Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

‘শুরু থেকে ঠিক করি পাল্টা আক্রমণ করব’

ক্যাপ্টেন দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরছেন হার্দিক পাণ্ড্যদের। ইয়ন মর্গ্যানের মুখ দেখে মনে হচ্ছে সাড়ে তিনশো তোলার পরেও হারতে হল, এটা যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না। এমসিএ স্টেডিয়ামে ভারতীয় ক্যাপ্টেনের নাম ধরে চিৎকার ভুভুজেলাকেও হার মানাচ্ছে।

অভিষেক-উৎসব। পুণেয় বিরাট।  ছবি: রয়টার্স

অভিষেক-উৎসব। পুণেয় বিরাট। ছবি: রয়টার্স

সংবাদ সংস্থা
পুণে শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:৪৭
Share: Save:

ক্যাপ্টেন দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরছেন হার্দিক পাণ্ড্যদের।

ইয়ন মর্গ্যানের মুখ দেখে মনে হচ্ছে সাড়ে তিনশো তোলার পরেও হারতে হল, এটা যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না।

এমসিএ স্টেডিয়ামে ভারতীয় ক্যাপ্টেনের নাম ধরে চিৎকার ভুভুজেলাকেও হার মানাচ্ছে।

টুকরো কোলাজগুলো জুড়লে একটা ছবিই ভেসে উঠছে— বিরাটোচিত।

বিরাট কোহালির ওয়ান ডে ক্যাপ্টেনের অভিষেক হল মহারাষ্ট্রে মহাজয়ে।

এক সময় ৬৩-৪ হয়ে যাওয়ার পরও ভেবেছিলেন ১১ বল বাকি থাকতে জিতবেন? কোহালি যা বললেন সেটা তাঁর পক্ষেই বলা সম্ভব, ‘‘হ্যাঁ, তখনও বিশ্বাস ছিল জিতব। যখনই দেখলাম কেদার দারুণ স্ট্রাইক নিচ্ছে ওকে বললাম আমরা ১৫০-৪ দ্রুত তুলে নিলে কিন্তু ইংল্যান্ড চাপে পড়ে যাবে। সেটাই হল। ঠিক করেছিলাম শুরু থেকেই আক্রমণ করব।’’

৩৫১ টার্গেট তাড়া করতে নেমে এক সময় ৬৩-৪ হয়ে যাওয়ার পরও ভারত জিতল তিন উইকেটে। কেদার যাদব (১২০) আর কোহালির সেঞ্চুরির (১২২) সাহায্যে। তাও ইনিংসের ২৩ নম্বর ছক্কায়। গোটা ম্যাচে উঠল সাতশোর বেশি রান।

সকাল দেখে যদি গোটা দিনের মেজাজটা বোঝা যায় তা হলে ভারত-ইংল্যান্ডের প্রথম ওয়ান ডে দেখে বলাই যায় তিন ম্যাচের সিরিজে গোলাগুলির বন্যা বয়ে যাবে।

সঙ্গে ধন্দে পড়ে যেতে হবে একটা জিনিস নিয়ে। বিরাট কোহালিকে ‘কিংগ অব চেজ’ মানে ‘রান তাড়া করার সম্রাট’ বলার পাশে আরও কোনও জুতসই বিশেষণ তাঁর নামের পাশে বসতে পারে কি না!

২৮ বছর বয়েসেই ওয়ান ডে কেরিয়ারের ২৭ নম্বর সেঞ্চুরির পাশাপাশি ওয়ান ডে-তে রান তাড়া করতে নেমে ১৭টা সেঞ্চুরি করে কোহালি ছুঁয়ে ফেললেন সচিনকে। যার মধ্যে সচিন ১৪টা ম্যাচে ভারতকে জিতিয়েছিলেন। বিরাট জেতালেন ১৫ ম্যাচে। বিরাট অবশ্য এ সব নিয়ে ভাবছেনই না। ম্যাচ নিয়ে বলছেন, ‘‘প্রতিপক্ষকে জবাব দেওয়ার সবচেয়ে ভাল উপায় হল পাল্টা আক্রমণ করা। এই জন্যই আমি তিনে নামি। চেয়েছিলাম একটা বড় পার্টনারশিপ করতে। ম্যাচটা জিততে।’’

পুণে কিন্তু রবিবার শুধু বিরাটের আগ্রাসন নয়, সঙ্গে দেখল সিনিয়রের জুনিয়রকে পথ দেখিয়ে দেওয়া, তাতানোও। যখন তিনি কেদারের সঙ্গে পার্টনারশিপে জুনিয়রকে বারবার খুচরো রান নেওয়ার জন্য তাড়া দিচ্ছিলেন। শট নিতে তাতাচ্ছিলেন। ‘‘কেদারের ক্ষমতা আছে। আগেও সেটা আমরা দেখেছি। বাইশ গজে নেমে শেখার চেয়ে বড় কিছু হয় না। ওর মধ্যে একটা বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। চাইছিলাম সেটা বেরিয়ে আসুক। আজ এমন কিছু শট খেলেছে কেদার, উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে দেখলেও আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না। কেদারকে শুভেচ্ছা। ওর পরিবারও আজ মাঠে রয়েছে,’’ বললেন টিম ইন্ডিয়ার নতুন ওয়ান ডে ক্যাপ্টেন।

বিরাটের হাতেই তাদের দু’শো পার্টনারশিপটার রিমোট ছিল। ক্যাপ্টেন দেখিয়ে দিচ্ছিলেন কেদারকে, কখন রান তাড়া করতে হবে আর কখন মারতে হবে বাউন্ডারি। আর কখন ইংল্যান্ডকে বুঝিয়ে দিতে হবে লড়াইটা সহজ হবে না। বিরাট বললেন, ‘‘আমরা শুধু সিঙ্গলস নিয়ে তো জিততে পারতাম না। তা ছাড়া প্রতিপক্ষকেও বুঝিয়ে দিতে হত যে আমরা বিশ্বাস করি ম্যাচটা জিতব।’’

আর কেদার যাদব? ১৫৭ স্ট্রাইক রেটে পুণের মাঠে বিস্ফোরণ ঘটানো নায়ককে ভারতের ওয়ান ডে দলের নতুন ‘বুলেট’ বলা হচ্ছে। কী ভাবে এই মারকাটারি ইনিংসের মেজাজ পেলেন? ‘‘দেশের জয়ে অবদান রাখতে পারার চেয়ে গর্বের আর কী হতে পারে। বিরাটকে দেখেই শিখেছি কী ভাবে রান তাড়া করতে হয়। এত দিন বিরাটের ইনিংস মাঠের বাইরে থেকে দেখতে হত। আজ সবচেয়ে ভাল জায়গা থেকে দেখাটা আমার পরম প্রাপ্তি,’’ বললেন কেদার।

তবে স্টেডিয়ামের সবচেয়ে ভাল সিটে বসে বিরাটের ইনিংস দেখার জন্য কেদারকে কষ্টও কম করতে হয়নি। ‘‘বিরাটের সঙ্গে গতিতে তাল রেখে ক্রিজে দৌড়নো সহজ কাজ নয়। আমায় আরও ভাল চেষ্টা করতে হবে এই জায়গাটায়,’’ বলে গেলেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ কেদার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: ইংল্যান্ড ৫০ ওভারে ৩৫০-৭ (জেসন ৭৩, রুট ৭৮, স্টোকস ৬২, পাণ্ড্য ২-৪৬, বুমরাহ ২-৭৯), ভারত ৪৮.১ ওভারে ৩৫৬-৭ (কোহালি ১২২, কেদার ১২০, যুবরাজ ১৫, ধোনি ৬, পাণ্ড্য ৪০ নঃআঃ, অশ্বিন ১৬ নঃআঃ, জেক ৩-৬৭)

অন্য বিষয়গুলি:

Virat Kohli India Vs England Pune Kedar Jadhav
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE