Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কোচের সাংবাদিক সম্মেলনেও চলল পোগবাদের নাচ

ফ্রানৎস বেকেনবাউয়ার এবং মারিয়ো জাগালোর সঙ্গে একই আসনে বসলেন দেশঁ। ফুটবলার ও কোচ হিসাবে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।

স্বপ্নপূরণ: বিশ্বজয়ী ফ্রান্স। রবিবার লুঝনিকি স্টেডিয়ামে।ছবি:  রয়টার্স

স্বপ্নপূরণ: বিশ্বজয়ী ফ্রান্স। রবিবার লুঝনিকি স্টেডিয়ামে।ছবি:  রয়টার্স

রতন চক্রবর্তী
মস্কো শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৮ ০৫:০৮
Share: Save:

দিদিয়ে দেশঁর সাংবাদিক বৈঠক বন্ধ হয়ে গেল পল পোগবাদের নাচের জন্য। বিশ্বজয়ের প্রায় ঘণ্টা খানেক পর ফ্রান্স ফুটবলের স্বপ্নের সওদাগর দেশঁ এলেন মিডিয়ার সামনে। হঠাৎ দেখা যায় কোচের পিছন পিছন ঢুকে পড়েছে ফ্রান্সের অর্ধেক টিম। তাঁরা এসেই নাচতে শুরু করেন দু’হাত তুলে। সঙ্গে গান। টেবিলের উপরে উঠে পড়েন স্যামুয়েল উমতিতি এবং বঁাজামা পাভা। ছিটকে পড়ে মাইক্রোফোন। দেঁশ বসতে যাচ্ছিলেন চেয়ারে। ছাত্রদের কাণ্ড দেখে তিনি উঠে পড়েন। তারপর হাসতে থাকেন।

দেশঁকে প্রশ্ন করা হয়, ফাইনালে তো আপনাদের দলকে অনেকেই পিছিয়ে রেখেছিলেন? জিতে কী মনে হচ্ছে? বিশ্বজয়ী কোচ বলে দেন, ‘‘কেন আপনারা এ কথা বলছেন জানি না। আমরা তো আগেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আমার দলে ১৪ জনই তরুণ। সব সময় বলেছি আশা ছেড়ো না। আমার ছেলেরা সবসময় ইতিবাচক ছিল।’’

ফ্রানৎস বেকেনবাউয়ার এবং মারিয়ো জাগালোর সঙ্গে একই আসনে বসলেন দেশঁ। ফুটবলার ও কোচ হিসাবে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। দুর্লভ সেই সম্মানের প্রসঙ্গ তুললে তিনি বলে দেন, ‘‘আমি নিজের সম্পর্কে বেশি কিছু বলতে চাই না। ওঁরা অনেক বড় ফুটবলার। খেলোয়াড়রা আমাকে এই জায়গায় এনেছে। সব কৃতিত্ব ওদের।’’ চ্যািম্পয়ন হওয়ার পরে দেশঁ স্বীকার করেন, ‘‘আর্জেন্টিনা ম্যাচ জেতার পরে আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল।’’ উচ্ছ্বাসের ঢেউয়ে ভাসতে থাকা ফ্রান্স ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে এসে অঁাতোয়া গ্রিজম্যান বলে দিলেন, ‘‘কাপটা হাতে নেওয়ার পরেও ভাবছিলাম এটা বিশ্বকাপ তো! অসাধারণ অনুভূতি। এ বার একটা জমকালো পার্টির জন্য অপেক্ষা করছি।’’ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কাপ জেতা এবং ম্যাচের সেরা হওয়ার পরে কী অনুভূতি জানার জন্য। সেখানেই গ্রিজম্যান বলেন, ‘‘ইউরো কাপে আমরা পারিনি। এ বার পেরেছি। অনেক বড় মঞ্চে সফল হয়েছি। ওই কাপটা নিয়ে এতদিন স্বপ্ন দেখতাম। এবার নিশ্চিন্তে ঘুমাবো।’’

সমাপ্তি অনুষ্ঠানে দেখা গেল রোনাল্ডিনহোকে। বক্সে হাজির গতির রাজা ইউসেইন বোল্ট। ছবি: রয়টার্স

ম্যাচের পরে ড্রেসিংরুমে ফিরেই উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছিল ফ্রান্সের ফুটবলারদের। কাপ নিয়ে মিউজিক সিস্টেমে গান বাজিয়ে নাচছিলেন পোগবারা। আর চিৎকার করছিলেন, ‘‘কুড়ি বছর পরে আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।’’ সেই প্রসঙ্গ তোলা হয় গ্রিজম্যানের কাছে। তিনি বলে দেন, ‘‘ওই টিমে অনেক তারকা ছিল। এ বার আমাদের দলে কোনও তারকা ছিল না। দল হিসেবে খেলেছি। ইউরো কাপের পরে দলে নতুন ফুটবলার অনেক এসেছে। সবাই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য একতাবদ্ধ ছিল।’’ পেনাল্টি মারার সময় কী মনে হচ্ছিল? ওটাই তো ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। গ্রিজম্যান বলে দেন, ‘‘মাথা ঠান্ডা রেখেছিলাম। জানতাম এই গোলটা না করতে পারলে সমস্যায় পড়ত টিম।’’ তিনি জানিয়ে দেন, ‘‘ব্যালন ডি‘ওর বা সোনার বল পেলাম না বলে কোনও দুঃখ নেই। বিশ্বকাপ তো পেয়েছি।

আরও পড়ুন: থামল স্বপ্নের দৌড়, বিশ্বকাপে হেরেও মন জিতে ফিরল ক্রোয়েশিয়া

বিশ্বকাপ পাওয়ার জন্য ফ্রান্সের ফুটবলাররা কতটা মরিয়া ছিলেন সেটা বোঝা গিয়েছিল ম্যাচ শেষের পরই। দেঁশর মত আবেগহীন লোকও কাপটা চেয়ে নিয়ে তাতে চুমু খাচ্ছিলেন বারবার। আর তার দলের ফুটবলাররা তো সেটা নিয়ে কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। বৃষ্টির মধ্যে ভিজতে ভিজতেই কাপ নিয়ে দৌড়তে থাকেন ফ্রান্সের সবাই। তারপর সোনালি কাগজের টুকরোগুলো যখন পারিজাত হয়ে পড়ছে মাথায় উপর, তখন তাতে স্নান করতে করতেই সবাই ঢুকে পড়লেন ড্রেসিংরুমে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE