জোর জল্পনা এখন মেয়েটাকে ঘিরে! সোনা, রুপো বা ব্রোঞ্জ আসবে কি না, সে উত্তর পাওয়া এখনও বাকি। কিন্তু হিরের দ্যুতির মতো ঝলমলে একটা ভোর এনে দিয়েছে মেয়েটা।
রিও দে জেনেইরোতে তখন তরুণ্যে মাখামাখি একটা সন্ধ্যা ছিল। কিন্তু ভারতে তখন ভোর হচ্ছে। ভোরের প্রথম আলোটা দেশের যে প্রান্তকে স্পর্শ করে, সেই পূর্ব প্রান্তেরই একটা মেয়ে ভারতীয় জিমন্যাস্টিক্সের ইতিহাসে নতুন ভোর আনলেন। প্রথম ভারতীয় জিমন্যাস্ট হিসেবে অলিম্পিক্সের ফাইনালে প্রবেশ করলেন ত্রিপুরার দীপা কর্মকার। এক অসামান্য মাইলফলকে নিজে তো পৌঁছলেনই। পৌঁছে দিলেন ত্রিপুরাকে, বাঙালিকে, ভারতের মেয়েদেরকে, ভারতকেও।
অভিনন্দন দীপা! অনেক অভিনন্দন আপনাকে! এখনও পথটা পুরোপুরি অতিক্রান্ত নয় ঠিকই। চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছনোর লড়াইটা এখনও বাঁকি। অলিম্পিক জিমন্যাস্টিক্সের ভিকট্রি স্ট্যান্ডের মাথায় তেরঙা পতাকাটা উড়বে কি না, এখনও নিশ্চিত নয়। স্বর্ণ, রজত বা ব্রোঞ্জ পদক আপনার গলায় ঝুলবেই, তেমনটাও বলা যাচ্ছে না এখনই। কিন্তু এক বুক গর্ব নিয়ে বলা যাচ্ছে, অলিম্পিক্স জিমন্যাস্টিক্সের সুদীর্ঘ ইতিহাসে ভারত এক সম্পূর্ণ নতুন অধ্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে আজ।
বাঙালি হিসেবে গর্বের উপাখ্যানটায় একটু বেশিই ভাগ দাবি করতে ইচ্ছা করছে। তবে এ গরিমার শরিক গোটা দেশই। তাই অনেক শুভেচ্ছা রাখছি— গরিমার পরিমাণটা এতটাই বাড়িয়ে নিয়ে দেশে ফিরুন, যাতে কারও ভাগে কম না পড়ে।
সোনার টুকরো হয়ে ফিরুন, তেমনই প্রত্যাশা থাকবে। তবে তা হোক বা না হোক, দীপা এখন এ দেশের হিরের টুকরো মেয়ে। কারণ, রিও অলিম্পিক্সের আসরে একটা ভল্ট বা দু’টো সমার সল্ট দিয়ে দীপা কর্মকারের উল্লম্ফনকে মাপা যাবে না। সুদূর প্রান্তবর্তী ত্রিপুরার নিতান্ত এক মধ্যবিত্ত গৃহস্থালী থেকে অলিম্পিক্সের আসর পর্যন্ত যে
যাত্রা, সেটাই আসল উল্লম্ফন। জীবনের এই অনবদ্য জয়গানেই দীপা কর্মকারকে ঘিরে আজ অজস্র হীরকদ্যুতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy