বিশ্বকাপের সামনে। সোমবার। ছবি: এএফপি।
তিনি যখন তাঁর বিশ্বকাপ আবির্ভাবেই ব্রাজিলকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন, বয়স ছিল মাত্র ১৭। পেলের পাঁচ বছর বেশি বয়সে নেইমারের বিশ্বকাপ আবির্ভাব ঘটতে চলেছে। বাইশ বছর বয়সে। এবং পেলে মনে করছেন, সেই ১৯৫৮ বিশ্বকাপে তাঁর নিজের উপর যে পাহাড়প্রমাণ চাপ ছিল, ২০১৪ বিশ্বকাপে নেইমারের উপর চাপ তার চেয়েও বেশি থাকবে!
ফুটবলসম্রাট এক সংবাদ সংস্থাকে বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ দিন বলেছেন, “বিশ্ব ফুটবলে আমি যখন জ্বলে উঠেছিলাম তখন আমাকে কেউ সে ভাবে জানত না। মাত্র সতেরো বছর বয়স ছিল। তাই বিশ্বকাপে ব্যর্থ হওয়ার ভয়ে টেনশনও ছিল। যদিও তার পরেরটা ইতিহাস। কিন্তু নেইমারের ব্যাপারটা আমার চেয়ে অনেকটাই অন্য রকম। নেইমারও কম বয়সে প্রথম বিশ্বকাপ খেলছে। এবং কেউ জানে না এ বারের বিশ্বকাপে ও ঠিক কেমন খেলবে! কিন্তু প্রথম বিশ্বকাপ খেলার সময় আমার উপর যে চাপ ছিল, তার চেয়ে অনেক বেশি চাপ আছে নেইমারের উপর।”
পেলের ব্যাখ্যা, তাঁর নিজের প্রথম বিশ্বকাপের চেয়েও নেইমারের প্রথম বিশ্বকাপে তাঁর ঘাড়ে দায়িত্বও বেশি। “নেইমারের প্রথম বিশ্বকাপেই ওর উপর বিরাট দায়িত্ব। সমস্যা হল, এ বার বিশ্বকাপে চাপ শুধু নেইমারের উপরই নয়, পুরো ব্রাজিল দলের উপর। কেননা ব্রাজিল বিশ্বকাপটা খেলবে নিজের দেশে। তাও দীর্ঘ চৌষট্টি বছর বাদে। সে জন্য গোটা দেশ, সমস্ত দেশবাসীর প্রবল প্রত্যাশা থাকবে ওদের উপর। প্রতিনিয়ত সবাই প্রতিটা ম্যাচেই ব্রাজিলের জয় চাইবে। ঘরের মাঠে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে চাইবে। এর আগে এক বারই ব্রাজিলে বিশ্বকাপের আসর বসেছিল আর সেখানে ব্রাজিল ফাইনালে ফেভারিট হয়েও উরুগুয়ের কাছে হেরে গিয়েছিল। বহু সত্তর-আশি বছর বয়সী ব্রাজিলবাসী বেঁচে আছেন যারা সেই শোকটা এ বার ভুলতে আকুল থাকবেন। ফলে নেইমার আর ব্রাজিল দলকে কী বিরাট চাপ নিয়ে খেলতে হবে সেটা নিশ্চয়ই বোঝা যাচ্ছে।”
তবে জীবনের প্রথম বিশ্বকাপের আগে নেইমারের ইউরোপীয় ফুটবলে হাতেখড়ি (নাকি পায়ে!) ঘটে যাওয়ার মধ্যে ইতিবাচক দিক দেখতে পাচ্ছেন পেলে। প্রবাদপ্রতিম ফুটবলার বলছেন, “নেইমারের সবচেয়ে ভাল ব্যাপারটা হল, ও ইউরোপে, মানে স্পেনে মানে বার্সেলোনায় খেলতে গিয়েছে। ব্রাজিল দলের পক্ষেও এটা সেরা ব্যাপার। এটা অনেকটা এক জন ছাত্রের ছ’মাস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে আবার নিজের কলেজে ফিরে এসে পড়ার মতো। আমার বিশ্বাস নেইমার ইউরোপিয়ান ফুটবলে খেলে আরও অভিজ্ঞ প্লেয়ার হয়ে ব্রাজিল দলে ফিরবে বিশ্বকাপের সময়।” এবং পেলে এ বার ব্রাজিলের কাপ জেতার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy