Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Sports News

আটে আট করে বিশ্বখেতাব বিজেন্দ্র ‘নকআউট’ সিংহের

পেশাদারি মঞ্চে অপরাজিতই থাকলেন বিজেন্দ্র সিংহ। শনিবাসরীয় লড়াইয়ে মিইয়ে গেল প্রতিপক্ষ ফ্রান্সিস চেকার সব হুঙ্কার। দশ মিনিটেরও কম সময়ে আটে আট করলেন ‘নকআউট সিংহ’। পেশাদার হওয়ার পর থেকে এক বারও হারেননি তিনি।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:০৭
Share: Save:

পেশাদারি মঞ্চে অপরাজিতই থাকলেন বিজেন্দ্র সিংহ। শনিবাসরীয় লড়াইয়ে মিইয়ে গেল প্রতিপক্ষ ফ্রান্সিস চেকার সব হুঙ্কার। দশ মিনিটেরও কম সময়ে আটে আট করলেন ‘নকআউট সিংহ’। পেশাদার হওয়ার পর থেকে এক বারও হারেননি তিনি। নয়াদিল্লির ত্যাগরাজ স্টেডিয়ামের ভিড়ে ঠাসা মঞ্চে তানজানিয়ার চেকাকে হারিয়ে ডব্লিউবিও এশিয়া প্যাসিফিক সুপার মিডলওয়েট খেতাব ধরে রাখলেন বিজেন্দ্র।

স্টেডিয়ামে ঢোকার মুখে মাইকে বাজছিল বিজেন্দ্রর প্রিয় ‘সিং ইজ কিং’ গানের সুর। তবে এ দিন প্রাক্তন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন চেকার কাছে নিজের মুকুট ধরে রাখতে পারেন কি না তা নিয়ে বেশ সংশয় ছিল দেশীয় দর্শকদের মনে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত সেই সিংহরাজাই তাঁর আসন ধরে রাখলেন। আর তা ধরে রাখলেন অনায়াসেই। ৩৪ বছরের চেকাকে একেবারে নাস্তানাবুদ করেই পেশাদারি বক্সিং দুনিয়ায় নিজের আধিপত্য বজায় রাখলেন ২০০৮-এর অলিম্পিক্স ব্রোঞ্জ জয়ী বিজেন্দ্র।

আরও পড়ুন

‘মারিনকে হারিয়ে সিন্ধু উট থেকে জিরাফ হল’

বক্সিং রিংয়ের মতোই এ দিন দর্শকের আসনেও তারকার ঝলকানি। পাঁচ বারের ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন মেরি কম থেকে শুরু করে অলিম্পিক্স কুস্তিতে পদক জয়ী সুশীল কুমার, যোগেশ্বর দত্তের মতো তারকাদের ভিড় যেমন ছিল তেমনই ছিল রাজনীতির মঞ্চের হেভিওয়েটরাও। বিজেপি মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু থেকে বাবা রামদেবও। তবে এত তারকাদের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি হাততালি কুড়োলেন সেলিব্রিটি যোগগুরু বাবা রামদেবই। সুশীল কুমারের সঙ্গে স্টেডিয়ামে পা রাখতেই অটোগ্রাফের ভিড়। নিজস্বী তোলার আবদার। হাত ছোঁয়ার আবেদন। রামদেব সবই মেটালেন হাসিমুখে। তবে দর্শক মাতাতে পিছিয়ে ছিলেন না বিজেন্দ্রও। তিনি ঢুকতেই ফের এক প্রস্থ চিৎকারে ফেটে পড়ল গোটা স্টেডিয়াম। আর এই স্টার ইমেজ শেষ পর্যন্ত ধরে রাখলেন হরিয়ানার বক্সার।

দশ রাউন্ডের বাউট দিয়ে ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, বিজেন্দ্রের মস্তানিতে তা খতম তিন রাউন্ডেই। না! তিন রাউন্ডও নয়। বিজেন্দ্রর সৌজন্য তৃতীয় রাউন্ডও শেষ হল মাত্র ১ মিনিট ৫৬ সেকেন্ডেই। প্রথম থেকেই পাল্লা ভারী ছিল বিজেন্দ্রর। শুরুতেই দ্রুত নড়াচড়া করছিলেন চেকা। কিন্তু, বিজেন্দ্র একের পর এক আক্রমণ সামলালেন নিখুঁত ভঙ্গিতে। রিংয়ের পাশাপাশি এগিয়ে-পিছিয়ে প্রতিপক্ষের আক্রমণকে ভোঁতা করে দিচ্ছিলেন তিনি। চেকার প্রতিটা জ্যাব-হুক ব্লক করলেন পেশাদারি দক্ষতায়। পায়ের কাজেও চেকার থেকে এগিয়ে রইলেন মাইলখানেক।

প্রথম দু’রাউন্ডের পরেই বোঝা যাচ্ছিল দিনটা ভিয়ানির ছেলের। শেষমেশ তা-ই হল। প্রতিপক্ষের থেকে লম্বা হওয়ায় এ দিন দারুণ ভাবে ‘রিচ অ্যাডভান্টেজ’ কাজে লাগালেন বিজেন্দ্র। প্রতিটা ঘুষি ক্লিন ল্যান্ডিং করল চেকার গায়ে। অন্য দিকে, নিজের ব্যালান্স রাখতেই বেশ নাজেহাল দেখাল চেকাকে। তৃতীয় রাউন্ডে তো তানজানিয়ার বক্সারকে একেবারে দাঁড়াতেই দিলেন না। ১ মিনিট ৫৬ সেকেন্ড গড়াতে না গড়াতেই চেকার মুখ দিয়ে রক্ত পড়তে শুরু করল। সে সময় এক বার নিজের ট্রেনার আর টিমের দিকে তাকিয়ে ইঙ্গিতও দিলেন বিজেন্দ্র। খেতাব তারই হচ্ছে! আর হলও তা-ই। রেফারি ঘোষণা করলেন, টেকনিক্যাল নকআউটে মুকুট অক্ষত রেখেছেন বিজেন্দ্র ‘নকআউট’ সিংহ।

ম্যাচের শেষে স্বাভাবিক বিনয় বজায় রেখেই বিজেন্দ্র বলেন, “ম্যানচেস্টারে দু’মাসের ট্রেনিং কাজে খুব এসেছে। এই খেতাবি লড়াইয়ের জন্য সে সময় প্রচণ্ড খেটেছি।” বেশি কথার যে মানুষ তিনি নন। তা জানিয়ে বিজেন্দ্রর আপার কাট, “ম্যাচের আগে চেকা এত বড় বড় কথা বলেছিল, তবে আমার হাতের ঘুষিতেই বিশ্বাস রয়েছে, কথায় নয়!”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE