সংশয়: ক্লাব এবং বিনিয়োগকারী সংস্থার তিক্ততায় ফাউলারদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ফাইল চিত্র।
চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়া নিয়ে সংঘাত আরও তীব্র হচ্ছে লাল-হলুদে। দুই-এক দিনের মধ্যে শ্রী সিমেন্টের তরফে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের চিঠি পাঠানোর ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছে। তাঁদের মতামত জানার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বিনিয়োগকারী
সংস্থার কর্তারা।
গত ১ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে প্রাথমিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও পরে নানা বিষয়ে আপত্তি জানাতে শুরু করেন ইস্টবেঙ্গলের কর্তারা। দাবি করেন, তাঁদের সুপারিশ করা বিষয়গুলি পরিবর্তন করতে হবে। তার পরেই চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন। ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের অভিযোগ, এই চুক্তিতে ক্লাবের ও সদস্যদের স্বার্থ বিঘ্নিত হচ্ছে। বিনিয়োগকারী সংস্থার তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর সামনে স্বাক্ষরিত হওয়া চুক্তিকেই মান্যতা দিতে
হবে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের।
এই পরিস্থিতিতে লাল-হলুদ সমর্থকেরা আশা করেছিলেন, বিনিয়োগকারী সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর হরিমোহন বাঙুর দুবাই থেকে কলকাতায় আসার পরে সমস্যার সমাধান হবে। তিনি শহরে আসার পরে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
বিনিয়োগকারী সংস্থার তরফে কী চিঠি দেওয়া হবে? এসসি ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম কর্তা শ্রেণিক শেঠ বললেন, ‘‘অক্টোবর মাসে আমরা চুক্তিপত্র পাঠিয়েছিলাম ইস্টবেঙ্গলকে। এখনও পর্যন্ত তা সই করে পাঠায়নি ওরা। কিছু জানানোও হয়নি। তাই শেষ বারের মতো চিঠি পাঠানোর কথা ভাবছি। জানতে চাওয়া হবে, ইস্টবেঙ্গল কর্তারা ঠিক কী চাইছেন।’’
কয়েক দিন আগেই ক্লাবের কার্যকরী সমিতির দীর্ঘ বৈঠকের পরে ইস্টবেঙ্গলের কর্তারা দাবি করেছিলেন, চুক্তির কয়েকটি বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে গত ২ ডিসেম্বর খসড়া পাঠানো হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল ও বিনিয়োগকারী সংস্থার গাঁটছড়া বাঁধার ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারী তরুণ ঝুনঝুনওয়ালাকে। কিন্তু তার কোনও জবাব নাকি পাওয়া যায়নি। এই প্রসঙ্গে এসসি ইস্টবেঙ্গলের কর্তা খোলাখুলি বললেন, ‘‘চুক্তি তো হয়েছে আমাদের সঙ্গে। তা হলে কেন অন্য কাউকে চুক্তির শর্ত নিয়ে আপত্তি জানিয়ে খসড়া পাঠানো হবে। আমাদের সঙ্গেই যোগাযোগ করতে হবে। এই কারণেই আমরা ফের চিঠি পাঠানোর কথা ভাবছি। দুই-তিন দিন সময় দেওয়া হবে উত্তর দেওয়ার জন্য। দেখি ওঁরা কী জবাব দেন, তার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
ইস্টবেঙ্গলের তরফে এ বারও যদি চিঠির উত্তর না দেওয়া হয়, তখন কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে? এই পরিস্থিতিতে বিচ্ছেদের আশঙ্কাও কেউ কেউ করছেন। বিনিয়োগকারী সংস্থার কর্তারা যদিও এখনও আশাবাদী সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে। পাশাপাশি আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন। তাঁদের ব্যাখ্যা, ‘‘আমাদের আইনজীবীরা পুরো বিষয়টি দেখছেন। কারণ, ইতিমধ্যেই আমরা প্রচুর অর্থ লগ্নি করে ফেলেছি।’’ কেউ কেউ তো বলেই দিলেন, ‘‘চূড়ান্ত চুক্তিতে সই করতে যত দেরি করবেন ইস্টবেঙ্গলের কর্তারা, তত আমরা পিছিয়ে পড়ব আগামী মরসুমের দল গড়ার ক্ষেত্রে। কারণ আমরা যে ফুটবলারদের নেওয়ার কথা ভেবেছি, তাঁরা খুব বেশি দিন অপেক্ষা করবেন না। ভাল মানের বিদেশি ফুটবলারও পাওয়া যাবে না। এই মরসুমে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে দল গড়া সত্ত্বেও সাফল্য পাওয়া যায়নি। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না আগামী মরসুমে।’’ যোগ করলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল কর্তারাই আমাদের কাছে এসেছিলেন। আমরা কিন্তু যাইনি। ওঁদের মনে রাখতে হবে, ক্লাবের ক্রীড়া সত্ব আমাদের কাছে রয়েছে।’’ তবে বিনিয়োগকারী সংস্থার প্রধান কর্তার সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা যে ক্ষীণ তা আরও এক বার স্পষ্ট করে দিলেন তাঁরা। বলে দিলেন, ‘‘ম্যানেজিং ডিরেক্টর একেবারেই আগ্রহী নন আলোচনা করতে। তাই ইস্টবেঙ্গল কর্তাদেরই এখন এই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।’’
ইস্টবেঙ্গল কর্তারা আদৌ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেবেন কি না, তা কয়েক দিনের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy