীকে বাঁ দিকে রেখে পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রাস্তাটা। চেলিয়ার নদীর ও-পারেই রয়েছে জাহাজ তৈরির কারখানা। কিলোমিটার খানেক হাঁটার পর রাস্তাটা শেষ। তার পর পুরোটাই সমুদ্র। এখান থেকে সূর্যাস্ত অপরূপ।
বাপোর সৈকতে বৈকালিক ভ্রমণ
কাপ্পাড় সৈকত: কোঝিকোড় থেকে ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে কাসারগড়ের দিকে ১৮ কিমি। ১৪৯৮ সালে এখানেই নেমেছিলেন ভাস্কো। স্মারক আছে। দেড় কিমি ব্যবধানে সুন্দর দু’টি সৈকত। পরিচ্ছন্ন।
মনে রাখবেন, কোঝিকোড়ে থাকলে খাওয়ার জন্য অন্তত এক বার ঢুঁ মারুন প্যারাগন রেস্তোরাঁয়। ১৯৩৯ সালে স্থাপিত এই রেস্তোরাঁ, ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার দুর্দান্ত মিশেলে দাঁড়িয়ে আছে ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং রেড ক্রস রোডের সংযোগস্থলে। খাওয়া যেমন দারুন, ঠিক তেমনই সস্তা। মন এবং পেট দু’টোই ভরবে।
ওয়েনাড়ের সুলতান বাথেরি
সুলতান বাথেরির আগের নাম ছিল হন্নারেডু বিথি, যার অর্থ বারোটা রাস্তা। ৯৩০ খ্রিস্টাব্দে বয়ালনাড় অঞ্চল (এখনকার ওয়েনাড়) দখল করে গঙ্গারা। এর পর কদম্ব, হয়সালা, বিজয়নগর, ওয়াডিয়ার প্রভৃতি সাম্রাজ্যের হাতবদল হয়ে হায়দার আলির দখলে আসে। অষ্টাদশ শতকে টিপু সুলতান এখানকার জৈন মন্দিরকে তাঁর বাহিনীর শিবির হিসেবে ব্যবহার করার ব্যবস্থা করেন। তখন শহরের নাম বদলে হয় ‘সুলতান’স ব্যাটারি’, এখন এটি প্রচলিত সুলতান বাথেরি হিসেবে।
কী দেখবেন
মুথাঙ্গা অভয়ারণ্য: শহর থেকে বেরিয়ে মায়শুরুর (মহীশূর) পথে দশ কিমি গেলে অভয়ারণ্যের প্রবেশদ্বার। লোয়ার ওয়েনাড় ওয়াইল্ডলাইফ স্যাঙ্কচুয়ারি হিসেবেও পরিচিত মুথাঙ্গা। কেরলের এই মুথাঙ্গা, কর্নাটকের বন্দিপুর আর তামিলনাড়ুর মুদুমালাই, তিনটে নিয়েই এখনকার নীলগিরি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ। হাতির জন্যই এই অঞ্চল বিখ্যাত। ঘণ্টা দেড়েকের জিপ সাফারি করানো হয়। সাফারি শুরু হয় মূল প্রবেশফটক থেকে। সেই সাফারিতে হাতি চোখে পড়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি।
জৈন মন্দির: ঐতিহাসিক চোদ্দো শতকের মন্দির। গ্রানাইট দিয়ে তৈরি এই মন্দিরে কেরলের ঐতিহ্য মেনে রয়েছে গর্ভগৃহ, অন্তরাল, মহামণ্ডপ, মুখ্যমণ্ডপ আর নমস্কারমণ্ডপ। গর্ভগৃহে কোনও মূর্তি নেই। মহামণ্ডপে রয়েছে জৈন প্রতিকৃতি। তিনি পদ্মাসনা, ধ্যানমুদ্রার ভঙ্গি তাঁর।
এড়াক্কাল গুহা: টিকিট কেটে পাহাড়ে ওঠা শুরু। প্রথম ৭০০ মিটার বাঁধানো রাস্তা দিয়ে, তার পর পাহাড়ের গা বেয়ে খাড়া উঠে যাওয়া। কিছুটা অংশ পাথরের ওপর দিয়ে সন্তর্পণে উঠে শেষ চড়াইটা সিঁড়িতে। কারও মাথা ঘোরার রোগ থাকলে তাঁর এখানে না আসাই বাঞ্ছনীয়। তবে এক বার ওপরে উঠে গেলে চার দিকের শোভায় মুগ্ধ হতেই হবে। প্রাগৈতিহাসিক যুগের মানুষের আঁকা গুহাচিত্রের জন্যই বিখ্যাত এই এড়াক্কাল। পাহাড়ের গায়ে খোদাই করা রয়েছে বিভিন্ন চিত্র।
এড়াক্কাল গুহায় যাওয়ার পথ
পুকোট লেক: সুলতান বাথেরি থেকে কোঝিকোড়ের দিকে ৩৮ কিমি। বিরাট হ্রদ। পশ্চিমঘাটের কোলে স্বচ্ছ জলের এই হ্রদের ধার দিয়ে পায়ে চলার পথ করা আছে। রয়েছে বোটিং-এর ব্যবস্থা।
লক্কিড়ি ভিউ পয়েন্ট: সুলতান বাথেরি থেকে ৪২ কিমি। পাহাড়ের ওপর থেকে দেখা যায় দূরের সমতলভূমি। জঙ্গলের মাঝেমাঝে উঁকি দেয় জাতীয় সড়ক। চেরাপুঞ্জি-মৌসিনরামের পর সব থেকে বেশি বৃষ্টি হয় এই লক্কিড়িতে। এক দিকে খাড়া পাহাড় আর অন্য দিক বাধাহীন। তাই সমুদ্র থেকে উঠে আসা সব জলীয় বাষ্প এখানে পুঞ্জীভূত হয়ে ব্যাপক বৃষ্টি নামায়।
লক্কিড়ি ভিউ পয়েন্ট
কী ভাবে যাবেন
হাওড়া থেকে কোঝিকোড় আসুন। কোঝিকোড় থেকে সুলতান বাথেরির দূরত্ব ৯৯ কিমি। স্টেশন থেকে গাড়ি ভাড়া করে চলে আসা যেতে পারে এখানে।
কোথায় থাকবেন
সুলতান বাথেরিতে থাকার জন্য সব থেকে ভাল ব্যবস্থা কেরল পর্যটনের ‘পেপার গ্রোভ’। এসি ডিলাক্স দ্বিশয্যা ঘর ২৩৭০ টাকা, এসি প্রিমিয়াম দ্বিশয্যা ঘরের ভাড়া ২৯৬৫ টাকা। নন-এসি ডিলাক্স ঘর ভাড়া ১৬৫৬ টাকা (প্রাতরাশ-সহ)। অনলাইনে বুক করার জন্য লগইন করুন www.ktdc.com। এ ছাড়া শহর জুড়ে হরেক দামের হরেক মানের বেসরকারি হোটেল রয়েছে।
আরও পড়ুন: কোলভা-সেরনাবাতিম-আগোন্ডা-পালোলেম
কান্নুর
কেরলের চতুর্থ বৃহত্তম শহর কান্নুর। মুম্বই এবং করাচির পর ব্রিটিশ ভারতের পশ্চিম উপকূলে তৃতীয় প্রাচীন শহর। কান্নুরের সৈকত ছাড়া এই শহরের মধ্যে বিশেষ কিছু দেখার নেই, কিন্তু আশপাশের কয়েকটি দ্রষ্টব্য স্থানের জন্য এখানে একটি রাত থাকতে পারেন।
মুড়াপ্পিলানগাড় সৈকত: কান্নুর রেলস্টেশন থেকে দক্ষিণ দিকে ১৬ কিমি। এই সৈকতের বৈশিষ্ট্য হল এখানে গাড়ি চলে। ভারতের দীর্ঘতম গাড়ি চলাচলের সৈকত। গাড়ি চলাচলের জন্য বিবিসি নির্বাচিত বিশ্বের ষষ্ঠ সৈকত।
থোটাড্ডা সৈকত: কান্নুর স্টেশন থেকে ৯ কিমি দক্ষিণে।
চালিয়ার নদীতে নৌকা বিহার
সেন্ট অ্যাঞ্জেলো ফোর্ট: কান্নুর স্টেশন থেকে ৩ কিমি। সমুদ্রের ধারে অবস্থিত এই পর্তুগিজ দুর্গটি। সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
অন্নপূর্ণেশ্বরী মন্দির, চেরুকুন্নু: কান্নুর স্টেশন থেকে ৩২ কিমি। কেরলের একমাত্র দুর্গামন্দির। আদতে নাকি শ্রীকৃষ্ণ মন্দির। প্রবাদ পরশুরাম প্রতিষ্ঠিত।
এড়িমালা ভিউ পয়েন্ট: অন্নপূর্ণেশ্বরী মন্দির থেকে ১০ কিমি। আছে সৈকত, নাভাল অ্যাকাডেমি। ৪১ ফুটের হনুমান মূর্তি, যা কেরলের উচ্চতম। সৈকতের পাশে ২৮৬ মিটার উঁচু পাহাড়।
কী ভাবে যাবেন
হাওড়া থেকে যে ভাবে কোঝিকোড় আসা যায় সে ভাবেই আসুন কান্নুর। সাঁতরাগাছি-মেঙ্গালুরু বিবেক এক্সপ্রেস কান্নুর পৌঁছয় প্রতি শনিবার ভোর ৬:৩৫-এ। যশবন্তপুর-কান্নুর এক্সপ্রেস পরের দিন সকাল ৯:২৫-এ। স্টেশন থেকে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়ার জন্য গাড়ি পাওয়া যাবে।
কোথায় থাকবেন
স্টেশন থেকে এক কিমি দূরে অবস্থিত কেরল পর্যটনের ট্যামারিন্ড কান্নুর। এসি দ্বিশয্যা ঘরের ভাড়া ১৬৬৬ টাকা, এসি সাধারণ দ্বিশয্যা ঘরের ভাড়া ১২৯৭ টাকা। অনলাইনে বুক করার জন্য লগইন করুন www.ktdc.com। এ ছাড়া হরেক দামের হরেক মানের বেসরকারি হোটেল রয়েছে।
বেকাল দুর্গ ও সৈকত
বলা যেতে পারে গোটা ভারতের এক অনন্য রত্ন এই দুর্গ। আরব সাগরের ঢেউ ধাক্কা মারে দুর্গের দেওয়ালে। দুর্গে ঢোকার মুখে শ্রীমুখ্যপ্রাণা মন্দির। সেটা পেরিয়েই টিকিট কাউন্টার।
১৬৫০ সালে শিবাপ্পা নায়ক আরব সাগরের ধারে তৈরি করেন এই দুর্গ। পর্তুগাল আর বাকি ইউরোপীয় দেশের সঙ্গে সামুদ্রিক বাণিজ্যে মুখ্য ভূমিকা পালন করত বেকাল। তার এই ‘স্ট্র্যাটেজিক লোকেশন’-এর জন্য অষ্টাদশ শতকে হায়দার আলি আর ব্রিটিশদের মধ্যে অনেক যুদ্ধের সাক্ষী থেকেছে এই দুর্গ। টিপু সুলতানের সময় এই বেকাল ছিল তুলুনাড়ু আর মালাবারের প্রশাসনিক রাজধানী। ১৭৯৯ সালে টিপুর হাত থেকে ব্রিটিশদের ক্ষমতায় চলে আসে বেকাল।
এই দুর্গের পাঁজরে পাঁজরে ইতিহাসের ছড়াছড়ি
বিশাল জায়গা নিয়ে তৈরি এই দুর্গ। রয়েছে ১২ মিটার উঁচু পাঁচিল। দুর্গের উত্তর দিক ঘেরা রয়েছে জলপূর্ণ পরিখায়। ১৯৯৭ থেকে ২০০১, এই চার বছর ধরে খননকাজ হয়েছে এখানে। মন্দির, আবাসিক স্থান, দরবার হল, টিপুর সময়ের টাঁকশাল এবং আরও অনেক কিছুই খননের পর পাওয়া যায়।
দুর্গের দেওয়ালে দরজার মধ্য দিয়ে ঢালু পথে পৌঁছে যাওয়া যায় সৈকতে। এ ছাড়া হাতে সময় থাকলে দুর্গ দেখে, সেখান থেকে বেরিয়ে এসে গ্রামের পায়ে চলা পথ ধরে পৌঁছনো যায় সৈকতে। পথ একটু ঘোরালো- প্যাঁচালো। স্থানীয় মানুষজনকে জিজ্ঞেস করে নিলে ভাল।
আরও পড়ুন: কার্গিল-পানিখার-রংদুম-পদম-জাংলা
কী ভাবে যাবেন
বেকালের এক দিকে কানহানগাড এবং আরও এক দিকে কাসারগড়। দু’টো স্টেশনেই থামে সাঁতরাগাছি-মেঙ্গালুরু বিবেক এক্সপ্রেস। ট্রেনটি কানহানগাড পৌঁছয় প্রতি শনিবার সকাল ৭:৪৪-এ, কাসারগড় পৌঁছয় সকাল ৮:০৪-এ। যশোবন্তপুর থেকে সাপ্তাহিক মেঙ্গালুরু এক্সপ্রেস প্রতি শনিবার রাত ১১:৫৫-এ যশোবন্তপুর থেকে ছেড়ে কানহানগাড পৌঁছয় পরের দিন বিকেল ৩:৫৫-এ এবং কাসারগোড়ে পৌঁছয় বিকেল ৪:১৮-এ। দু’টো স্টেশন থেকেই বেকাল যাওয়ার গাড়ি পাওয়া যাবে।
কোথায় থাকবেন
বেকাল, কাসারগড় বা কানহানগাডে কেরল পর্যটনের কোনও হোটেল নেই। কিন্তু কানহানগাড থেকে বেকাল হয়ে কাসারগোড়, এই পঁচিশ কিমি পথে অনেক বেসরকারি হোটেল এবং রিসর্ট রয়েছে।
কী দেখবেন
কাসারগোড়ে থেকে বেকাল-সহ কাছাকাছি দ্রষ্টব্যগুলো দেখে নেওয়া ভাল।
চন্দ্রগিরি দুর্গ: বেকাল দুর্গ থেকে ১০ কিমি উত্তরে, কাসারগোড় রেলস্টেশন থেকে ৭ কিমি। পয়স্বিনি নদীর ধারে অবস্থিত সতেরো শতকের এই দুর্গটি এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত।
মাধুর মন্দির: বেকাল থেকে ১৮ এবং কাসারগোড় থেকে ৮ কিমি। শ্রী মদনেশ্বর সিদ্ধি বিনায়ক মন্দির। মধুবাহিনী নদীর ধারে অবস্থিত। দক্ষিণ ভারতের আর পাঁচটা মন্দিরের থেকে একেবারেই আলাদা। কোনও পোশাকবিধি নেই। প্রথমত শিবমন্দির হলেও এখন গর্ভগৃহে সিদ্ধিদাতা গণেশের বাস।
এই তিনতলা মন্দির কেরলের মন্দির-স্থাপত্যের এক চমৎকার নিদর্শন
এক পুরোহিতের ছেলে খেলার ছলে গণেশের মূর্তিটি তৈরি করেন। হাতির পিঠের আদলে তৈরি এই তিনতলা মন্দির কেরলের মন্দির-স্থাপত্যের এক চমৎকার নিদর্শন। কথিত আছে, মালাবার-কুর্গ আক্রমণের সময়ে এই মন্দির ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন টিপু সুলতান। কিন্তু এখানকার কুয়োর জল পান করে তাঁর মত বদলান। তবে তাঁর সৈন্যদের তুষ্ট করার জন্য টিপু আক্রমণের চিহ্ন হিসেবে তাঁর তলোয়ার দিয়ে মন্দিরের গায়ে একটি দাগ করে দেন। সেটা এখনও দেখা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy