গুয়াম ২(ব্র্যান্ডন, ট্রাভিস) : ভারত ১ (সুনীল)
সুনীল ছেত্রী গোল করেই চলেছেন। ভারতের ভাগ্য কিন্তু তাতেও খুলছে না।
ওমানের পর গুয়ামের সঙ্গেও প্রাক বিশ্বকাপের ম্যাচে সেই ছবি বহাল। কিন্তু যেটা স্টিভন কনস্ট্যানটাইনের দলের কাছে চিন্তার এবং আশঙ্কার, তা হল ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে অনেক নীচের টিম গুয়ামের কাছে হার। যে দলকে দু’ বছর আগে ২০১৩-র মার্চে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে ৪-০ হারিয়েছিল উইম কোভারম্যান্সের ভারত।
জাতীয় দলের জার্সিতে গোল করার হাফ সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন সুনীল ছেত্রী। দেশের হয়ে যে রেকর্ড কারও নেই। সুনীলের এই সাফল্যের জন্য ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক ভাইচুং ভুটিয়া, যাঁর দেশের জার্সিতে গোল সংখ্যা ৪২, শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তবে এতে একেবারেই উচ্ছ্বসিত নন এ দিনের অধিনায়ক। কারণ তিনি গোল পেলেও যে জয়ের মুখ দেখছে না তাঁর দল। মঙ্গলবার দুপুরে ম্যাচ হারার পর হতাশ সুনীল তাই বলে দিয়েছেন, ‘‘গোলের সংখ্যা নিয়ে আমি একেবারেই ভাবিত নই। ম্যাচটা কিন্তু আমরা জিততে পারিনি।’’ বুদ্ধিমান সুনীল এটুকুতে থামলেও আসল ঘটনা হল, ভারতের চেয়ে ৩৩ ধাপ পিছিয়ে থাকা দলের বিরুদ্ধে রবিন সিংহ, অর্ণব মণ্ডলরা সে অর্থে খেলতেই পারেননি।
সুনীলের সাফল্যের দিনে তাই স্টিভনের ট্যাকটিক্স নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। গুয়ামের কাছে হারের পর অবশ্য নানা অজুহাত দিয়েছেন ব্রিটিশ কোচ। বলেছেন, ‘‘এ দিন দু’টি টিমের মধ্যে পার্থক্য খুব বেশি করে বোঝা গেল। গুয়ামের ফুটবলাররা যে সেরা সুযোগ সুবিধে পায়, এটা দেখা গেল। এখানকার ৭৫ শতাংশ ফুটবলারই আবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে। আর এটাই আমাদের সঙ্গে বড় পার্থক্য করে দিয়েছে।’’ এর পাশাপাশি বিমান যাত্রার ক্লান্তির কথাও বলেছেন ভারতের কোচ।
স্টিভন যাই যুক্তি দিন না কেন, এটা ঘটনা গুয়ামের কাছে হারের ফলে ভারতের পরের রাউন্ডে যাওয়ার স্বপ্নে বড় ধাক্কা লাগল। দু’ম্যাচের মধ্যে একটিতেও জিততে পারলেন না সুব্রত-অর্ণবরা। এই মুহূর্তে রয়েছেন লিগ তালিকায় লাস্টবয় হয়ে। আর দু’ম্যাচের মধ্যে দু’টিতেই জিতে গুয়াম রয়েছে শীর্ষে।
এ দিন শুরু থেকেই গুয়াম কোণঠাসা করে রেখেছিল স্টিভনের টিমকে। বিরতির আগেই ব্র্যান্ডন মারকিউয়ের গোলে এগিয়ে যায় তারা। দ্বিতীয়ার্ধে ট্রাভিস নিকল ব্যবধান বাড়িয়ে চাপ তৈরি করে ভারতের উপর। ইনজুরি টাইমে হেডে সুনীলের দুরন্ত গোলে অবশ্য কিছুটা হলেও মুখ রক্ষা হয় মেন ইন ব্লু-র।
কনস্ট্যানটাইনের কোচিংয়ে শেষ পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে ভারত। তিনটিতেই হেরেছে তারা। ড্র করেছে একটি। ভারতের গ্রুপে ইরানের মতো কঠিন প্রতিপক্ষ রয়েছে। রয়েছে তুর্কমেনিস্তানও। স্বভাবতই পরের ম্যাচগুলোতেও বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়তে চলেছে ভারত। পরিস্থিতি যা তাতে স্টিভনের দলের প্রাক বিশ্বকাপ অভিযান কার্যত শেষই বলা যায়। ভারত এ দিন যা খেলেছে তাতে আর কোনও স্বপ্ন না দেখাই ভাল বলে মনে করছেন ফুটবল বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, কোভারম্যান্সের জায়গায় স্টিভনকে এনে ভারতীয় ফুটবলের কতটুকু লাভ হল?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy