Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

আবার মুখ খুললে ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ বলা হতে পারে মনোজ, দিন্দাকে

প্রচারমাধ্যমের কাছে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসায় বাংলার দুই সিনিয়র ক্রিকেটারকে প্রবল তিরস্কারের মুখে পড়তে হতে পারে। শুধু তাই নয়, চরম বার্তাও তাঁদের দিয়ে দিতে পারে সিএবি। চরম বার্তা অর্থাত্‌ মনোজ-দিন্দাদের বলা হতে পারে যে এটাই শেষ বার। এর পর মিডিয়ায় যদি এ রকম বিতর্কিত মন্তব্যের কথা শোনা যায়, তা হলে তোমাদের আর বাংলায় দরকার নেই! শুক্রবার সিএবি-তে বাংলার পরবর্তী ম্যাচের দল নির্বাচনী বৈঠক ছিল। যেখানে সর্বাগ্রে মিডিয়ায় বাংলার দুই সিনিয়রের বিস্ফোরণের প্রসঙ্গটা ওঠে। শোনা গেল, নির্বাচকরা সেখানে পুরো ঘটনাটা নাকি বিবৃত করে দেন সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়াকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৫১
Share: Save:

প্রচারমাধ্যমের কাছে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসায় বাংলার দুই সিনিয়র ক্রিকেটারকে প্রবল তিরস্কারের মুখে পড়তে হতে পারে। শুধু তাই নয়, চরম বার্তাও তাঁদের দিয়ে দিতে পারে সিএবি।

চরম বার্তা অর্থাত্‌ মনোজ-দিন্দাদের বলা হতে পারে যে এটাই শেষ বার। এর পর মিডিয়ায় যদি এ রকম বিতর্কিত মন্তব্যের কথা শোনা যায়, তা হলে তোমাদের আর বাংলায় দরকার নেই!

শুক্রবার সিএবি-তে বাংলার পরবর্তী ম্যাচের দল নির্বাচনী বৈঠক ছিল। যেখানে সর্বাগ্রে মিডিয়ায় বাংলার দুই সিনিয়রের বিস্ফোরণের প্রসঙ্গটা ওঠে। শোনা গেল, নির্বাচকরা সেখানে পুরো ঘটনাটা নাকি বিবৃত করে দেন সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়াকে। যা শুনে ক্ষুব্ধ তো বটেই, রীতিমতো আশ্চর্য হয়ে যান সিএবি প্রেসিডেন্ট। বাংলার সবুজ উইকেটে খেলা প্রসঙ্গে দিন্দার ‘দোকানে মাল নেই, শাটার খুলে বসে কী হবে’ বক্তব্য শুনে সিএবি প্রেসিডেন্ট নাকি বলেও ফেলেন যে, আদৌ কোনও ক্রিকেটারের পক্ষে এমন কথা বলা সম্ভব কি না? জানা গেল, মনোজ তিওয়ারির মন্তব্যেও চটেছেন সিএবি প্রেসিডেন্ট। তিনি বৈঠকে বলে দেন, মনোজ এর আগেও মিডিয়ায় বেফাঁস মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন। অরিন্দম দাসকে বাদ দেওয়া নিয়ে মিডিয়ায় একবার প্রবল উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন মনোজ। তখন তাঁকে ডেকে পাঠানো হলে পুরো ঘটনাটা অস্বীকার করে যান বঙ্গ ব্যাটসম্যান। কিন্তু তার পরেও নিজেকে শুধোরননি মনোজ। বরং আবার বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। বৈঠকেই বাংলার কোচ অশোক মলহোত্র এবং অধিনায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্লকে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট দুই ক্রিকেটারকে জানিয়ে দিতে যে সিএবি মোটেও ব্যাপারটাকে ভাল ভাবে দেখছে না। বরং কড়া অবস্থানের কথাই ভাবছে ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি হলে। আরও বলতে বলা হয়েছে যে, দিন্দা-মনোজের কিছু অভিযোগ থাকলে সেটা যেন সিএবি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করে তাঁরা বলেন। মিডিয়ায় নয়। মিডিয়ায় বেরনো কোনও অভিযোগকে অভিযোগ বলেই ধরবে না সিএবি।

যা খবর, তাতে সিএবি যুগ্ম-সচিব সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ফিরলে আবারও বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা। যেখানে সিএবি প্রেসিডেন্টের সামনে ডাক পড়তে পারে দুই ক্রিকেটারের। যেখানে তাঁদের বলতে হতে পারে কেন তাঁরা পিচ নিয়ে এমন কথা বলেছেন। কেন সিএবিকে কাঠগড়ায় তুলেছেন।

প্রকাশ্যে সিএবি প্রেসিডেন্ট দুই ক্রিকেটারকে ডাকার ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি। কিন্তু যা বললেন, তাতে কড়া অবস্থানের যথেষ্ট ইঙ্গিত। “সামনে এসে কেউ কিছু কেন বলছে না। তা হলে বুঝব অসুবিধেটা কোথায়। কিন্তু সেটা না করে যা হচ্ছে, তা পরিষ্কার শৃঙ্খলা ভাঙা হচ্ছে। যেটা মানা যায় না। একটাই কথা বলব, এটা যদি আবার ঘটে তা হলে কাউকে সিএবি ছাড়বে না,” বলার সময় রীতিমতো ক্ষুব্ধ দেখিয়েছে ডালমিয়াকে। তার পরই সিএবি প্রেসিডেন্টের পাল্টা, “এই জিনিস যদি আবার ঘটে, তা হলে সোজা থ্যাঙ্ক ইউ বলে দেব। যদি কিছু কাউকে বলতেই হয়, আমাকে এসে বলতে হবে। এর আগেও একই ঘটনা ঘটেছে। সেখানে এক ক্রিকেটার ক্ষমা চেয়ে গিয়েছে। তার পর আবার ঘটল। যেটা এর পর আর বরদাস্ত করা হবে না।”

একে রঞ্জি টেবলে টিমের শনির দশা চলছে। তার পর এমন বিতর্ক। এ দিন সিএবি প্রেসিডেন্টকে বৈঠকে পেয়ে বাংলার নির্বাচকদের কেউ কেউ নানা অভিযোগ তুলে ধরেন। বলা হয়, টিমে অনেক বেশি মতামত বলতে কী বোঝানো হচ্ছে? নির্বাচকরা যে মতামতটা দেন, সেটা? পাশাপাশি আরও বলা হয়, টিমের ভেতরের খবরাখবরও আর চাপা থাকছে না। মিডিয়ায় বেরিয়ে যাচ্ছে। বিতর্কের মতো এটাও বন্ধ হওয়া দরকার।

ক্রিকেটারদের নিয়ে জট তো বটেই জট দেখা যাচ্ছে জম্মু-কাশ্মীর ম্যাচে বাংলার স্ট্র্যাটেজি নিয়ে। এ দিন দল নির্বাচনী সভায় বাংলা টিমে চার জন স্পিনারকে রাখা হল। অফস্পিনার সৌরাশিস লাহিড়ীর সঙ্গে আছেন দু’জন বাঁ হাতি স্পিনার ইরেশ সাক্সেনা এবং অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

অলরাউন্ডার ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়কেও রাখা হয়েছে নির্বাচিত পনেরোয়। গত ম্যাচের দল থেকে বাদ গেলেন বাঁ হাতি ওপেনার রোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, ঢুকলেন অস্ট্রেলিয়া ফেরত ঋদ্ধিমান সাহা। টিমে চার স্পিনার রেখে দেওয়া টার্নারে খেলার ইঙ্গিত। কিন্তু তার পরেও দু’টো স্ট্রিপ রাখা হচ্ছে। একটা গ্রিন টপ। একটা টার্নার। যেটায় আবার জল দিতে বারণ করা হয়েছে। এখনও নাকি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না, কী ধরণের উইকেটে জম্মু-কাশ্মীর ম্যাচ খেলা উচিত। টার্নারের দিকেও বেশি ঝোঁকা যাচ্ছে না, কারণ প্রতিপক্ষে পারভেজ রসুল বলে জাতীয় দলে খেলা স্পিনার আছেন। শোনা গেল, সোমবার ম্যাচের পিচ নির্বাচন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। এ দিন নির্বাচক সহ বঙ্গ অধিনায়কও পিচ দেখে এলেন। কিন্তু কোনটায় শেষ পর্যন্ত, এখনও নিশ্চিত নয়। আর এই ধোঁয়াশার কারণও খুব স্বাভাবিক। রঞ্জিতে লক্ষ্মীরতন শুক্লদের জীবন-মৃত্যু দাঁড়িয়ে এই ম্যাচে, জম্মু-কাশ্মীর বনাম বাংলায়।

অন্য বিষয়গুলি:

manoj tiwary ashok dinda snub
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE