Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
ন্যাটওয়েস্ট জয়ের গল্প ফাঁস যুবি-কাইফের
NatWest Series 2002

নিজের জায়গা পাল্টাবে না কেউ, বলেছিলেন সৌরভ

ন্যাটওয়েস্ট সিরিজের ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করে ৩২৫ রান করেছিল নাসের হুসেনের ইংল্যান্ড। জবাবে সৌরভ ও বীরেন্দ্র সহবাগের প্রতিআক্রমণ হারানো মনোবল ফিরিয়েছিল ভারতীয় ড্রেসিংরুমে।

 স্মরণীয়: আঠারো বছর আগের সেই মুহূর্ত। ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জেতার পরে মাঠে ঢুকে নায়ক কাইফের কোলে উঠে পড়েছিলেন অধিনায়ক সৌরভ। ফাইল চিত্র

স্মরণীয়: আঠারো বছর আগের সেই মুহূর্ত। ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জেতার পরে মাঠে ঢুকে নায়ক কাইফের কোলে উঠে পড়েছিলেন অধিনায়ক সৌরভ। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৪৯
Share: Save:

লর্ডসের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জার্সি উড়িয়ে সেই উৎসবের স্মৃতি কখনওই মোছা যাবে না ক্রিকেটপ্রেমীদের মন থেকে। ২০০২-এর ন্যাটওয়েস্ট সিরিজের ফাইনালে মহম্মদ কাইফ ও যুবরাজ সিংহের লড়াইও অমর থেকে যাবে প্রত্যেকের মনে। কিন্তু কী ভাবে সম্ভব হয়েছিল সেই জয়? কাইফ ও যুবরাজ জুটি গড়ার সময় কী নির্দেশ দিয়েছিলেন সৌরভ? সব কিছু নিয়েই ইনস্টাগ্রাম লাইভ চ্যাটে আলোচনা করলেন সেই জয়ের দুই নায়ক।

ন্যাটওয়েস্ট সিরিজের ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করে ৩২৫ রান করেছিল নাসের হুসেনের ইংল্যান্ড। জবাবে সৌরভ ও বীরেন্দ্র সহবাগের প্রতিআক্রমণ হারানো মনোবল ফিরিয়েছিল ভারতীয় ড্রেসিংরুমে। দ্রুত একশো রানের জুটি গড়েন দুই ভারতীয় ওপেনার। কিন্তু ৪৩ বলে ৬০ রান করে সৌরভ ফিরে যাওয়ার পরেই একের পর এক উইকেট হারায় ভারত। বীরেন্দ্র সহবাগ, রাহুল দ্রাবিড়, সচিন তেন্ডুলকর, দীনেশ মোঙ্গিয়া ফিরে যাওয়ার পরে অনেকেই আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। ১৪৬ রানে পাঁচ উইকেট হারানোর পরে অবিশ্বাস্য ১২১ রানের জুটি গড়ে ভারতকে ম্যাচে ফেরান যুবরাজ ও কাইফ। যদিও ৫৯ রান বাকি থাকতে ফিরে যান যুবরাজ ৬৯ রান করে। কিন্তু কাইফ ধৈর্য হারাননি। হরভজন সিংহ, জাহির খানদের পাশে নিয়ে সিরিজ তুলে দিয়েছিলেন সৌরভের হাতে। তার পরেই শুরু ড্রেসিংরুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে সৌরভের সেই বিখ্যাত উৎসব। মাঠে নেমে কাইফের কোলেও লাফ দিয়ে উঠে পড়েন তৎকালীন অধিনায়ক।

জুটি: যুবরাজ-কাইফের হার না-মানা লড়াই এনে দিয়েছিল ট্রফি। ফাইল চিত্র

ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকেরা বাইরে থেকে এতটা উত্তেজনা অনুভব করতে পারলে, ভিতরের ছবিটা কী রকম ছিল? সেটাই তুলে ধরেছেন যুবরাজ ও কাইফ। যুবরাজ বলছিলেন, “তোমার মনে আছে, আমরা জুটি গড়ার সময় দাদা বাইরে থেকে কী বলছিল, আর তার জবাব কী ভাবে দিয়েছিলে?” কাইফ বলেন, “দাদা বার বার আমাকে ইঙ্গিত করে বলছিল সিঙ্গলস দিতে।” যুবরাজ বলে ওঠেন, “তার জবাব কী দিয়েছিলে?” কাইফের উত্তর, “অত মনে নেই।” যুবরাজ মনে করিয়ে দেন, “তুমি পুল করে দুরন্ত একটি ছয় মেরে ড্রেসিংরুমের উদ্দেশে বলেছিলে, আরে ভাই আমিও খেলতে এসেছি।” সেই স্মৃতি ফিরে আসতেই মুখে এক গাল হাসি দু’জনের।

আরও পড়ুন: ধোনি-সৌরভ নয়, গম্ভীরের মতে দেশের সেরা ক্যাপ্টেন...

সেখানেই না থেমে যুবরাজ বলেন, “তুমি ছয় মারার পরে কী হয়েছিল জানো? ড্রেসিংরুমে দাদা বলে দিয়েছিল, কেউ যেন নিজের জায়গা ছেড়ে না ওঠে। শেষ বল পর্যন্ত সবাইকে একই জায়গায় বসে থাকার নির্দেশ দিয়েছিল দাদা।”

সে ম্যাচ ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে এক বিপ্লব নিয়ে আসে। ওয়ান ডে সিরিজের ফাইনালে একাধিক বার হেরে যাওয়া ভারতীয় দল দেখিয়েছিল, তারাও ঘুরে দাঁড়াতে পারে। ৭৫ বলে ৮৭ রান করা কাইফ যদিও চাপে পড়ে গিয়েছিলেন, যুবরাজ আউট হওয়ার পরে। বলছিলেন, “একদম থিতু হয়ে গিয়েছিলি তুই। কিন্তু ৫৯ রান বাকি থাকতে তুই আউট হওয়ার পরে ভাবতেও পারিনি আমরা জিতব। সত্যি আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম।”

যুবরাজও সে ম্যাচ থেকে বেশ কিছু মূল্যবান শিক্ষা পেয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, “সচিন পাজিকে রনি ইরানি আউট করার পরে ওরা ভেবেছিল জিতেই গিয়েছে। আমাকে রনি বলেছিল, খুব ভাল সিরিজ খেলেছ। দেশে ফিরে আরও পরিশ্রম করো। কিন্তু আমরা আক্রমণ শুরু করার পরে ওরাও ভেঙে পড়ে। সেই ম্যাচই শিখিয়েছে, কখনও জেতার আগে হাল ছাড়তে নেই।”

যুবরাজ ও কাইফ জুটি ভারতীয় ফিল্ডিংয়েও বড় পরিবর্তন এনেছিল। যুবরাজ বলেছেন, “আমরা যে ধারা শুরু করেছিলাম, তা এখন প্রত্যেকে চালিয়ে যাচ্ছে। মনে আছে, বেঙ্গালুরু আউটফিল্ডে জল ঢেলে কী ভাবে ডাইভিং প্র্যাক্টিস করতাম?” কাইফের উত্তর, “এই স্মৃতিই অমলিন থাকবে।’’

আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজের জন্য মুখিয়ে আছি, বলছেন রোহিত

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy