অভিনব দৃশ্য। সুনীল নারিনের হাতে ব্যাট। মঙ্গলবার কেকেআর প্র্যাকটিসে।
‘সুলতান অব সুইং’ কেন কে জানে একটু চিন্তায়। কোথাও গিয়ে ওয়াসিম আক্রমের মনে হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়ন টিমটা একটু আলাদা। প্রাজ্ঞ ব্র্যাড হগ-কে ধরে টিমে তিন জন স্পিনার। আর হায়দরাবাদের উইকেট নাকি পেসারের চেয়ে স্পিনারের কথা শুনছে বেশি। বুধবার নাকি স্পিন বনাম স্পিন হবে।
দু’টো টিমলিস্ট পাশাপাশি রাখলে যদিও চিন্তাটা বাড়াবাড়ি মনে হতে পারে। আইপিএল সেভেন থেকে যে সব টিমকে ‘পদপিষ্ট’ করে এগোতে এগোতে যাচ্ছে কেকেআর, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস থেকে ম্যাড ম্যাক্সের কিংস ইলেভেন পর্যন্ত যেখানে ‘বশ্যতা’ স্বীকার করেছে, সেখানে একটা ব্র্যাড হগ আর একটা মিচেল মার্শের পারথ স্কর্চার্স নিয়ে কত আর দুশ্চিন্তা সম্ভব?
এবং বুধবারের যুযুধান দুই টিমের বহিরঙ্গেও কোনও টেনশনের খোঁজ এ দিন অন্তত পাওয়া গেল না। ভুল হল। বলা ভাল, আদৌ যে এক ভূখণ্ডের চ্যাম্পিয়নের সঙ্গে অন্য ভূখণ্ডের চ্যাম্পিয়ন চব্বিশ ঘণ্টা পর যুদ্ধে নামছেssss সেটাই দেখে বোঝা গেল না। গনগনে কেন, ন্যূনতম আঁচও নেই। এমনিতেই আইপিএলের উত্তেজনার সঙ্গে চলতি টুর্নামেন্টের টিআরপি মেলাতে বসা বিরিয়ানির পরে শুক্তো চেখে দেখার মতো। প্রতিদ্বন্দ্বী পরাক্রমী হলে তবু একটা ব্যাপার থাকে। এখানে সে সবের কোনও কাহিনি নেই। বরং প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলীয় শক্তির কথাবার্তা বা ধরনধারণে মনে হবে টুর্নামেন্ট জয় নয়, সফরে সম্প্রীতির মেজাজটা ধরে রাখতে তারা বেশি আগ্রহী।
পারথ স্কর্চার্স বলে দিচ্ছে, চ্যাম্পিয়ন হলে ভাল। কিন্তু টিমের বৃহত্তর লক্ষ্য হচ্ছে দেশকে ভাল কিছু প্লেয়ার উপহার দেওয়া। যারা অস্ট্রেলিয়ার ভবিষ্যৎ লগ্নি হতে পারবে। হগকে আবার দেখা গেল রবিন উথাপ্পা বা গৌতম গম্ভীরের ব্যাটিং ফর্ম নিয়ে যতটা ভাবছেন, তার চেয়ে অনেক বেশি তাঁর চিন্তা কুলদীপ যাদবের নামের উচ্চারণ নিয়ে! কুলদীপ তাঁর থেকে ‘রং ওয়ান’-টা ধার নিতে চান শুনে আবার আকাশ থেকে পড়লেন, “তাই নাকি? ও তো রং ওয়ানটা আমার চেয়ে ভাল করে!”
সাংবাদিক বৈঠকে আক্রম। ছবি: পিটিআই
কেকেআর সংসারে আবার নানাবিধ রং। কোথাও আন্দ্রে রাসেলের সঙ্গে টানা ইয়ার্কি চালিয়ে যাচ্ছেন টিমের অন্যতম কোচ ডব্লিউ ভি রামন। বিনয় কুমারকে প্রচণ্ড এক শটে রাসেল উড়িয়ে দিয়ে ‘নাও, এটা শিওর ছয়’ বলা মাত্র ক্যারিবিয়ান তারকাকে রামন পাল্টা দিলেন: শোনো, তুমি ব্যাটিং আর আম্পায়ারিং দু’টো একসঙ্গে করতে পারো না। বরং তোমার টার্গেট ৬ বলে ১৫, করে দেখাও! কোথাও আবার চায়নাম্যান কুলদীপকে নিয়ে টিম মোহাচ্ছন্ন। কেকেআরের ‘নেক্সট বিগ থিং’ এখনই বলে দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। চোট-আঘাত বা অসুস্থতার খবর? নেই। মণীশ পাণ্ডের জ্বর সেরে গিয়েছে। এমনকী সুনীল নারিনকে কী ভাবে প্রতিপক্ষের সামলানো উচিত, সেটাও তো কেকেআর বলে দিল! অতীতে যে ভাবে মুথাইয়া মুরলীধরনকে সামলাত টিমগুলো, নারিনের ক্ষেত্রেও স্ট্র্যাটেজি এক হওয়া উচিত। আক্রমণ নয়, চার ওভারে কুড়ি তোলো, উইকেট দিও না। শ্লেষাত্মক ভাবে প্রতিপক্ষকে আগাম শোনানো হল, যে স্পিনারকে বুঝতেই পারো না, তাকে মারতে যাওয়ার দরকারটা কী?
এমন টগবগে আত্মবিশ্বাসের আবহে তা হলে চিন্তা ঢোকে কী ভাবে? কেকেআরের বোলিং কোচ আক্রম বললেন, “আমরা ধরে নিতে পারি না যে, ভাল খেলছি বলে জিতে বসে আছি। গ্রুপ টেবলে এক নম্বরে থাকতে হবে। যে কেউ এখনও সেমিফাইনাল যেতে পারে।”
ট্রফি অধরা বলে টেনশন? ক্লিন সুইপের রেকর্ড বাড়ানোর চিন্তা?
সম্ভব। আজ জিতলে টুর্নামেন্ট সেমিফাইনাল, আজ জিতলে ১২-০, দেবীপক্ষের সূচনায় কেকেআর-সাফল্যের ‘এক ডজন গপ্পো’!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy