নতুন বছর থেকে সাগরের সৌন্দর্য এবার উপভোগ করা যাবে কাচের সেতুতে দাঁড়িয়ে। ছবি: সংগৃহীত।
কাচের সেতু জুড়ল স্বামী বিবেকানন্দ এবং তামিল কবি তিরুভাল্লুভারের নামাঙ্কিত সাগরের উপরের থাকা দুই স্থানকে। এক ধাক্কায় বেড়ে গেল কন্যাকুমারীর আকর্ষণ। সিকিমের কাচের স্কাইওয়াক থেকে এত দিন কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ উপভোগ করা যেত। তবে সাগরের উপর কাচের সেতু ভারতে এই প্রথম।
ভারতের দক্ষিণতম প্রান্তের শেষ বিন্দুর সৌন্দর্য এমনিতেই কম কিছু নয়। এখান থেকে বঙ্গোপসাগর, ভারত মহাসাগার এবং আরব সাগরের সাগরের মিলনস্থল দেখা যায়। নতুন বছরে সাগরের সেই সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে কাচের সেতুতে দাঁড়িয়ে। হাঁটতে হাঁটতে পায়ের নীচে থাকা স্বচ্ছ কাচ দিয়ে দেখা যাবে সাগরের জলরাশি।
সেতু দিয়ে কন্যাকুমারীর বিবেকানন্দ মেমোরিয়াল এবং তিরুভাল্লুভারের মূর্তির মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করেছে তামিলনাড়ু সরকার। বছরশেষে সেতুর উদ্বোধন করার পর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন নিজের এক্স হ্যান্ডল থেকে সেতুটির একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছেন। তাতেই ফুটে উঠেছে সেতুর দিবারাত্রির রূপ।
দৈর্ঘ্যে ৭৭ মিটার (২৫২ ফুট) এবং ১০ মিটার চওড়া। ৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ধনুকাকৃতির সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেই সেতু ধরেই বিবেকানন্দ মেমোরিয়াল থেকে তিরুভাল্লুভারের মূর্তি পর্যন্ত হেঁটে যেতে এবং আসতে পারবেন পর্যটকরা। উপভোগ করতে পারবেন চারপাশের দৃশ্য।তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারীর অন্যতম আকর্ষণ স্থান বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়াল, তিরুভাল্লুভারের মূর্তি, কন্যাকুমারী মন্দির। কন্যাকুমারী জেলার মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে সাগরে দু’টি বিশাল পাথর রয়েছে। কিংবদন্তি অনুযায়ী, তারই একটি শিলায় দেবী কন্যাকুমারী (পার্বতী) শিবের জন্য তপস্যা করেছিলেন। আর ইতিহাস বলে, ১৮৯২ সালে স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর আমেরিকা সফরের আগে শিলাটির উপরে বসে টানা তিন দিন ধ্যান করেছিলেন। সমুদ্রের উপরে ছোট পাথুরে দ্বীপের মতো স্থানের একটিতে রয়েছে বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়াল। অন্যটিতে, তামিল কবি তিরুভাল্লুভারের সুবিশাল মূর্তি।
বিবেকানন্দ মেমোরিয়ালে যেতে হয় কন্যাকুমারী জেটি ঘাট থেকে ভেসেলে চেপে। তিরুভাল্লুভারের ১৩৩ ফুট মূর্তি দর্শন করতে হলে এত দিন ফেরি পরিষেবা নিয়ে বিবেকানন্দ মেমোরিয়াল হয়ে সেখানে পৌঁছতে হত। কাচের সেতু তৈরি হওয়ার পর বিবেকানন্দ মেমোরিয়াল থেকে তিরুভাল্লুভারের মূর্তি পর্যন্ত এই দূরত্ব পায়ে হেঁটেই যাওয়া যাবে।
স্বাভাবিক ভাবেই ভারতের প্রথম কাচের সেতুটি হয়ে উঠতে চলেছে কন্যাকুমারীর অন্যতম আকর্ষণ। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিনের এক্স হ্যান্ডলে সেতুটির যে ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, আলোকমালায় সেজেছে সেতু। লেসার আলোর খেলা চলছে সাগরের উপরে। অনুমান করা যায়, পর্যটকেরা সন্ধ্যায় সৈকতে বসে কাচের সেতুর উপর রঙের বদল প্রত্যক্ষ করতে পারবেন। বহু দূর থেকেও তা দৃশ্যমান হবে। কন্যাকুমারীর সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের রূপ বিখ্যাত।
কন্যাকুমারী জেলায় ছড়িয়ে রয়েছে ঘুরে দেখার একাধিক স্থান। সৈকতের কাছেই ঘুরে কন্যাকুমারী মন্দির। প্রাচীন মন্দির। আরতির সময় প্রদীপের আলোয় প্রতিমার নাকের হীরের নাকছাবির দ্যুতি দেখার মতো।
এখান থেকে ঘুরে নেওয়া যায় চিথারাল জৈন মন্দির এবং ভগবতী মন্দির। পদ্মনাভপুরম প্যালেস। টালির চালে প্যালেসে রয়েছে কাঠের অপূর্ব কারুকাজ। এখান থেকে ঘুরে দেখতে পারেন সুনামি মেমোরিয়াল পার্ক, কন্যাকুমারী শ্রী তিরুপতি মন্দির।
কন্যাকুমারী থেকে কেরলের তিরুবনন্তপুরম খুব কাছেই। এখান থেকে কেরলের বিভিন্ন জায়গাও ঘুরে নিতে পারেন।
কী ভাবে যাবেন? হাওড়া থেকে সরাসরি ট্রেনে কন্যাকুমারী যাওয়া যায়। বিমানে কেরলের তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দরে গিয়ে সেখান থেকে কন্যাকুমারী যাওয়া যায়। সড়কপথে দূরত্ব ১১০ কিলোমিটার।
থাকার জায়গা: কন্যাকুমারীতে ছোট, বড় বিভিন্ন ধরনের অনেক হোটেল আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy