যুযুধান: বড় ম্যাচের আগে নিজের পছন্দের বুট খুঁজে পেলেন সনি নর্দে। দ্বৈরথে পাল্লা দিতে মরিয়া আল আমনাও (ডান দিকে)। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
ডান প্রান্ত থেকে বল ধরে কোনাকুনি বক্সের দিকে এগিয়ে আসেন ইস্টবেঙ্গলের জাপানি উইঙ্গার কাতসুমি ইউসা।
লাল-হলুদ মাঝমাঠে খেলা তৈরি করেন খালিদ জামিলের সিরিয়ান মিডফিল্ডার মহম্মদ আল আমনা। তিনিই বিপক্ষ অর্ধে পাঠান একের পর এক ঠিকানা লেখা বিষাক্ত সব পাস।
বিপক্ষ রক্ষণের সামনে সেই বল ধরে দৌড়নোর ফাঁকা জায়গা পেলেই গোল করে যান খালিদ জামিলের ক্যারিবিয়ান অস্ত্র উইলিস প্লাজা।
রবিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে তাই ডার্বি জিততে মোহনবাগানের অঙ্ক চারটি। সেই চার অঙ্ক নিখুঁত ভাবে কষেই বড় ম্যাচের তরী পার করতে চাইছে সঞ্জয় সেনের মোহনবাগান।
কী সেই চার অঙ্ক?
৬৮০ দিন পর যুবভারতীতে ইস্টবেঙ্গলকে হারাতে সনি নর্দে-দের প্রথম লক্ষ্য, লাল-হলুদের আমনাকে তাঁর ছন্দে খেলতে দেওয়া চলবে না। দুই, কাতসুমিকে ঠেলে দিতে হবে একদম উইংয়ে। তাঁর জন্য জোরদার হবে জোনাল মার্কিং। তিন, ক্যারিবিয়ান উইলিস প্লাজা যেন কখনও-ই কিংগসলে, কিংশুকদের সামনে দৌড়নোর জায়গা না পান। তাঁকে পালা করে ধরবেন মোহনবাগানের এই দুই স্টপারের একজন। চার, আক্রমণ ভাগে সনি-ক্রোমা-ডিকা ত্রিভুজ-কে চালাবেন সবুজ-মেরুনের ‘গেমমেকার’ ক্রোমা। এর সঙ্গে সনির কাট করে ভিতরে ঢুকে আসা। আর বক্সের সামনে থেকে দিপান্দা ডিকার বাঁক খাওয়ানো সব ফ্রি-কিক।
বড় ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে, শনিবার দুপুরে মোহনবাগান মাঠে এই চার অনুশীলনই হল জোরকদমে। যেখানে আমনাকে নির্বিষ করতে রাখা হল দুই ‘হোল্ডিং মিডফিল্ডার’ ইউতা কিনোয়াকি এবং রেনিয়ার ফার্নান্দেজ-কে। বিপক্ষের ‘ডামি’ কাতসুমির জন্য সদা তৎপর থাকলেন মোহনবাগানের দুই সাইডব্যাক অরিজিৎ বাগুই ও রিকি। ‘ডামি’ উইলিস প্লাজাকেও ফাঁকা জায়গা দিচ্ছিলেন না মোহনবাগানের দুই স্টপার কিংশুক দেবনাথ এবং নাইজিরিয়ান কিংগসলে অবুমনেমে। আর সনি-ক্রোমা-ডিকা বল পেলেই শুরু করছিলেন প্রতি আক্রমণ। শেষ বেলায় ফ্রি-কিকের পাঠটাও ঝালিয়ে নিলেন সনি, ডিকারা।
ডার্বি ম্যাচে এ পর্যন্ত হারেননি মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন। কিন্তু প্রথম ম্যাচে মিনার্ভা পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ড্র করে কিছুটা চাপে রয়েছেন মোহনবাগান কোচ। সাংবাদিক সম্মেলনে সে কথা মনে করালে সঞ্জয় সেন বলে দেন, ‘‘অতীত নিয়ে ভেবে লাভ নেই। লিগে এক পয়েন্টও গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ম্যাচ ড্র হয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচেও যদি না জিততে পারি তার ফল ভুগতে হবে।’’ সবুজ-মেরুন শিবিরের কোচ তার পরেই বলে দেন, ‘‘জিততে নেমে ড্র করলেও চলবে। কিন্তু হেরে ফেরা চলবে না কোনও মতেই।’’
মিনার্ভা ম্যাচে সনি নর্দে-দের যে দল খেলেছিল, বড় ম্যাচে সেই দলে পরিবর্তন হচ্ছে। রাইট ব্যাকে ফিরছেন অরিজিৎ বাগুই। মাঝমাঠে চোট সারিয়ে ফিরছেন ইউতা কিনোয়াকিও। কিন্তু তাঁর সঙ্গে রেনিয়ার না শিল্টন ডি’সিলভা—কে খেলবেন তা এ দিন অনুশীলনের পরেও ঠিক হয়নি। রাইট উইংয়ে-ও সাম্প্রতিক কয়েকটি বড় ম্যাচে মোহনবাগানের গোলদাতা আজহারউদ্দিন মল্লিক চোটের কারণে অনিশ্চিত। তিনি যদি নামতে না পারেন তা হলে বিকল্প নরহরি শ্রেষ্ঠা।
গত দুই মরসুম সবুজ-মেরুনের সবচেয়ে কার্যকরী অস্ত্র ছিল ইউসা কাতসুমি-সনি নর্দে জুটি। সেই কাতসুমি এ বার ইস্টবেঙ্গলে। তাঁকে নিয়ে প্রশ্ন উঠলেই সনি অতীতকে সরিয়ে রেখে বলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ মানে তো আর লাজং-এর বিরুদ্ধে খেলা নয়। জিততে ওরাও মরিয়া হবে। কাজেই লড়াইটা সনি বনাম কাতসুমি নয়।’’ সঙ্গে এটাও যোগ করেন, ‘‘ওরা বরং আমাদের দিপান্দা ডিকাকে নিয়ে ভাবুক। তবে ইস্টবেঙ্গল রক্ষণ অন্য টিমের বিরুদ্ধে খারাপ খেললেও আমাদের বিরুদ্ধে নিজেদের সেরাটাই তুলে ধরবে। কাজেই আমাদের গোলের রাস্তা খুঁজতে হবে তৎপরতার সঙ্গে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy