Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

সোনার লক্ষ্যে আজ শেষ কাঁটা সেই ওকুহারা

সিন্ধু ফাইনালে উঠলেন টানা তিন বার। আগের দু’বারই তাঁকে রুপোয় সন্তষ্ট থাকতে হয়েছে। কিন্তু এ বার যে ফর্মে ভারতীয় তারকা খেলছেন, তাতে মনে হচ্ছে বাসেলের মঞ্চে সোনা ছাড়া অন্য কিছুর কথা মাথায় নেই।

দৃপ্ত: শনিবার বাসেলে সেমিফাইনালে দুরন্ত জয়ের পরে সিন্ধু। এএফপি

দৃপ্ত: শনিবার বাসেলে সেমিফাইনালে দুরন্ত জয়ের পরে সিন্ধু। এএফপি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৯ ০৪:০৬
Share: Save:

পি ভি সিন্ধু কার্যত বিধ্বংসী মেজাজে ব্যাডমিন্টন বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠলেন। সোনার লক্ষ্যে তাঁর শেষ বাধা ‘চিরশত্রু’ নজ়োমি ওকুহারা। সিন্ধু ফাইনালে উঠলেন টানা তিন বার। আগের দু’বারই তাঁকে রুপোয় সন্তষ্ট থাকতে হয়েছে। কিন্তু এ বার যে ফর্মে ভারতীয় তারকা খেলছেন, তাতে মনে হচ্ছে বাসেলের মঞ্চে সোনা ছাড়া অন্য কিছুর কথা মাথায় নেই। পাশাপাশি এই টুর্নামেন্টে দুরন্ত ছন্দে থাকা আর এক ভারতীয় বি সাই প্রণীত শেষরক্ষা করতে পারলেন না। শনিবার সেমিফাইনালে তিনি বিশ্বের এক নম্বর কেন্তো মোমোতোর কাছে কার্যত বিনা প্রতিরোধে আত্মসমর্পণ করে পেলেন ব্রোঞ্জ। ফল ১৩-২১, ৮-২১।

শনিবার সেমিফাইনালে চিনের চেন উফেইকে হারাতে সিন্ধুর লাগল মাত্র ৪০ মিনিট। ফল ২১-৭, ২১-১৪। স্কোর লাইন বলে দিচ্ছে ম্যাচে কতটা দাপট ছিল তাঁর। প্রথম গেমটা তো ছেলেখেলা করে ১৫ মিনিটে জিতে যান। তাঁর এক-একটা স্ম্যাশের গতি ছিল ঘণ্টায় ৩৫০ কিলোমিটারও। যা এক কথায় অবিশ্বাস্য! চেন উফেইকে কোর্টের চারপাশে দৌড় করিয়ে করিয়ে একটা সময় বেদম করে দেন। প্রথম ব্রেকের সময় সিন্ধু এগিয়ে ছিলেন ১১-৩। ব্রেকের পরে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। অথচ উফেই বিশ্বের তিন নম্বর। অবশ্য মুখোমুখি সাক্ষাতে শনিবারের আগে তাঁর বিরুদ্ধে সিন্ধু ৫-৩ এগিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, এ বছরেই ইন্দোনেশিয়া ওপেনেও উফেইয়ের বিরুদ্ধে জেতেন স্ট্রেট গেমে।

এ দিন দ্বিতীয় গেমে লড়াইয়ে থাকতে উফেই প্রাণপাত করলেও বিশেষ কিছু করে উঠতে পারেননি। ৬-৫ থেকে ৯-৫ করেন সিন্ধু। সেখান থেকে ১৪-৬। ঘনঘন ট্যাকটিক্স বদলেছেন চিনা তারকা। চেষ্টা করেন নেটে টেনে আনতে সিন্ধুকে। কিন্তু এই সময়েও পুল্লেলা গোপীচন্দের ছাত্রী অবিশ্বাস্য রক্ষণ করে পরিস্থিতি সামলান। সিন্ধুর খেলায় এতটা উন্নতির জন্য ব্যাডমিন্টন মহল কৃতিত্ব দিচ্ছে তাঁর নতুন কোরীয় কোচ কিম জি হিউনকে। যিনি কোয়ার্টার ফাইনালে তাই জু ইংয়ের বিরুদ্ধে সিন্ধু অসাধারণ খেলে জেতার পরেও বলেছিলেন, ‘‘সিন্ধুকে সোনা জিততে হলে আরও সপ্রতিভ হতে হবে।’’ হতে পারে নতুন কোচের উদ্বেগের কথা কানে গিয়েছিল সিন্ধুর। যেন সেই জন্যই শনিবার টেনিস কিংবদন্তি রজার ফেডেরারের জন্মভূমিতে তাঁকে বিধ্বংসী মেজাজে দেখা গেল।

ফাইনালে সিন্ধুর লড়াই ওকুহারার সঙ্গে। ২০১৭-র ফাইনালে যাঁর কাছে অল্পের জন্য হারেন। মুখোমুখি সাক্ষাতে অবশ্য সিন্ধুই ৮-৭ এগিয়ে। ২০১৮-র ফাইনালে হায়দরাবাদি তারকাকে হারান ক্যারোলিনা মারিন। ২০১৩ সাল থেকে এই টুর্নামেন্টে পদক জিতছেন সিন্ধু। তখন তাঁর বয়স মাত্র আঠারো। সে বার পান ব্রোঞ্জ। ব্রোঞ্জ পান পরের বারেও। শেষ দু’বার সিন্ধুকে সন্তুষ্ট থাকতে হয়ে রুপোয়। এই বছর ভারতীয় তারকা কোনও টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হননি। তবে অল ইংল্যান্ড ওপেনের পরে তাঁর খেলায় অকল্পনীয় উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যার মূল কৃতিত্ব নতুন কোচ কিমের। এই মহিলা নিজেও নামী তারকা ছিলেন। এশিয়ান গেমসে সোনা আছে। সিন্ধু সম্প্রতি মন্তব্য করেন, ‘‘কিম আসার পরে নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করছি।’’ বলা হচ্ছে নেট ও বেসলাইনে সিন্ধুর খেলায় এত সৌন্দর্য আগে দেখা যায়নি। যদিও কিমের মন্তব্য, ‘‘নেটে ওকে আরও দক্ষ হতে হবে।’’

বিশ্ব ব্যাডমিন্টন: ভারতীয় সময় দুপুর সাড়ে তিনটেয় ছেলেদের ডাবলস। ফাইনালে পি ভি সিন্ধুর ম্যাচ আনুমানিক সাড়ে চারটেয়। স্টার স্পোর্টস ওয়ান চ্যানেলে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE