প্রত্যয়ী: রাজারহাটে এক অনুষ্ঠানে বিজেন্দ্র সিংহ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
যে কোনও চ্যালেঞ্জ নিতে তিনি যে ভালবাসেন, তা মঞ্চে উঠেই জানিয়ে দিয়েছিলেন সভাগৃহে হাজির খুদে শ্রোতাদের। বাড়িতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, অলিম্পিক্স, এশিয়ান গেমসের পদক রয়েছে তাঁর। বিপাশা বসু তাঁর গুণমুগ্ধ। অভিনয় করেছেন বলিউডেও। নতুন চ্যালেঞ্জের জন্যই আপাতত তিনি পেশাদার বক্সিংয়ে। সেখানেও শেষ দশ লড়াইয়ের প্রতিটিই জিতেছেন সেই
বিজেন্দ্র সিংহ।
পেশাদার এই জাঠ বক্সারের এ বার নতুন চ্যালেঞ্জ, খেলার শহর কলকাতায় পেশাদার বক্সিং ম্যাচ আয়োজন করার। মঙ্গলবার সকালে কলকাতায় এসে তাঁর ঘোষণা, ‘‘কলকাতা খেলার শহর। ফুটবল, ক্রিকেট, হকির অনেক তারকাই জন্ম নিয়েছেন এই শহরে। এখানকার মানুষও খেলা ভালবাসে। তাই এ বার আমার লক্ষ্য, কলকাতায় পেশাদার বক্সিংয়ের কোনও ম্যাচ আয়োজন করা। কথাবার্তা চলছে।’’
মঙ্গলবার সকালেই কলকাতা এসে চলে গিয়েছিলেন নিউটাউন স্কুলে। উদ্দেশ্য, সেখানদার পড়ুয়াদের মানসিক ভাবে পোক্ত হওয়ার পথ দেখানো। গত ১৩ জুলাই লন্ডনের কপার বক্স এরিনায় লি মারখামের বিরুদ্ধে পেশাদার বক্সিংয়ের লড়াই ছিল বিজেন্দ্রর। কিন্তু লি অসুস্থ হয়ে পড়ায় দেশে ফিরে এসেছেন তিনি। সেই লড়াই হতে পারে সেপ্টেম্বরে। সেই অবকাশেই তাঁর কলকাতা সফর।
এ দিন দুপুরে নিউটাউন স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের তাঁর প্রথম পরামর্শ, ‘‘মজায় থাকো, খেলাধুলো কর। পড়াশোনাতেও ফাঁকি দেওয়া চলবে না। শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ থাকলে সাফল্য দরজায় কড়া নাড়বেই।’’
মিডলওয়েট বিভাগে এশিয়ান গেমসে সোনাজয়ী বক্সারকে পেয়েই ধেয়ে আসে ছাত্রছাত্রীদের প্রশ্নবাণ। ছাত্র রুদ্র চট্টোপাধ্যায় জানতে চেয়েছিল, কেন পেশাদার বক্সিংয়ে এলেন? বেজিং অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জজয়ী বিজেন্দ্রর চটজলদি জবাব, ‘‘জীবনটা খুব ছোট। সব সময় নতুন কিছু করতে চেয়েছি। তাই পেশাদার বক্সিংয়ে চলে এসেছি।’’ এর পরে চ্যাম্পিয়ন বক্সারের দিকে উড়ে আসে একের পর এক প্রশ্ন। যার উত্তরে বিজেন্দ্র বলতে থাকেন, ‘‘বক্সার না হলে হয়তো সেনাবাহিনীতে যোগ দিতাম। কারণটা অবশ্যই আমার উচ্চতা।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘এম টিভি শো, বলিউডে অভিনয় অনেক কিছুই করেছি। কিন্তু শেষে বুঝেছি, বক্সিংটাই আমি ভাল করতে পারি। সেটা নিয়েই তাই পড়ে রয়েছি। দিনে ছ’-সাত ঘণ্টা কঠোর অনুশীলন করি। কোনও ফাঁকি নেই।’’
উঠল, রাশিয়ায় সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপ নিয়ে প্রশ্নও। যার উত্তরে বিজেন্দ্রর মুখে খেলে যায় হাসি। বলে দেন, ‘‘বিশ্বকাপে আমি ইংল্যান্ডের সমর্থক। কারণ ওই দেশে আমি অনুশীলনের জন্য বেশির ভাগ সময় থাকি। তাই ওদের সমর্থন করি। হ্যারি কেন আমার পছন্দের ফুটবলার। তবে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের পল পোগবাওকেও আমার ভাল লাগে। শেষ পর্যন্ত কাপটা পোগবা পাওয়ায় আমি খুশি।’’
সামনেই এশিয়ান গেমস। সেখানে বক্সিংয়ে ভারতের সম্ভাবনা নিয়েও প্রশ্ন উঠতেই বিজেন্দ্র মজা করে বলে দেন, ‘‘আমি যেমন পেশাদার বক্সিংয়ে এ পর্যন্ত দশে দশ। সে রকম আসন্ন এশিয়ান গেমসেও ভারতীয় বক্সাররা দশে দশ-এর মতো পারফর্ম করবে।’’
আর সদ্য জুনিয়র বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনাজয়ী ভারতীয় অ্যাথলিট হিমা দাসের কথা উঠতেই বিজেন্দ্রর মন্তব্য, ‘‘ওঁকে শুধু অভিনন্দন জানালেই হবে না। আর্থিক সহায়তাও যাতে হিমা আরও এগিয়ে যেতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy