কলকাতার কাছেপিঠে অচেনা সৈকত। ছবি: সংগৃহীত।
কাজের ক্লান্তি, জীবনের ওঠাপড়া। খোলা আকাশের নীচে প্রাণ ভরে শ্বাস নিতে চান? অথৈ সাগর, মন ভাল করা নোনা হাওয়ায় প্রিয় মানুষটির কাঁধে মাথা রাখার জন্য একটু নির্জন সৈকতের খোঁজ করছেন মনে মনে? তবে ঘুরে আসতে পারেন বগুরান জলপাই, লাল কাঁকড়া, বাগদার মতো সমুদ্র সৈকত থেকে। মাত্র দু’দিনেই ঘুরে নেওয়া সম্ভব কলকাতার কাছেপিঠে এই সৈকতগুলি থেকে।
এখানে এখনও পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়নি প্রকৃতি। বরং লম্বা ঝাউ গাছের জঙ্গল শীতল ছায়া দেয়। চারপাশে তাকালে কংক্রিটের বদলে চোখে পড় অথৈ সাগর আর নীল আকাশ। তেমনই প্রশান্তির জায়গা এগুলি।
বগুরান জলপাই
কাঁথি থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে নির্জন এক সৈকতের নাম বগুরান জলপাই। শান্ত, নিরিবিলি। সৈকতের গা ঘেঁষেই থাকা ঝাউবন বাড়িয়ে দেয় দরাজ সাগরের সৌন্দর্য। এমনিতে বড় বড় ঢেউ না পেলেও পূর্ণিমা বা অমাবস্যায় জোয়ারের সময় ঢেউ ভালই থাকে। প্রিয় মানুষটি হোক বা পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধব, দু’টি দিন মুক্ত হাওয়া সেবনের জন্য এ সৈকত কিন্তু বেশ মনোমুগ্ধকর। লাল কাঁকড়ারও দেখা মেলে এখানে। তবে কিছু মানুষের অসেচতনতা, সৈকত নোংরা করার প্রবণতা, সৈকতের ওপর গাড়ি চালানোর জন্য লাল কাঁকড়ার পরিমাণ কমছে।
কী ভাবে যাবেন- সরাসরি কলকাতা থেকে গাড়ি নিয়ে যেতে পারেন। আবার বাসে কাঁথি-দিঘা বাইপাস মোড়ে নেমে সেখান থেকে অটো বা গাড়ি ভাড়া করেও যেতে পারেন। থাকার জন্য একটি জায়গা রয়েছে।
লাল কাঁকড়া বিচ
মন্দারমণি অতি পরিচিত একটি জায়গা। তবে তার অদূরেই দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর গ্রামের লাল কাঁকড়া সৈকতে এখনও তেমন ভাবে পর্যটকদের পা পড়ে না। ইদানীং অবশ্য পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে সেখানে, কিন্তু ভিড় তেমন হয় না। প্রচুর লাল কাঁকড়ার দেখা মেলে এখানে।
সমুদ্রের ধারে রয়েছে গ্রামবাসীদের চাষজমিও। পড়ন্ত বিকেলে সাগরের নোনা হাওয়া কিংবা রিমঝিম বৃষ্টিতে বিস্তীর্ণ সাগর পাড়ে দীর্ঘ ক্ষণ হাঁটতে পারেন আপন খেয়ালে। ঢেউ এসে ধুইয়ে দেবে পা। সূর্যাস্তও বড় মনোরম এখানে।
কীভাবে যাবেন- হাওড়া বা কলকাতা থেকে দিঘা যাওয়ার পথে পড়ে চাউলখোলা। সেখান থেকে দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুরের লালকাঁকড়া সৈকত। থাকার জন্য রামকৃষ্ণ মিশনের অতিথি নিবাস আছে। আগাম বুকিং করে যেতে হয়।
যমুনাসুল
বাংলার পড়শি রাজ্যে ওড়িশায় রয়েছে এক সুন্দর ও নির্জন সৈকত। তার নাম যমুনাসুল। সাগরের পাড়ে বসে বসে নৌকা নিয়ে মাছ ধরা, জাল ফেলা আর ঢেউ গুনতে গুনতেই কেটে যাবে বেশ কয়েকটি ঘণ্টা। এখানে এখনও শোনা যায় পাখির ডাক। হইচই কোলাহলের বদলে সর্ব ক্ষণের সঙ্গী হয় ঢেউয়ের শব্দ।
কী ভাবে যাবেন- ট্রেনে করে হাওড়া বা সাঁতরাগাছি থেকে চলে যান বাস্তা স্টেশন। সেখান থেকে যমুনাসুল সৈকতের দূরত্ব ৩১ কিলোমিটার। অটো ভাড়া করে যাওয়া যায়। থাকার জন্য ক্যাম্পিং-এর ব্যবস্থা রয়েছে।
দুবলাগড়ি
ওড়িশাতেই আর এক সুন্দর সৈকত হল দুবলাগড়ি। এটা ‘বাগদা বিচ’ নামেও পরিচিত। সমুদ্রের বড় বড় ঢেউ না থাকলেও ঝাউয়ে ঢাকা প্রান্তর, সূর্যাস্ত, পাখির ডাক, নির্জনতা সমস্ত কিছু মিলিয়ে এক থেকে দু’টি দিন দিব্যি কেটে যাবে। থাকার জন্য এখানে পরিবেশবান্ধব তাঁবু ও তার পরিবেশ বাড়তি ভাল লাগা যোগ করবে। সঙ্গে থাকবে সুস্বাদু খাওয়ারও।
কী ভাবে যাবেন- কলকাতা থেকে ২৪৫ কিলোমিটার দূরে দুবলাগড়ি। ট্রেনে বালাসোর, সেখান থেকে গাড়ি করে দুবলাগড়ি। পুরো রাস্তাটা কলকাতা থেকে গাড়িতেও যেতে পারেন। সময় লাগবে ৪-৫ ঘণ্টার মতো।
লালগঞ্জ সৈকত
নামখানার কাছেই রয়েছে লালগঞ্জ। কলকাতা থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরেই এই সৈকত। থাকার জন্য রয়েছে তাঁবুর ব্যবস্থা। ঝট করে ভেবে নিয়ে করেই ঘুরে নেওয়া যায় এই জায়গা।
কী ভাবে যাবেন- শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে নামখানা। তার পর অটো বা বাসে লালগঞ্জ। কলকাতা থেকে গাড়ি করেও যাওয়া যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy