উমেশ। বর্তমানের হুঙ্কার।
বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ায় ওয়ান ডে বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক। ২০১৫ সালে ৬ টেস্ট থেকে মাত্র ১১ উইকেট নিলেও ওয়ান ডে-তে তিনি ভারতের বর্ষসেরা বোলার। চোদ্দো ম্যাচে ২৫ উইকেট। আর দিন সাতেক বাদেই উড়ে যাবেন অস্ট্রেলিয়ায়। তার আগে উমেশ যাদব বছর শেষে কথা বললেন টেস্ট ক্রিকেট থেকে শিক্ষা পাওয়া নিয়ে, তাঁর নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে।
প্রশ্ন: শেষ দুটো টেস্ট সিরিজে বোলার হিসেবে আপনি কতটা উন্নতি করেছেন বলে মনে হয়?
উমেশ: শ্রীলঙ্কা সফরটা আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। টিমে আমার জায়গা পাকা ছিল না। প্রথম এগারোয় থাকব কি না, নিশ্চিত ছিল না। যে ম্যাচগুলোয় খেলেছি, অতটা সুইং পাইনি। মনে হচ্ছিল নিজের ছন্দ হারিয়ে ফেলেছি। ওই সফরটার পরে মনে হল বলটা আমার মুভ করাতে পারছি। ধারাবাহিকতা, নিখুঁত নিশানা অনেকটা ফিরে পেলাম। সে দিক দিয়ে দেখলে শ্রীলঙ্কা সফরটা আমাকে খুব সাহায্য করেছে। আমাকে কী করতে হবে, সেগুলো বুঝিয়ে দিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে দুটো টেস্ট খেলেছি। দিল্লিতে শেষ টেস্টে আমি বেশি ভাল বল করেছিলাম। অনেক দিন পর মনে হল আমার বোলিং দেখে কেউ বলতে পারবে না যে, আমি সঠিক জায়গায় বল রাখতে পারিনি।
প্র: বলের গতির হেরফের করার কথা কিছু ভাবছেন?
উমেশ: না, একদমই ভাবছি না। বলের গতি একেবারেই কমাব না। যে গতিতে বল করি, তাতেই আরও মুভ করানোর চেষ্টা করছি। না হলে সুইংয়ে কোনও লাভ হবে না। আমি যখন বল ঠিক জায়গায় রাখতে পারছিলাম না, তখন সুইংও হচ্ছিল না। আমার মনের উপর যার প্রভাব পড়ছিল। প্রাথমিক জিনিসগুলো ঠিকঠাক হচ্ছিল না।
প্র: আপনার প্রত্যাবর্তনে কোচের ভূমিকা কতটা?
উমেশ: নতুন উমেশের উঠে আসার পিছনে অনেকের অবদান রয়েছে। প্রথমে আমার সমস্যাটা ধরতে পারেন ভরত অরুণ। কবজির নড়াচড়ায় যে একটা সমস্যা হচ্ছে, উনি বুঝেছিলেন। সেটা ঠিক করায় এখন সুইংটা অনেক ভাল হচ্ছে। লাইনও। বোলার হিসেবে এখন আমি অনেক নিয়ন্ত্রিত। সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ও খুব সাহায্য করেছেন। উনি আমার বোলিংয়ের উপর নজর রাখেন। বলেছিলেন, কোনও সমস্যা হলে যেন ওঁকে ফোন করি। তার পরে বিদর্ভ কোচ পরস মামরে বলেছিলেন ছন্দের উপর নজর দিতে। এঁদের সঙ্গে কথা বলে, পরামর্শ নিয়ে এখন আমি বোলার হিসেবে পাল্টে গিয়েছে। আর এঁরা সবাই একটা জিনিস বলেছেন— মাথাটা পরিষ্কার রাখতে।
প্র: মাঝে অনেকটা সময় আপনি আন্তর্জাতিক ম্যাচ পাননি। ওই সময়টা কি ছন্দে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে?
উমেশ: মনে হয় না। তখন রঞ্জিতে যতগুলো ম্যাচ পেরেছি, খেলেছিলাম। তখন মাথায় একটা জিনিসই ছিল— যত পারো ম্যাচ খেলো। সেটা করে ফলও পেয়েছি। বল হাতে শুধু নয়, রানও করেছি। আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।
প্র: দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জয় নিয়ে কী বলবেন?
উমেশ: ওটা হয়েছে কারণ টিমে একাধিক নয়, একটাই লক্ষ্য ছিল— ম্যাচ জেতা। পিচ বা ড্র বা হার নিয়ে আমরা কেউ ভাবিনি। জেতার জন্যই শুধু খেলেছি। এটা টিমের বড় শক্তি।
প্র: এ বার সীমিত ওভারের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে। বিশেষ করে সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
উমেশ: চেষ্টা এখন থেকেই শুরু করে দিয়েছি। আমার মনে হয় দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজে বোলারদের প্ল্যানিং ভাল হয়নি। পিচ যথেষ্ট স্লো ছিল না। ইয়র্কার বা রিভার্স কোনওটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারিনি। প্রচুর রান দিয়ে ফেলেছিলাম আমরা সবাই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এ সব মাথায় থাকবে।
প্র: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়ায় ওয়ান ডে সিরিজ আছে। সেটা নিয়ে কী ভেবেছেন?
উমেশ: বোলিং-ফিল্ডিংয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। সবার জানা উচিত, তাকে কোথায় বল করতে হবে। বাউন্সের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ওখানে সাইড বাউন্ডারি বেশি বড়, মনে রাখতে হবে। বাউন্সার বা স্লোয়ার ঠিকমতো ব্যবহার করতে হবে। যাতে ওদের উপর চাপটা রাখা যায়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ছন্দটা যাতে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ থেকেই চলে আসে, সেটা দেখতে হবে। সিরিজটা জিতব, এই লক্ষ্য নিয়ে নামতে হবে। এই টিমটা নিয়ে প্রচুর প্রত্যাশা আছে। তবে জয় চাই। সিরিজ জয়। সেটা হলে বিশ্বকাপের আগে মোটিভেশন দারুণ জায়গায় থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy