Virender Sehwag and Aarti Ahlawat are enjoying their rocking married life dgtl
cricket
জেটলির বাসভবনে শৈশবের খেলার সঙ্গীর সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন সহবাগ
প্রোপোজ করার ৩ বছর পরে তাঁদের সম্পর্কের কথা বাড়িতে জানান সহবাগ। দুই পরিবারই তাঁদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি প্রথমে। কিন্তু সহবাগ এবং আরতি জানিয়ে দেন অন্য কাউকে তাঁরা বিয়ে করবেন না।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২০ ১৪:৩৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২১
দিল্লির নজফগড়ে যৌথ ব্যবসায়ী পরিবারে নিজের এবং তুতো ভাইবোন মিলিয়ে ১৬ জনের সঙ্গে বড় হওয়া। বড় পরিবারে আত্মীয় পরিজনের আসা যাওয়া লেগেই থাকত। আর থাকত বছরভর লৌকিকতা। সে রকমই এক বার কোনও এক আত্মীয়ের বিয়েতে খেলার সঙ্গী হয়েছিল কুটুমবাড়ির এক বালিকা। শৈশবের বন্ধুত্ব পেরিয়ে তারুণ্যের প্রেমও তাঁর সঙ্গেই। সেই আরতি আজ বীরেন্দ্র সহবাগের জীবনসঙ্গিনী।
০২২১
আটের দশকে এক তুতো দাদার বিয়ে উপলক্ষে বরযাত্রী গিয়েছিলেন সহবাগ। বিয়েবাড়িতেই আলাপ আরতির সঙ্গে। আরতির এক আত্মীয়া ছিলেন বিয়ের পাত্রী। সে সময় সহবাগের বয়স ছিল ৭। অন্য দিকে আরতি তখন ৫ বছরের বালিকা। বিয়ের অনুষ্ঠানে আরতি ছিলেন সহবাগের দুষ্টুমি আর খেলার সঙ্গী।
০৩২১
এর পর বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠানে প্রায়ই দেখা হতে থাকে সহবাগ এবং আরতির। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অন্য দিকে ঘুরতে থাকে তাঁদের সম্পর্ক। ক্রমশ সহবাগ বুঝতে পারেন আরতির প্রতি তাঁর বিশেষ অনুভূতি।
০৪২১
১৪ বছর ধরে একে অন্যকে চেনার পরে আরতিকে প্রোপোজ করেন ২১ বছর বয়সি সহবাগ। সহজ সরল সহবাগের প্রোপোজ করার ধরনও ছিল একদম সাধারণ। কোনও নাটকীয়তা ছাড়া খুব সাধারণ ভাবে তিনি প্রোপোজ করেন। উত্তরে ‘হ্যাঁ’ বলতে সময় নেননি আরতিও।
০৫২১
শুরুতে সহবাগ এবং আরতির প্রেমপর্ব ছিল সম্পূর্ণ গোপন। প্রোপোজ করার ৩ বছর পরে তাঁদের সম্পর্কের কথা বাড়িতে জানান সহবাগ। দুই পরিবারই তাঁদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি প্রথমে। কিন্তু সহবাগ এবং আরতি জানিয়ে দেন অন্য কাউকে তাঁরা বিয়ে করবেন না।
০৬২১
তাঁদের জেদের কাছে অবশেষে হার মানতে বাধ্য হয় দুই পরিবার। ২০০৪-এর ২২ এপ্রিল বিয়ে হয়ে যায় বীরেন্দ্র সহবাগ এবং আরতি অটওয়ালের।
০৭২১
দিল্লিতে অরুণ জেটলির বাসভবনে সাতপাকে বাঁধা পড়েছিলেন সহবাগ-আরতি। সম্পূর্ণ ঘরোয়া অনুষ্ঠানে তাঁদের বিয়ে হয়। দুই পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব ও পরিচিতরাই ছিলেন বিয়ের অনু্ষ্ঠানে আমন্ত্রিত।
০৮২১
দুঁদে আইনজীবী, অভিজ্ঞ রাজনীতিকের পাশাপাশি আদ্যন্ত ক্রিকেটপ্রেমীও ছিলেন প্রয়াত জেটলি। ক্রিকেট প্রশাসক
হিসেবে এক দশকেরও বেশি সময় ছিলেন দিল্লি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। সুসম্পর্কের খাতিরে তিনিই প্রস্তাব দিয়েছিলেন সহবাগের বাবাকে যেন তাঁর বাংলোয় বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। সে সময় দিল্লির ওই বাংলোয় তিনি থাকছিলেন না। তাঁর উদ্যোগেই বাংলোয় বিয়ের প্রস্তুতি করা হয়। তবে শেষ অবধি নির্বাচনী প্রচারের জন্য বিয়ের অনুষ্ঠানে থাকতে পারেননি জেটলি স্বয়ং।
০৯২১
হরিয়ানভি সব রীতিনীতি মেনে বিয়ে হয়েছিল সহবাগ এবং আরতির। পরে দিল্লির এক পাঁচতারা হোটেলে জমকালো পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল।
১০২১
২০০৭ সালে সহবাগ-আরতির প্রথম সন্তান আর্যবীরের জন্ম। ৩ বছর পরে জন্ম ছোট ছেলে বেদান্তের।
১১২১
আরতি যখন প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হয়েছিলেন, তখনও তাঁর প্রেমিক ‘বীরেন্দ্র সহবাগ’ হননি। সবে সুযোগ পেয়েছেন জাতীয় দলে। তার পর থেকে জীবনের সব ওঠাপড়ায় সহবাগের পাশে থেকেছেন আরতি।
১২২১
কৃষ্ণন এবং কৃষ্ণা সহবাগের ছেলে বীরুর ক্রিকেট খেলার শখ অবশ্য ছোটবেলা থেকেই। ৪ ভাইবোনের মধ্যে তৃতীয় বীরুর জন্ম ১৯৭৮ সালের ২০ অক্টোবর। ছেলের শখপূরণ করতে শৈশবেই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন তাঁর বাবা।
১৩২১
কিন্তু ক্রিকেট খেলতে গিয়ে শুরুতেই দাঁত ভেঙে বসলেন সহবাগ! তখন তাঁর বয়স মাত্র ১২। বাড়িতে বাবা বললেন, ক্রিকেট খেলা বন্ধ। খেলা চালিয়ে যেতে মায়ের দ্বারস্থ হন সহবাগ। শেষে স্ত্রীর কথায় রাজি হলেন সহবাগের বাবা। ক্রিকেটার জীবনে ছেদ পড়ল না সহবাগের।
১৪২১
অমরনাথ শর্মার প্রশিক্ষণে প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতেন সহবাগ। ১৯৯৭-৯৮ মরসুমে সুযোগ পান প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। ঘরোয়া ক্রিকেটে ঝোড়ো পারফরম্যান্সে জাতীয় দলের দরজা খুলতে সময় লাগেনি।
১৫২১
প্রথম ওয়ান ডে খেলেন ১৯৯৯ সালের এপ্রিলে, পাকিস্তানের বিপক্ষে। দুই বছর পরেই টেস্ট অভিষেক। প্রতিপক্ষ, দক্ষিণ আফ্রিকা। এক দশকের বেশি বিস্তৃত কেরিয়ারে সহবাগ ১০৪ টেস্টে মোট রান করেছেন ৮৫৮৬। সর্বোচ্চ ৩১৯। উইকেট পেয়েছেন ৪০টি।
১৬২১
২৫১টি ওয়ান ডে-তে সহবাগের সংগ্রহ মোট ৮২৭৩। সর্বোচ্চ ২১৯। উইকেট শিকারের সংখ্যা ৯৬টি। আইপিএলেও তাঁর পারফরম্যান্স বেশ ভাল। তিনি বরাবর খেলেছেন দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে। ৯৬টি আইপিএল ম্যাচে তিনি মোট ২৬২৯ রান করেছেন।
১৭২১
শেষের দিকে ফর্মের ধারা ব্যাহত হয়েছিল তাঁরও। তবে কেরিয়ারকে দীর্ঘ করেননি তিনি। সবরকমের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এবং আইপিএল থেকে তিনি অবসর নেন ২০১৫ সালে।
১৮২১
ক্রিকেট পরবর্তী অবসর জীবনের পুরোটাই জুড়ে রয়েছে তাঁর পরিবার। পাশাপাশি তিনি মন দিয়েছেন ব্যবসাতেও। ২০১১ সালে হরিয়ানাতে একটি স্কুল তৈরি করেছেন সহবাগ। স্কুলের উদ্বোধন করেন তাঁর মা।
১৯২১
সহবাগ নিজে কোনওদিন পড়াশোনায় ভাল ছিলেন না। তবে তাঁর বাবার স্বপ্ন ছিল, পরবর্তী প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। হরিয়ানায় ২৩ কাঠা জমির উপর স্কুল তৈরি করে বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছেন ‘নজফগড়ের নবাব’।
২০২১
দিল্লির বাসিন্দা হলেও আদতে সহবাগের পরিবার হরিয়ানার। তাই স্কুল তৈরির সময় তিনি বেছে নিয়েছেন হরিয়ানাকেই। তাঁর স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি সমান গুরুত্ব পায় খেলাধূলা ও শরীরচর্চা। দেশকে দক্ষ ক্রীড়াবিদ উপহার দেওয়াও লক্ষ্য এই প্রাক্তন ক্রিকেটারের।
২১২১
ক্রিকেট মাঠের মতো সোশ্যাল মিডিয়াতেও জনপ্রিয় সহবাগ। ক্রিকেটার হিসেবে কী পেলেন, কী পেলেন না, সেই হিসেব কষতে বসেন না। প্রতি মুহূর্তই তাঁর কাছে উপভোগ্য।