শীতে চলুন কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শনে। ছবি: সংগৃহীত।
উত্তরবঙ্গ যাবেন ঠিক করে ফেলেছেন। এনজেপি-র টিকিটও কাটা। কিন্তু যাবেনটা কোথায়? মেঘ-পাহাড়ে হারিয়ে যাওয়ার মতো জায়গা এখানে অঢেল। অথচ স্থান বাছাইয়ের প্রশ্ন এলেই যত সমস্যা। কোথায় গেলে ভাল হয়, বুঝতে পারা যায় না। যদি প্রকৃতির নির্জনতায় কয়েকটি দিন ঘোরা, বিশ্রাম করা বেড়ানোর লক্ষ্য হয়, তবে বেছে নিতে পারেন কালিম্পঙের স্বল্পচেনা ৩ ঠিকানা।
তেন্দ্রাবং: কোলাহল ছাড়িয়ে মেঘমুলুকে পাড়ি দিতে চাইলে কালিম্পঙের তেন্দ্রাবং মন্দ হবে না। জায়গাটি একটু বেশিই নির্জন। তবে প্রিয় মানুষটির সঙ্গে সেই নির্জনতা উপভোগ করতে চাইলে প্রকৃতি নিরাশ করবে না। পাইন বনে ধাক্কা খেয়ে ওঠা কুয়াশার চাদর সরলেই দৃশ্যগোচর হবে ঢেউখেলানো পাহাড়। আর যদি সূর্যদেব প্রসন্ন হন, মেঘ বিদায় নেয়, তবে দেখতে পাবেন শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘা।
তেন্দ্রাবং বা তন্দ্রাবং, যে নামেই ডাকুন না কেন, প্রকৃতি আপনাকে ভরিয়ে দেবেই। গ্রামের পথে ক্যামেরা সঙ্গী করে বেরিয়ে পড়লে, বিষয়বস্তুর অভাব হবে না। অর্কিড, প্রজাপতি, পাখি, গ্রাম্য মানুষের সরল জীবনযাত্রা, গাল ভরা হাসি নিয়ে ছুটে বেড়ানো শিশুদের দেখতে দেখতে এগিয়ে যাবে ঘড়ির কাঁটা। যদি পাখি নিয়ে আগ্রহ থাকে, তা হলে সঙ্গে রাখতে পারেন দুরবিনও। এই গ্রামের খুব কাছেই নেওড়া ভ্যালি জাতীয় উদ্যান। ফলে সবুজের পাশাপাশি পাখিদের আনাগোনাও বেশ চোখে পড়বে।
কোথায় ঘুরবেন?
গ্রামের রাস্তায় ঘুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িঘরে ঢুঁ মারতে পারেন। দেখে নিতে পারেন এখানকার গির্জা। চাইলে এখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে ঘুরে নেওয়া যায় কোলাখাম, ছাঙ্গে জলপ্রপাত, লাভা, রিশপ।
কোথায় থাকবেন?
তেন্দ্রাবঙে থাকতে গেলে হোম স্টে ভরসা। সেখানে যেমন বিলাসিতা নেই, তেমনই আতিথেয়তার অভাবও নেই। এখানে বেশ কয়েকটি হোম স্টে রয়েছে। চার বেলার খাওয়া এবং থাকা নিয়ে মাখাপিছু খরচ ১৫০০-২০০০ টাকা।
কী ভাবে যাবেন?
কালিম্পং থেকে তেন্দ্রাবঙের দূরত্ব ২৩ কিলোমিটার। সরাসরি এনজেপি থেকে গাড়ি করে আসতে পারেন। দূরত্ব ৯৪ কিলোমিটার। আবার শেয়ার গাড়িতে বা বাসে কালিম্পং এসে গাড়ি ভাড়া করে সেখানে যেতে পারেন।
মাইরুং গাঁও: শহুরে জীবনের ক্লান্তি ভুলতে চাইলে মাইরুং বা মইরুং গাঁওকে বেছে নিতেই পারেন। আবার যদি কালিম্পঙের অন্যান্য জায়গায় যেতে চান, তা হলেও এখানে দু’টি দিন থাকতে পারেন নিছক বিশ্রামের জন্যই। বারান্দায় বসে গরম চায়ে চুমুক দিতে দিতে পাহাড়ি সৌন্দর্য উপভোগের জন্য এই জায়গা আদর্শ।
কোথায় ঘুরবেন?
পায়ে হেঁটে ঘুরতে পারেন আশপাশে। গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়তে পারেন ডুকা ভ্যালি, ডুকা ফল্স, ডেলো পার্ক, ইচ্ছে গাঁও। এখান থেকে লাভা, রিশপের দূরত্বও বেশি নয়।
কোথায় থাকবেন?
বেশ কয়েকটি হোম স্টে রয়েছে। চার বেলার খাওয়া এবং থাকা নিয়ে মাখাপিছু খরচ ১৪০০-২০০০ টাকা।
কী ভাবে যাবেন?
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে গাড়ি করে আসতে পারেন মাইরুং গাঁও। দূরত্ব ৯৩ কিলোমিটার। আবার শেয়ার গাড়িতে বা বাসে কালিম্পং পৌঁছে, আর একটি শেয়ার গাড়িতে আসতে হবে আলগারা। সেখান থেকে গ্রামটির দূরত্ব ৮ কিলোমিটার।
মিলন টপ: শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য অত্যন্ত সুন্দর ভাবে উপভোগ করা যায় মিলন টপ থেকে। কালিম্পং থেকে মাত্র ২২ কিলোমিটার দূরে পেডং নামে একটি গ্রামের কাছেই এই স্থান। পাহাড়ের উপরে ভিউ পয়েন্ট। সেখান থেকে মেঘমুক্ত আকাশে কাঞ্চনজঙ্ঘার দর্শন চিরস্মরণীয় অভিজ্ঞতা হতে পারে।
কোথায় ঘুরবেন?
পায়ে হেঁটে ঘুরতে পারেন আশপাশে। গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পেডং, ইচ্ছে গাঁও, সিলারি গাঁও ঘুরে নিতে পারেন। চলে যেতে পারেন ডেলো পার্কেও।
কোথায় থাকবেন?
পেডংয়ে বেশ কয়েকটি হোম স্টে রয়েছে। তবে মিলন টপের একেবারে কাছে একটি হোম স্টে রয়েছে। জায়গাটি পড়ে আপার পেডংয়ে। এখানে থাকা এবং খাওয়া নিয়ে মাথাপিছু খরচ ১৫০০-২০০০ টাকার মতো।
কী ভাবে যাবেন?
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে গাড়ি করে আসতে পারেন আপার পেডংয়ে মিলন টপ ভিউ পয়েন্টে। দূরত্ব ৯৫ কিলোমিটার। আবার শেয়ার গাড়িতে বা বাসে কালিম্পং পৌঁছে, আর একটি শেয়ার গাড়িতে আসতে পারেন পেডং।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy