সফল: দু’দশকের নজির ভেঙে দিলেন নাদিম। ফাইল চিত্র
দু’দিন আগেই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনেছিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনির কথা। দুবাইয়ে, ভারতীয় দলের নেটে। নিজের রাজ্যের বাঁ হাতি স্পিনার শাহবাজ নাদিমকে প্রায়ই এ রকম পরামর্শ দিয়ে থাকেন ধোনি। সে দিনেরটা বোধহয় ছিল বিশেষ রকমের। না হলে দুবাই থেকে ফিরেই এমন বিধ্বংসী মেজাজে পাওয়া যাবে কী করে ২৯ বছর বয়সি নাদিমকে? মাত্র দশ রান দিয়ে আট উইকেট নিয়ে রাজস্থানের ব্যাটিং অর্ডারে ধস নামিয়ে দেন নাদিম। সঙ্গে একটা হ্যাটট্রিকও। যে নজির লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সারা বিশ্বে আর কারও নেই।
ভারতীয় দলের নেটে বোলিং করার জন্য নাদিমের ডাক এসেছিল দুবাইয়ে রোহিত শর্মাদের শিবির থেকে। সেখানেই এক দিন সেশন হয় ধোনির সঙ্গে। কী বলেছিলেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক? ‘‘মাহিভাইয়ের কাছ থেকে আগেও বহুবার অনেক মূল্যবান পরামর্শ পেয়েছি। সে দিন বলেন, ব্যাটসম্যানকে দেখে বল করিস। প্রথম দিকে বিভিন্ন রকমের বল দিয়ে বুঝে নিতে হবে, তার দুর্বলতা ও শক্তি। তুই যত ভাল সেটা করতে পারবি, তত সফল হতে পারবি’’, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চেন্নাই থেকে আনন্দবাজারকে ফোনে বলছিলেন নাদিম।
চেন্নাইয়ের মুরুগাপ্পা ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এ দিন কি ধোনির সেই পরামর্শই কাজে লাগে? নাদিম বলেন, ‘‘আমাদের পেসাররা ন’ওভার পর্যন্ত উইকেট না পাওয়ায় আমাকে বল করতে ডাকা হয়। শুরু থেকেই বৈচিত্র এনে বোলিং করি। ফ্লাইট দিচ্ছিলাম। আর তাতেই কাজ হয়। অস্বীকার করব না, উইকেট থেকেও কিছুটা
সাহায্য পেয়েছি।’’
দেশের প্রথম সারির ওয়ান ডে বা লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এর আগে সেরা বোলিং ছিল আর এক ভারতীয় রাহুল সাংভির। দিল্লির বাঁ হাতি স্পিনারের ২০ বছর আগের সেই নজির ভেঙে দেওয়ার পরও অবশ্য নাদিমের খেয়াল ছিল না, বড় একটা কীর্তি গড়ে ফেলেছেন। বললেন, ‘‘ম্যাচের পরে স্কোরার আমাকে এটা জানায়।’’ খবরটা জানার পরে হইচই শুরু হলেও নায়কের নিজের এই ব্যাপারে কোনও হেলদোল নেই। বললেন, ‘‘ভাল কিছু একটা করলে তো ভালই লাগে। আর সেটা যদি বিশেষ কিছু হয়, তা হলে আরও ভাল লাগে। তবে নিজের সাফল্যের চেয়েও আমি বেশি ভাবি দলের জয় নিয়ে।’’ এক ওভারে শেষ দুই বলে ও পরের ওভারের প্রথম বলে তিন উইকেট নিয়ে যে হ্যাটট্রিকও করে ফেলেন তিনি, তাও খেয়াল ছিল না বলে জানান তিনি।
নিউজিল্যান্ডের বাঁ হাতি স্পিনার ও প্রাক্তন অধিনায়ক ড্যানিয়েল ভেত্তোরির ভক্তের স্বপ্ন সফল হয়েছিল আইপিএলে। যখন তিনি ভেত্তোরির দেখা পান। বলেন, ‘‘ওঁর কাছে আমি অনেক কিছু শিখেছি। বলের ফ্লাইট, বৈচিত্র নিয়ে অনেক কিছু, যেগুলো পরবর্তীকালে অনেক কাজে লেগেছে।’’ ২০১৫-১৬-র রঞ্জি মরসুমে ৫১টি উইকেট নিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন যিনি, সেই নাদিম পরের মরসুমেও ৫৬ উইকেট নেন। ২০১৫ থেকেই টানা খেলছেন দিল্লি ডেয়ারডেভিলসে।
রাজস্থানকে ৩২-০ থেকে ৬৬-৮ করে দেওয়ার পরে তাঁর এই কীর্তি নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে হইচই শুরু হলেও কোনও জাতীয় নির্বাচকের ফোন পাননি নাদিম। তাতে অবশ্য কোনও অভিযোগ নেই তাঁর। জিজ্ঞেস করলে বলেন, ‘‘ভারত ‘এ’-র হয়ে তো নিয়মিত খেলছি। এ রকম ভাল পারফরম্যান্স করতে থাকলে নিশ্চয়ই সিনিয়র দলেও সুযোগ পাব। তবে মাঠে নামলে আর ও সব মাথায় থাকে না। তখন ব্যাটসম্যানই আমার
বড় শত্রু।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy