অনুচ্চ টিলা ঘেরা জলাশয়। ব্যাপ্তি ১.২ কিলোমিটার, গভীরতায় ১৩৭ মিটার। দূর থেকে দেখলে আর পাঁচটা সাধারণ জলাশয়ের মতো মনে হলেও, মহারাষ্ট্রের বুলধনা জেলার এই হ্রদের সঙ্গে জড়িয়ে নানা রহস্য।
দেশের আর পাঁচটা জলাশয়ের থেকে এই হ্রদকে পৃথক করেছে তার উৎপত্তি, বৈশিষ্ট্য। জানা যায়, হাজার হাজার বছর আগে উল্কাপাতের ফলে এর জন্ম। শুরুতেই অবশ্য তা জলাশয় হয়ে ওঠেনি। এক সময় তা ছিল গভীর এবং প্রশস্ত এক গহ্বর। বছরের পর বছর ধরে তাতে জল জমতে জমতে এই হ্রদের সৃষ্টি। আবার কারও মতে, এই গহ্বরের সৃষ্টি তার চেয়েও বহু আগে, কোনও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে। এর জল যথেষ্ট নোনা। আবার জলে ক্ষারের অস্তিত্বও মেলে।
এই হ্রদ ভূতত্ত্ববিদ, বাস্তুতন্ত্রবিদ-সহ বহু গবেষকের কাছেই অত্যন্ত আগ্রহের বিষয়। আইআইটি বম্বে থেকে এই হ্রদ নিয়ে একাধিক গবেষণা হয়েছে। জলের বাস্তুতন্ত্র নিয়ে গবেষণা এখনও চলছে।

লোনার হ্রদের অদূরেই রয়েছে খুব পুরনো গোমুখ মন্দির। ছবি: সংগৃহীত।
মহারাষ্ট্রের বুলধনা জনপদের দূরত্ব ঔরঙ্গাবাদ (অধুনা সম্ভাজিনগর) থেকে ১৫০ কিলোমিটার। মুম্বই থেকে দূরত্ব ৪৭০ কিলোমিটার। খুব কম সংখ্যক লোকই সেখানে বেড়াতে যান। চাইলে আপনিও ঘুরে নিতে পারেন সেই জায়গায়। ‘লোনার হ্রদ’ বলে পরিচিত জলাশয়টি পৌঁছতে ঔরঙ্গাবাদ থেকে সড়কপথে ঘণ্টা তিনেক লাগে। রাস্তার অবস্থা অবশ্য বিশেষ ভাল নয়। তবে সেখানে গেলে প্রত্যক্ষ করতে পারেন বহু পুরনো এই হ্রদ, যাকে বিস্ময় মনে করেন অনেকেই।
লোনার হ্রদ থেকে ৭০০ মিটার দূরে রয়েছে আরও একটি জলাশয়। সেটি পরিচিত অম্বর হ্রদ নামে। মনে করা হয়, উল্কার ছোট টুকরো ছিটকে সেটি তৈরি হয়েছে। হ্রদের অদূরে রয়েছে হনুমান মন্দির।
আরও পড়ুন:
তবে শুধু হ্রদ নয়, বুলধনা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে একাধিক দ্রষ্টব্য। লোনার হ্রদের অদূরেই রয়েছে খুব পুরনো গোমুখ মন্দির। ভিতরে রয়েছে একটি কুণ্ড। এ ছাড়াও ঘুরে নিতে পারেন গজানন মহারাজের নামাঙ্কিত একটি ধর্মীয় স্থান, বালাজি মন্দির, কমলজা দেবী মন্দির।
ঔরঙ্গাবাদ থেকে সকালে বেরিয়ে সারা দিন ঘুরেই সেখানে ফেরা যায়। ফলে কেউ যদি ঔরঙ্গাবাদ ঘুরবেন মনস্থ করেন, তিনি ভ্রমণতালিকায় একটি দিন যোগ করে লোনার হ্রদ ঘুরে নিতে পারেন।